Advertisement
  • দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • মার্চ ১১, ২০২৪

ভোটের আগেই শরনার্থী ইস্যুতে সুড়সুড়ি। দেশ জুড়ে লাগু সিএএ

মমতা: বৈষম্যকে বিলকুল প্র‌শ্রয় ন‌য়। বিজ্ঞপ্তি খতিয়ে দেখে, যা বলার কাল বলব । সেলিম: সিএএ চালু করে ভোট বৈতরনী পার হতে চাইছে

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
ভোটের আগেই শরনার্থী ইস্যুতে সুড়সুড়ি। দেশ জুড়ে লাগু সিএএ

নাগরিকত্ব নিয়ে, সংশোধনী আইন জারি করে দিল কেন্দ্র, ভারতের সর্বত্র। বিশেষ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে। সংখ্যার জোরে এবিষয়ে সংসদে বিল পাস হয় চার বছর আগে। তখনই দেশজুড়ে হইচই পড়ে যায়। দিল্লিতে গড়ে ওঠে বিল বিরোধী বেসামাল পরিস্থিতিতে। রাস্তায় নেমে পড়েন বহু সমাজের নেতা কর্মীরা। পশ্চিমবঙ্গে, অসমে, উত্তর পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্যে কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বিভক্ত হয়ে পড়ে অসমের জাতীয়তাবাদী শক্তি, ওখানকার বাঙালিরাও সংশায়চ্ছন্ন। উত্তরপূর্বের অন্যান্য রাজ্যেও এরকম পরিস্থিতি। কিন্তু বহুদলীয় শাসকগোষ্ঠী প্রতিবাদ করেনি। বিজেপি শাসিত অসম আর ত্রিপুরাকে বাদ দিলে অন্য পাঁচ রাজ্য মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকল। উত্তর পূর্বাঞ্চলের গেরুয়াহীন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে আশঙ্কা দেখা দেয়,
সিএএ-র সাহ্যয্যে বাংলাভাষী শরণার্থীদের স্থায়ী বসবাসে সিলমোহর লাগাতে চাইছে কেন্দ্রীয় শাসক। পশ্চিমবঙ্গের প্রতিক্রিয়া তখন তুঙ্গে। রাস্তায় নামল ঐক্যবদ্ধ শক্তি। হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। পরিষ্কার তাঁর অবস্থান, কোনো অবস্থায় সিএএ চালু করতে দেওয়া হবে না। কেন্দ্রও নাছোড়বান্দা। সংসদে পাস হয়ে যাওয়া বিল আইনে রূপান্তরিত করে দেয়, কিন্তু গত পাঁচ বছরে তার ধারা-উপধার যুক্ত হয়নি। সাধারণ নিয়ম, যে কোনো বিলে রাষ্ট্রপতি সই করে দিলেই আইনের ধারা উপধারা যুক্ত করে দিতে হবে। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে লোকসভা অথবা রাজ্যসভার সংশ্লিষ্ট কমিটিগুলির অনুমতি গ্রহন বাঞ্ছনীয়। ২০২০ সাল থেকে কেন্ত্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক আইনটি কার্যকর করার সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন করতে থাকে। তাদের আর্জি কেন আমল দেওয়া হয়নি?  কিংবা বিলম্বিত পদক্ষেপ কি ইচ্ছাকৃত ? কটাক্ষে ছাড় দেননি বিরোধীরা ।

২০১৯ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসে মোদি সরকার। ওই বছর ১১ ডিসেম্বর, সিএএ পাস করিয়ে নেওয়া হয়। তখনই ঠিক হয়ে যায় বিলটি আইনে পরিণত হবেই । কিন্তু সামাজিক প্রতিক্রিয়া দেখে বিলের আইনি রূপান্তর সত্ত্বেও কেন্দ্র তা লাগু করতে গড়িমসি শুরু করে । আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে হাঠাৎই উধাও সে সংশয়।নাগরিকপঞ্জির বিচ্যুতি রয়ে গেছে। তার সংশোধন দূরস্ত। এর মধ্যে, মেরুকরণের হিসেব কষে,সংশোধিত নাগরিকত্ব বিধি চালু করে বিভাজনকে উসকে দিতে চাইছে কেন্দ্র। সম্প্রতি নদীয়া, উত্তর ২৪ পরগণায়, উত্তরবঙ্গে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু সেই সফরে সিএএ নিয়ে একবারও উচ্চবাচ্চ করেননি। কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, লোকসভা ভোটের আগেই দেশজুড়ে সিএএ চালু হয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রীর বঙ্গসফরের মূুহূর্তে বনগাঁর লোকসভা প্রার্থী আর কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর বলেছিলেন, অবিলম্বে কাঙ্খিত সিএএ লাগু হবে। তাঁর এই ঘোষণা নিছক আশ্বাস নয়, প্রধানমন্ত্রী কিংবা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভোটের আগের শপথের পরিকল্পিত অঙ্ক, তার স্বতন্ত্র বিশ্লেষণ অবশ্যই নিষ্প্রয়োজন। সিএএকে ‘ক্যা ক্যা’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার তাঁর ঝাঁঝালো আক্রমণ আরো শাণিত, আরো দুর্ভেদ্য হয়ে উঠতে পারে। নাগরিকরা ভোট দেন, তাঁদের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড আছে, সবাই তাঁরা নাগরিক- নাগরিকত্বের নতুন পোশাকি আবরণ কী দেবে, দেশপ্রেমিক শক্তি, বহুমাত্রীক জনবিন্যাস এবার সুতীব্র প্রশ্ন তুলতে পারে। কেন্দ্রীয় শাসক এ আইনের জোরে ভোটে কতটা ফায়দা তুলতে সক্ষম হবে, এ নিয়ে প্র‌শ্ন আছে। উত্তরপূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে বিভিন্ন নরগোষ্ঠীর অসন্তোষ বাড়তে পারে, বিশেষ করে অসম-ত্রিপুরা, মেঘালয়ে।পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছেন, আইনের বিজ্ঞপ্তি এখনো আমার হাতে আসেনি। বিভিন্ন ধারা উপধারা দেখে যদি মনে হয়, এতে কোনো শ্রেণীর মানুষের প্রতি বৈষম্যের আশঙ্কা আছে, আমরা অবশ্যই প্রতিবাদ করব। বৈষম্য মানব না । সিপিএম এর রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, আইন সমক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করতে মোদি সরকারের পাঁচ বছর সময় লেগে গেল। কেন্দ্র বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধির মতো জরুরি ইস্যুর সমাধান করতে পারেনি। এবার সিএএ চালু করে ভোট বৈতরনী পার হতে চাইছে।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!