Advertisement
  • এই মুহূর্তে দে । শ
  • জুলাই ৩, ২০২৩

নিহত নাহেলের দিদার কাতর আবেদন : ধ্বংসলীলা চাই না, শান্তি ফিরুক ফ্রান্সে

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
নিহত নাহেলের দিদার কাতর আবেদন : ধ্বংসলীলা চাই না, শান্তি ফিরুক ফ্রান্সে

পুলিশ কর্মীদের গুলিতে নিহত ফরাসি কিশোরের দিদা শান্তির জন্য আবেদন করেছেন। তাঁর আবেদন, এই মৃত্যুর জন্য যে দাঙ্গা শুরু হয়েছিল তার অবসান হওয়া উচিত। ফ্রান্সে যখন টানা পঞ্চম দিন ধরে বিক্ষিপ্ত সহিংসতার ঘটনা ঘটছে সেই সময় তাঁর আবেদন আসে। ইতিমধ্যেই দাঙ্গাকারীরা গাড়িতে আগুন দেয়, দোকান লুট করে এবং প্যারিসের শহরতলির মেয়রের বাড়ি লক্ষ্য করে আক্রমণ চালায়।

১৭ বছর বয়সী নাহেলের দিদা ফরাসি সংবাদ মাধ্যমে বলেন, “জানালা, বাস… স্কুল ভাঙবেন না। আমরা সবকিছু শান্ত করতে চাই। আমি ক্লান্ত।” তিনি আরও বলেন, “নাহেলের মা বলেছেন, এখন আর আমার পুত্রের জীবন নেই।”

নাহেলের দিদা বলেন, তিনি তাঁর নাতির হত্যাকারী পুলিশ অফিসারের প্রতি ক্ষুব্দ ছিলেন কিন্তু সাধারণভাবে পুলিশের উপর নয়। শনিবার নাহেলের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।

এদিকে, রবিবারও ফ্রান্সে সহিংসতার বিচ্ছিন্ন ঘটনা অব্যাহত ছিল, যদিও পরিস্থিতি আগের দিনের তুলনায় এখন অনেকটাই শান্ত। প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেছেন যে খুব শীর্ঘই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। প্যারিসের পুলিশ প্রধান লরেন্ট নুনেজ সাংবাদিকদের বলেন, “যতটা দেখা গেছে তাতে বলা যায় ক্ষয়ক্ষতি কমই হয়েছে, তবে আমরা আগামী দিনে সংঘবদ্ধ থেকে মনোযোগী হয়ে কাজ করব, এই ঘটনায় আমরা নিজেদের বিজয়ী দাবি করছে না।”

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমনিনের মতে, রপরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রবিবার রাতে আবার ৪৫ হাজার পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছিল । প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন সোমবার এবং মঙ্গলবার উভয় কক্ষের প্রধানদের সাথে বিক্ষোভে ক্ষতিগ্রস্ত ২২০টি শহর ও শহরের মেয়রদের সাথে একটি বৈঠক ডেকেছেন। এই ঘটনার ফলে রাষ্ট্রপতি, জার্মানিতে তাঁর প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর স্থগিত করেছেন, রবিবার রাতে একটি বিশেষ নিরাপত্তা বিষয়ক বৈঠকও তিনি করেছেন।

এই বৈঠকে অংশ নেওয়া এক সিনিয়র আধিকারিক বলেন, ম্যাকরঁ অস্থিরতার কারণগুলির একটি বিশদ, দীর্ঘমেয়াদী মূল্যায়ন শুরু করতে চান। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মতে, পুলিশ রবিবার দেশব্যাপী ৭৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এখন পর্যন্ত, পুরো ফ্রান্সে ৩ হাজার জনের বেশি মানুষকে আটক করা হয়েছে এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিনের জানান, এই বন্দিদের মধ্যে ২ হাজার বন্দির গড় বয়স ১৭ বছর। সহিংসতায় শত শত পুলিশ এবং দমকলকর্মী আহত হয়েছে, যদিও কতজন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছে তা কর্তৃপক্ষ জানায়নি।

এদিকে, লাহায় লে হজের মেয়র ভিনসেন্ট জিনব্রুনের বাড়িতে হামলার পর কর্তৃপক্ষ হত্যা চেষ্টার তদন্ত শুরু করেছে। মেয়র বলেছেন যে তার স্ত্রী এবং তাঁর এক সন্তান সকাল দেড়টা নাগাদ হামলায় আহত হয়েছেন,তিনি বলেন, এই হামলাটি অস্থিরতার মধ্যে একটি ভয়ঙ্কর এবং অসম্মানের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে। আঞ্চলিক প্রসিকিউটর স্টিফেন হারডুইন বলেছেন, প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হয়েছে যে গাড়িটি, বাড়িটিকে ধাক্কা মেরে আগুন দেওয়ার জন্যই ছিল। তিনি বলেন, গাড়িটিতে একটি বোতলে দাহ্যবস্তু পাওয়া গেছে। মেয়রের বাড়ির বাইরে একটি সংবাদ সম্মেলনে প্রসিকিউটর বলেন, “নিচু দেয়ালে ধাক্কা লেগে গাড়িটি থেমে যায়, বাড়ির বারান্দায় পৌঁছানোর আগেই। শুধুমাত্র সামনের গেটেই আঘাত করা হয়েছে বাড়ির গাড়ির সঙ্গে।” তিনি বলেন, মেয়রের স্ত্রী ও ৫ ও ৭ বছর বয়সী দুই সন্তান পেছনের বাগান দিয়ে পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়ার সময়, মেয়রের স্ত্রীর পায়ের পাতায় আঘাত লাগে, এই আঘাতের ফলে পায়ের পাতার আঘাতপ্রাপ্ত অংশ “ভাঙ্গে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে।”


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!