- প্রচ্ছদ রচনা
- এপ্রিল ২, ২০২২
১২১ বছরে উষ্ণতম মার্চের সাক্ষী দেশ, ভারতে আবহাওয়ায় এই আমূল পরিবর্তন চমকে দিচ্ছে বিজ্ঞানীদের

১৯০১ সাল থেকে যে রেকর্ড রয়েছে, তার হিসেবে নয়া নজির গড়ল এই মাসের উষ্ণতা ! ১২২ বছরে আবহাওয়ার এমন চেহারা ভারতে দেখা যায়নি। কার্যত ইতিহাস তৈরি হয়েছে এই বছরের আবহাওয়ায়। ভারতের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর ইন্ডিয়ান মেট্রলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট-এর তরফ থেকে এই কথা জানানো হয়েছে। হিমাচল প্রদেশ, হরিয়ানা, চণ্ডীগড়, দিল্লি, পঞ্জাব ও রাজস্থানের প্রায় সর্বত্রই গড় তাপমাত্রা ৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস করে বৃদ্ধি পেয়েছে ।কেন্দ্রীয় মৌসম ভবনের তরফ থেকে বলা হয়েছে, মার্চ মাসে শেষ ১২২ বছরের ইতিহাস পাল্টে দিয়ে ভারতের গ্রীষ্মের পরিমাণ সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। ভেঙে দিয়েছে ভারতের গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। ২০১০ সালের মার্চ মাসে গড় দৈনিক তাপমাত্রা দাঁড়িয়ে ছিল ৩৩.০৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এ বারে সেই রেকর্ড ভেঙে গিয়েছে।
সদ্য শেষ হওয়া মার্চের দৈনিক দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা দাঁড়িয়ে আছে ৩৩.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। অর্থাৎ .০১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯০১ সালের পর এমন তাপমাত্রার বৃদ্ধি দেখা যায়নি। এই বছর মার্চ মাসের ২০ তারিখে দিল্লির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা রেকর্ড।আমাদের রাজ্যেও তাপমাত্রা বৃদ্ধি কার্যত জানান দিয়ে দিয়েছে গ্রীষ্মের প্রবল দাবদাহের কথা। এখনও এপ্রিল-মে মাসের তীব্র গরম শুরু হয়নি, তার মধ্যেই রাজ্যের মানুষের হাঁসফাঁস করা গরমে নাজেহাল অবস্থা।হাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, স্বাভাবিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রার চেয়ে গড়ে ১.৮৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল এবারের মার্চের তাপমাত্রা। এই পরিসংখ্যানে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
কেবল উষ্ণতাই নয়, বৃষ্টিপাতের স্বাভাবিক হিসেবেও এই মাস ছিল অনেকটাই শুষ্ক। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের দাবি, দীর্ঘকালীন বৃষ্টিপাতের হিসেবে মার্চে ৭১ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে দেশজুড়ে। সাধারণত এমাসে দেশে ৩০.৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয় গড়ে। সেখানে এবার বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ৮.৯ মিলিমিটার। এই হিসেবও চমকে দেওয়ার মতো। ১৯০৮ সালে দেশে বৃষ্টি হয়েছিল ৮.৭ মিলিমিটার। পরের বছর হয়েছিল তার চেয়েও কম, ৭.২ মিলিমিটার। এবারের মার্চের হিসেব থাকবে তার ঠিক পরেই ।
বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব এখন আর সুদূরপ্রসারী নয়। সতর্ক না হলেই যে অচিরে বড় বিপদ অপেক্ষা করে রয়েছে, বারবার সেই বিষয়ে সাবধান করেছেন আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা। কিন্তু যাবতীয় প্রচার সত্ত্বেও সচেতনতা যে সেভাবে গড়ে ওঠেনি তা ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এই পরিস্থিতিতে মার্চের এই তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের পরিসংখ্যানকে ইঙ্গিতবহই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
❤ Support Us