- দে । শ
- মে ৩, ২০২৫
মাধ্যমিকের ফলাফলের প্রকাশের পরেই শোকের ছায়া, খড়দহে মেধাবী ছাত্রের রহস্যমৃত্যু

মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশের পর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটেছে একের পর এক মর্মান্তিক ঘটনা। খড়দহে এক মেধাবী ছাত্রের রহস্যমৃত্যুতে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পরিবারের দাবি, নিহইত ছাত্রের শরীরের কোমরের নিচের অংশসহ বিভিন্ন জায়গায় হাড় ভাঙা ছিল, আত্মহত্যার চেয়ে যা খুনের দিকেই বেশি ইঙ্গিত করছে। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
শুক্রবার প্রকাশিত হয়েছে পড়ুয়াদের স্কুলজীবনের অন্যতম পরীক্ষা মাধ্যমিকের ফলাফল। কেউ ভালো ফল করে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে রয়েছেন, কেউ বা প্রত্যাশিত ফল পেয়ে মনমরা। এরই মধ্যে মাধ্যমিকের ফলাফল প্রকাশের পরদিনই খড়দহের পাতুলিয়া গ্রামে মেধাবী ছাত্র সাগর চৌধুরীর রহস্যমৃত্যুতে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। এবছর মাধ্যমিকের ছাত্র সাগর সসম্মানে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিল। পরিবার-আত্মীয়স্বজনেদের মধ্যে আনন্দের আবহ। হঠাৎ করে আনন্দ, মর্মান্তিক শোকে পরিণত হলো পড়ুয়ার পরিবারে। শনিবার সকালে, বাড়ির অদূরে আম গাছের তলায় গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ওই কিশোরের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের দাবি, তার শরীরের কোমরের নিচের অংশসহ বিভিন্ন জায়গায় হাড় ভাঙা ছিল, আত্মহত্যার চেয়ে যা খুনের দিকেই বেশি ইঙ্গিত করছে। এ নিয়ে রহস্য বেড়েছে। রহড়া থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সাগর চৌধুরী মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো ফল করেছিল। স্বভাবতই সে খুবই খুশি ছিল। ফল প্রকাশের পর বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা, মজা করে পুরো দিনটি আনন্দে কাটিয়েছে সে। রাতে খাবার খেয়ে শুতেও গিয়েছিল। তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, রাতে এক অজ্ঞাত ফোন আসার পর সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। পরে বাড়ির কাছেই আম গাছের তলায় সাগরের দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। সাগরের বাবা শম্ভু চৌধুরী বলেন, ‘পরীক্ষার ভালো ফল করেছিল। সারাদিন খুশিতেই ছিল। আজ সকালে দেখি আমগাছ তলে পড়ে রয়েছে ও। কী করে হল কিছুই বুঝতে পারছি না। ডাক্তার বলছে ওর দেহের হাড় ভাঙা। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করে দেখুক।’ ঘটনাস্থলে উপস্থিত পাটুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কিশোর বইস্য জানিয়েছেন, ‘সাগর একজন মেধাবী ছাত্র ছিল। কী কারণে এমন ঘটনা ঘটল তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। সাগরের সঙ্গে কারও শত্রুতা ছিল কি না, বা সম্পর্কজনিত কোনো কারণে এই মৃত্যু হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের পরই মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।’
এদিকে, আত্মহত্যার এক আরেক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে আলিপুরদুয়ার অঞ্চলে, যেখানে এক ছাত্রী মাধ্যমিকের ফল প্রত্যাশা অনুযায়ী না পাওয়ায় আত্মঘাতী হয়ে মারা গেছে। এছাড়াও, পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের গোপীনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা, মাধ্যমিকের ছাত্র ঋতম ঘোষ আত্মঘাতি হয়েছেন। প্রত্যাশিত ফল না পেয়ে ওই পড়ুয়া আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা যাচ্ছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঋতম সাধারণত ভাল পড়াশোনা করত, কিন্তু ফলাফলে আশানুরূপ ফল না পাওয়ার কারণে সে হতাশ হয়ে এই চরম সিদ্ধান্ত নেয়। এছাড়া, একটি আরেকটি শোকাবহ খবর এসেছে আসানসোলের উমারানি গড়াই বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী থৈবি মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু নিয়ে। ৬৭৪ নম্বর পেয়ে স্কুলের টপার হয়েছিল থৈবি, কিন্তু সে নিজে তা দেখে যেতে পারেনি। জানা গেছে, জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে ওই পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে। অসুস্থ অবস্থায় পরীক্ষা দেওয়ার পরেও সে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে স্কুলে টপার হয়েছিল। তার মৃত্যুতে তাঁর স্কুল ও পাড়া-প্রতিবেশীসহ সবাই শোকাহত।
❤ Support Us