- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- জানুয়ারি ৩, ২০২৪
পর্ষদকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, ১০ দিনের মধ্যে টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীদের প্যানেল জমা দিন
বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে নির্দেশ দিলেন, আগামী ১০ দিনের মধ্যে প্রাথমিকের ৪২ হাজার ৯৪৯ প্রার্থীর প্যানেল প্রকাশ করতে হবে। ২০১৪ সালে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা (টেট) সংক্রান্ত মামলায় এই নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। আগামী ১৫ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
২০১৪ সালে, টেট উত্তীর্ণের সংখ্যা ছিল এক লক্ষ ২৫ হাজার।তার প্রায় দুবছর পর ২০১৬ সালে, তাঁদের মধ্যে ৪২ হাজার ৯৪৯ জনকে নিয়োগ করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। পরে, ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ২০২২ সালে হাই কোর্টে মামলা করেন প্রিয়ঙ্কা নস্কর-সহ ১৪০ জন চাকরিপ্রার্থী। অভিযোগ ওঠে, যাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন, তাদের ৩২,০০০ প্রার্থী ‘অপ্রশিক্ষিত’। তাঁদের নিয়োগের ক্ষেত্রে একাধিক অনিয়মও হয়েছে। ইন্টারভিউ এবং ‘অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট’ না নিয়েই তাদের নিয়োগ হয়েছে বলে অভিযোগ।
ওই মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় কয়েক জন পরীক্ষার্থী এবং পরীক্ষক-এর বয়ান রেকর্ড করেন। তার পরেই মামলাকারীদের অভিযোগের সত্যতা রয়েছে বলে মেনে নিয়ে গত ১২ মে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ার একাধিক অসঙ্গতির উল্লেখ করেন। এক ধাক্কায় ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়ে যায়। বিচারপতি জানান, পরের চার মাস ওই ৩২ হাজার শিক্ষক পার্শ্বশিক্ষকের সমান বেতন পাবেন। তিন মাসের মধ্যে পর্ষদকে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। তাতে অংশ নিতে পারবেন ওই ৩২ হাজার চাকরিচ্যুত। যোগ্যতার ভিত্তিতেই এদের নতুন করে চাকরি দিতে হবে।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চের ওই রায়ে ৩২,০০০ চাকরিচ্যুত শিক্ষক শুধু নন, ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণদের জন্যও নিয়োগে অংশ নেওয়ার দরজা খুলে যায়। ওই নির্দেশ অনুসারে প্রায় এক লক্ষের বেশি প্রার্থীকে নিয়ে পর্ষদ আবার নিয়োগ প্রক্রিয়া চালানোর ব্যবস্থা করতে বাধ্য হয়। এই অবস্থায় একক বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যায় পর্ষদ এবং চাকরিচ্যুতদের একাংশ। গত ১৯ মে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ একক বেঞ্চের চাকরি বাতিলের নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয়। ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, আপাতত ওই ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল হচ্ছে না। তবে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তাঁদের অংশ নিতে হবে। সেখানে সফল হলেই চাকরি থাকবে, নইলে নয়। অর্থাৎ, ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের ফলে চাকরি বহাল থাকে ৩২ হাজার শিক্ষকের।
এরই মধ্যে টেট উত্তীর্ণদের প্যানেল প্রকাশের দাবি জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে পৃথক মামলা করেন মৌটুসি রায়-সহ কয়েক জন চাকরীপ্রার্থী। মামলাকারীদের দাবি ছিল, তাঁরাও চাকরি পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু মেধাতালিকা স্পষ্ট না হওয়ায়, নিয়োগ পাননি। এই পরিস্থিতিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় পর্ষদকে নির্দেশ দিয়েছেন, ৪২ হাজার ৯৪৯ চাকরি প্রাপকের ওই প্যানেল আগামী ১০ দিনের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে। পর্ষদের তরফে জানানো হয়, প্যানেল আগেই আদালতের নির্দেশে প্রকাশ করেছে। পর্ষদের ওই বক্তব্যের পরে ‘প্রকাশিত’ প্যানেলের ‘হার্ড এবং সফ্ট কপি’ আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
❤ Support Us