- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- মার্চ ১৩, ২০২৫
তরতরিয়ে চড়ছে পারদ, চৈত্রের শুরুতেই দক্ষিণবঙ্গে তাপপ্রবাহের সতর্কতা

চৈত্রের শুরুতেই গরমের তীব্র দাপট টের পেতে চলেছে বঙ্গবাসী। শুক্রবার দোল, শনিবার হোলি। রঙের উৎসবে গোটা দেশে সাজো সাজো রব। এরমধ্যে তড়তড়িয়ে চড়ছে পারদ, রবিবার দক্ষিণবঙ্গে তাপপ্রবাহের সর্তকতা জারি করল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। রবিবার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁতে পারে জানিয়েছেন তাঁরা। দক্ষিণবঙ্গের চার জেলা— বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূম ও পশ্চিম বর্ধমানে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দোলের দিন থেকেই দক্ষিণবঙ্গজুড়ে তীব্র গরম অনুভূত হবে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, শুক্রবার রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পারদ ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠতে পারে। কলকাতা ও সংলগ্ন ভিন্ন জায়গায় তাপমাত্রা ৩৬-৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাতে পারে।
গতবছর সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পঞ্চাশ বছরের রেকর্ড ভেঙেছিল পারদ । এবার বসন্তকালের শেষভাগে দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হল । ইতিমধ্যেই বাইরে বেরোলে চড়া রোদের তাপ সহ্য করতে হচ্ছে । কলকাতার তাপমাত্রা ইতিমধ্যেই ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে। পানাগড়ে তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার করেছে। বাঁকুড়া, ডায়মন্ড হারবার, কলাইকুন্ডা ও পুরুলিয়াতেও তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে উঠেছে। আগামী চার-পাঁচ দিনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা আরও ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে, পাশাপাশি সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে জানাচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছেন, এই আকস্মিক তাপপ্রবাহের ফলে প্রচণ্ড গরমে অসুস্থতা ও ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি বাড়তে পারে। তাই সুস্থ থাকতে প্রচুর পরিমাণে জল পান করা আর টাটকা ফল খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। বাড়ির বাইরে বের হলে অবশ্যই ছাতা ও সানগ্লাস সঙ্গে রাখার পাশাপাশি ঢিলেঢালা সুতি পোশাক পরার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। স্কার্ফ, পাতলা ওড়না বা টুপি ব্যবহার করে নাক-মুখ ঢেকে রাখা প্রয়োজন। বিশেষ কাজ না থাকলে সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তীব্র গরমের সময় বাইরে বেরোনো এড়িয়ে চলাই ভালো।
তবে, দক্ষিণবঙ্গের তুলনায় উত্তরবঙ্গে আবহাওয়া এখনো মনোরম রয়েছে। এ সপ্তাহে দার্জিলিং, কালিম্পং-সহ পার্বত্য জেলাগুলিতে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তর দিনাজপুরের কিছু অংশেও ঝড়বৃষ্টি হতে পারে। দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলায় ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। শুক্রবার পর্যন্ত বৃষ্টি চলবে, তবে সপ্তাহান্তে আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে, এরপর উত্তরবঙ্গেও ধীরে ধীরে তাপমাত্রা বাড়বে। দক্ষিণবঙ্গে আবহাওয়া শুকনো থাকলেও উপকূলবর্তী এলাকায় সমুদ্র উত্তাল হতে পারে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে কিছু জায়গায় জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে। ঢেউয়ের উচ্চতা ০.৫ থেকে ০.৬ মিটার পর্যন্ত উঠতে পারে এবং এই জলোচ্ছ্বাস ১৫-২০ সেকেন্ড স্থায়ী হতে পারে। তবে বৃষ্টিপাত বা ঘূর্ণাবর্তের কোনো সম্ভাবনা আপাতত নেই। সবমিলিয়ে দক্ষিণবঙ্গে প্রচণ্ড গরমের দাপটে যখন হাঁসফাঁস করবে, উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি সাময়িক স্বস্তি দেবে।
অন্যদিকে হোলির দিন দিল্লিতে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। রাজধানীর তাপমাত্রা ৩৫ ড্রিগ্রি ছুঁয়েছে। দিল্লি ছাড়াও জম্মু-কাশ্মীর ও হিমাচলে নতুন করে বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে পাঞ্জাব, হরিয়ানা, চণ্ডীগড়, উত্তর প্রদেশ, রাজস্থানে। ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে অসম, মেঘালয়েও। ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা সিকিমেও। এদিকে আশঙ্কা অনুযায়ী গুজরাটে ইতিমধ্যে তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে, তাপমাত্রা ৪০ ছুঁয়েছে, আগামী কয়েকদিনে গুজরাটকে টেক্কা দেবে বাংলা।
❤ Support Us