- এই মুহূর্তে দে । শ
- মার্চ ২৭, ২০২৫
আর বিলম্ব নয় ! রাজ্যের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্রুত ছাত্র-সংসদ নির্বাচন করানোর নির্দেশ আদালতের

২০১৩ সাল থেকে রাজ্যের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্ধ ছাত্র সংসদ নির্বাচন। যাদবপুর, প্রেসিডেন্সিসহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া অন্য কোথাও নেই নির্বাচিত ছাত্র সংসদ। বাম ছাত্র সংগঠন থেকে শুরু করে সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা প্রায়ই অভিযোগ করেন, নির্বাচন না করিয়ে কার্যত কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষমতা দখল করে রেখেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বহিরাগত তৃণমূল নেতাদের আসবার বিষয়েও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। সাম্প্রতিককালে বেশ কয়েকটি জায়গায় ছাত্রদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় ও ভর্তি দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ উঠেছে জোড়াফুল শিবিরের শাখা সংগঠনের দিকে।
এবার ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে দায়ের হওয়া একটি জনস্বার্থ মামলায় এবার ছাত্রভোট নিয়ে বড়ো আদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ও চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের বেঞ্চ রাজ্যের আর্জি খারিজ করে, ২ সপ্তাহের মধ্যে ছাত্রভোট করানোর ব্লু-প্রিন্ট পেশ করবার নির্দেশ দিয়েছেন। অবিলম্বে কলেজগুলিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
জানা যাচ্ছে, এ দিন রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ছাত্রভোট করানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া জন্য ৩ মাস সময় চাওয়া হয়। এছাড়াও, রাজ্যপক্ষের আইনজীবি জানান, কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য না থাকবার কারণে, ছাত্রভোট করাতে সমস্যা হচ্ছে। জনস্বার্থ মামলাকারীদের আইনজীবি উমাশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় পাল্টা জানান, ‘এটা তো সাম্প্রতিককালের ব্যাপার নয়। ২০১৩ সালের পর থেকে নির্বাচন হচ্ছে না। অথচ আইন অনুযায়ী নিয়মিত ছাত্র ইউনিয়নের নির্বাচন করানো উচিৎ।’ দুই পক্ষের সওয়াল শুনে, রাজ্যের সময় চাওয়ার আর্জি খারিজ করে দেন বিচারপতিরা। তাঁরা জানান, ‘ইতিমধ্যেই অনেক দেরি হয়েছে। ৩ মাস নয়, আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য সরকারকে হলফনামা দিয়ে সুনিশ্চিত করতে হবে যে, কবে, কখন, কীভাবে তাঁরা ছাত্র সংসদ নির্বাচন করাবেন।’
উল্লেখ্য, ২০২৩ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ামৃত্যুর ঘটনার পর একাধিক মামলা হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। তখন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে এই সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি ছিল। আগেই এই মামলায় যাদবপুর বিশ্বিবদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনগুলিকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। একই সঙ্গে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং-বিরোধী কমিটি না থাকলে দ্রুত তা গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হইয়েছিল, সেখানে নির্বাচিত কোনো ছাত্র সংসদ নেই। অ্যাডহক কমিটি দিয়ে কাজ চলছে। মামলাকারীদের অনেকের অভিযোগ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ক্যাম্পাসে কোনো রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ না থাকায় র্যাগিং বিরোধী নিয়ম প্রয়োগ হয় না। ছাত্ররা অভিযোগ জানাতেও পারে না। সে বছরই তৃণমূল ছাত্রপরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানমঞ্চ থেকে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন করানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। কিন্তু তারপর আর এ নিয়ে উচ্চাবাচ্য হয় নি। সম্প্রতি যাদবপুরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও ছাত্রদের বিবাদে, পড়ুয়াদের মূল দাবি ছিল – অবিলম্বে স্টুডেন্ট ইউনিয়ন ইলেকশন করাতে হবে। বিরোধী ছাত্রশিবিরের দাবি, ‘নির্বাচন হলে রাজ্যের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভরাডুবি হবে টিএমসিপি-র, সিণ্ডিকেট রাজ ভেঙে যাবে, তাই রাজ্য সরকারের স্বচ্ছ ছাত্রভোটে এত অনীহা।’
❤ Support Us