- এই মুহূর্তে দে । শ
- আগস্ট ১৬, ২০২৩
যাদবপুরকাণ্ডে রেজিস্ট্রার এবং ডিন অফ স্টুডেন্টসকে লালবাজারে তলব আজ দুপুরে, রাজ্যপাল কর্তৃপক্ষকে আজই বিকেলে বৈঠকে ডেকেছেন রাজভবনে
যাদবপুরকাণ্ডে নয়া মোড়। এ বার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু এবং ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায়কে লালবাজারে তলব করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার দুপুর ৩টেয় তাঁদের লালবাজারে তলব করা হয়েছে। অন্য দিকে, বুধবার বিকেল ৫টাতেই রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য সিভি আনন্দ বোস বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসার জন্য কর্তৃপক্ষকে ডেকে পাঠিয়েছে।
এদিকে এই প্রসঙ্গে স্নেহমন্জু বসুকে প্রশ্ন করলে বুধবার তিনি জানান, “আমি এখন কিছু বলতে পারছি না। আমি কার্যনির্বাহী অফিসার। আমাকে যা বলতে হয় তা করি। আজ আমাদের মিটিং আছে , তার পরে মিটিঙে যা হবে সেটা বলতে পারব।” এদিকে প্রশ্ন উঠছে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমন্জু বসু অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ছুটি নিয়ে নেমন্তন্ন বাড়িতে যেতে পারেন অথচ ছাত্রমৃত্যুর ৪দিন পরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে এলেন! তাঁর কি কোনও দায়িত্ব নেই? কী ভাবে দিনের পর দিন প্রাক্তনীরা মেল হোস্টেল দখল করে এই দুর্নীতি চালাচ্ছে? কলেজের হোস্টেলে বহিরাগত, প্রাক্তনীরা থাকে সেটা রেজিস্ট্রার স্নেহমন্জু বসু, হোস্টেল সুপার কি জানতেন না? কলেজের হোস্টেল কী গেস্ট হাউস? পুলিশ এই সব উত্তর জানতে চাইছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে।
বুধবার গভীর রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের এ-২ ব্লকের নীচ থেকে নগ্ন ও অচৈতন্য ও রক্তকর অবস্থায় পাওয়া যায় বাংলা অনার্সের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রকে। বৃহস্পতিবার ভোরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’তে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার এক সপ্তাহের মধ্যে মোট সাত জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এঁদের মধ্যে ২ জন প্রাক্তন ছাত্র। বাকিরা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তথা মেন হস্টেলের আবাসিক। আরও দুই পড়ুয়া, যাঁরা যাদবপুরের ঘটনার পরে হস্টেল ছেড়েছিলেন, তাঁদের পশ্চিম মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর থেকে আটক করে কলকাতা আনা হচ্ছে বলে খবর।
ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। ইউজিসির র্যাগিং সংক্রান্ত নির্দেশাবলি অমান্য করার কারণও দর্শাতে বলেছে পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশন। বিশ্ববিদ্যালয়কে শো-কজ করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, সুপ্রিম কোর্ট র্যাগিং সংক্রান্ত যে নির্দেশ দেয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তা অমান্য করা হয়েছে। র্যাগিং নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি-এর নির্দেশিকাও মানা হয়নি। এ নিয়ে রেজিস্ট্রারকে নোটিস পাঠিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও। পাশাপাশি রাজ্যের কাছেও রিপোর্ট তলব করেছে তারা।
গত বুধবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় র্যাগিং-বিরোধী কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য সিভি আনন্দ বোস। গত শুক্রবার তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন অধ্যাপককে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। সেখানে রাজ্যপাল জানান, শুধু যাদবপুর নয়, রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে একটি ‘র্যাগিং-বিরোধী কমিটি’ তৈরি করা হবে। ওই কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য তথা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়। আবার বুধবার এই বিষয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বুধবার বিকেল ৫টায় রাজভবনে এই বৈঠক হবে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে প্রতিনিধিদের ওই বৈঠকে আসতে বলা হয়েছে। এখন দেখা যাক কী হয় এই বৈঠকে। রাজ্যপাল জানিয়েছেন ব্যবস্থা প্রস্তুত\ সব অন্ধকারের পরেই এল থাকে।
❤ Support Us