Advertisement
  • এই মুহূর্তে দে । শ
  • অক্টোবর ১৮, ২০২৫

সিএএ-কে হাতিয়ার করে ফের কোমর বাঁধছে পদ্মশিবির, রাজ্যজুড়ে ৭০০ সহায়তা ক্যাম্পের ভাবনা

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
সিএএ-কে হাতিয়ার করে ফের কোমর বাঁধছে পদ্মশিবির, রাজ্যজুড়ে ৭০০ সহায়তা ক্যাম্পের ভাবনা

বিধানসভা ভোটের আগে নাগরিকত্ব আইন’-কে সামনে এনে ফের রাজ্য রাজনীতিতে সাড়া ফেলতে বঙ্গ বিজেপি। দীপাবলির পরে রাজ্য জুড়ে ৭০০-র বেশি সহায়তা শিবির খোলার পরিকল্পনায় নামছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির প্রাক্তন রাজ্যসভাপতি, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, ‘রাজ্যে সিএএ আমরা করবই। এটা আমাদের আবেগের বিষয়। কেন্দ্রের কাছে যেমন রাম মন্দির আবেগআমাদের কাছে সিএএ। শুধু তাই নয়শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকেও তিনি এই উদ্যোগে সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।  

বিজেপির তরফে এমন ঘোষণা আসতেই, পাল্টা প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলেবিধানসভা ভোটের মুখে হঠাৎ করে বিজেপির এই সিএএ-তৎপরতার নেপথ্যে কীসূত্রের খবরএনআরসি-র ছায়ায় এসআইআর নিয়ে বাড়তে থাকা বিতর্ক এবং ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়ার আশঙ্কাই গেরুয়া শিবিরকে এই পথ নিতে বাধ্য করেছে। তাদের ধারণাএকবার নাগরিকত্ব নিশ্চিত করা গেলেভোটার তালিকায় নাম থাকা নিয়ে আর কোনও জটিলতা থাকবে না। সেই লক্ষ্যে রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে প্রশিক্ষণ শিবির। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়িকোচবিহারআলিপুরদুয়ারে পরপর এমন শিবির হয়েছে সম্প্রতি। আয়োজক হিসাবে সামনে এসেছে সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘ। নেপথ্যে আরএসএস। বিজেপি নেতারা বলছেন, একাধিক সফল প্রশিক্ষণ শিবির হচ্ছে। মানুষ যাতে সহজে সিএএ-র অধীনে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারেনতার জন্য আমরা প্রয়োজনীয় নথি জোগাড়ে সাহায্য করব। শিবির করেই এই প্রক্রিয়া চালাব।

বিজেপির ক্যম্পগুলিতে সিএএ-তে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে গেলে কী কী নথিপত্র প্রয়োজনতা নিয়েও বিশদে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে যাঁরা বাংলাদেশ বা অন্য কোনো পড়শি দেশে থেকেছেন এবং সেখানে সংখ্যালঘু হিসাবে নির্যাতিত হয়েছেনতাঁদের সেই দেশের পুরনো বাসস্থান সংক্রান্ত নথিধর্মীয় পরিচয়ের প্রমাণপত্রএসব সংগ্রহের পদ্ধতিও শেখানো হচ্ছে। বিজেপি সূত্রের দাবিএই পুরো প্রক্রিয়ার পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে সংঘের। যদিও প্রকাশ্যে বিজেপি বা আরএসএস কোনও ব্যানার বা প্রতীক ব্যবহার করছে না। এ প্রেক্ষিতেই, প্রশ্ন উঠছেআদৌ কি বিজেপির নয়া উদ্যোগ অরাজনৈতিক? না কি ভোট কৌশলের অঙ্গ!

উল্লেখ্য, লোকসভা ভোটের আগেই কেন্দ্রীয় সরকার সিএএ কার্যকর করলেওপশ্চিমবঙ্গ এখনো তার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নানা ধাপে পিছিয়ে রয়েছে। তবে বিধানসভা ভোট যত এগোচ্ছেসিএএ-কে সামনে এনে নিজেদের অবস্থান আরও জোরালো করতে চাইছে গেরুয়া শিবির। এরই মধ্যে এসআইআর নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে রাজ্য জুড়ে। অসম থেকে রাজ্যের বেশ কয়েকজন নাগরিককে ‘এনআরসি’ নোটিস পাঠানো নিয়েও বিজেপি-তৃণমূল সংঘাত তীব্র হচ্ছে। ‘এসআইআর’-এর ফলে প্রান্তিক মানুষের ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়ার আশঙ্কা প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে রাজ্যের শাসক দল। নভেম্বরের শুরুতেই ‘এসআইআর’-এর কাজ শুরু করতে চলেছে কমিশন, বিরোধিতায় একই সময়ে পথে নামছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল সুপ্রিমো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেস অভিযোগ তুলেছেএসআইআর কিংবা সিএএ সহায়তা ক্যাম্প আসলে বিজেপির চালভোটার তালিকা থেকে অপছন্দের’ নাম বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র। পাল্টা সুকান্ত মজুমদার বা অন্যান্য বিজেপি নেতারা বলছেনসিএএ-র মাধ্যমে নাগরিকত্ব নিশ্চিত করে জনগণের সমস্ত আশঙ্কা দূর করা সম্ভব। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতেযেখানে এনআরসি ও এসআইআরের আশঙ্কা রাজ্যে উদ্বেগ তৈরি করছেসেখানে নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করে ভোটব্যাঙ্কে পুনঃস্থাপন ঘটাতে চাইছে বিজেপি। সেই উদ্দেশ্যেই এই প্রশিক্ষণ শিবিরক্যাম্প এবং এই মাঠে নামা। তবে শেষ কথা বলবে ভোট। সিএএ-র আবেগ কতটা কার্যকর হবেতা বোঝা যাবে নির্বাচনী ফলাফলে। কিন্তু তার আগে, ভোটের মরশুমে এসআইআর ও সিএএ যে শাসক-বিরোধী দু-দলের জন্যই তুরপের তাস হয়ে উঠতে চলেছে, তা নিয়ে সংশয় নেই কোনো পক্ষেই।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!