- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- মার্চ ২০, ২০২৫
কেন্দ্রের সাথে বৈঠকের পরই চললো বুলডোজার, অনশনরত ৫০০-৭০০ কৃষক আটক পাঞ্জাবে।প্রতিবাদ বিরোধীদের

পাঞ্জাবের শম্ভু ও খানাকৌরি সীমান্তে গত এক বছর ধরে আন্দোলনরত কৃষকদের হটিয়ে দিল পুলিশ। কৃষকনেতা জগজিৎ দাল্লেওয়াল সহ ৫০০-৭০০ আন্দোলনকারীকে আটক করেছে পুলিশ। হরিয়ানায় সিমেন্ট ব্যারিকেড ভাঙতে চলল বুলডোজার। কৃষকরা এমএসপি গ্যারান্টি, কৃষি-ঋণ মকুব ও অন্যান্য দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছিলেন। এই পরিস্থিতির মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কৃষকদের পরবর্তী আলোচনা ৪ মে অনুষ্ঠিত হবে।
VIDEO | Shambhu Border: Bulldozers being used to remove temporary shelters used by protesting farmers.#ShambhuBorder #FarmersProtests
(Full video available on PTI Videos – https://t.co/n147TvqRQz) pic.twitter.com/wtbnM7LpOd
— Press Trust of India (@PTI_News) March 20, 2025
বুধবার গভীর রাতে পাঞ্জাবের শম্ভু ও খানাকৌরি সীমান্তে গত এক বছর ধরে আন্দোলনরত কৃষকদের হটিয়ে দিল পুলিশ। কৃষকনেতা জগজিৎ দাল্লেওয়াল সহ ৫০০-৭০০ আন্দোলনকারীকে আটক করেছে পুলিশ। হরিয়ানায় কৃষকদের সিমেন্ট ব্যারিকেড ভাঙতে চলল বুলডোজার। কৃষকরা এমএসপি গ্যারান্টি, কৃষিঋণ মকুব ও অন্যান্য দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছিলেন। এই পরিস্থিতির মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কৃষকদের পরবর্তী আলোচনা ৪ মে অনুষ্ঠিত হবে। ঘটনাচক্রে এমন দিনে এই কাণ্ড ঘটেছে যখন চণ্ডিগড়ে কৃষক নেতা জগজিৎ সিং দালেওয়াল ও কিষাণ মজদূর মোর্চা প্রধান সরওয়ান সিং সহ আরো নেতৃত্বরা কেন্দ্র সরকারের প্রতিনিধি দলের সাথে এমএসপি-এর আইনগত গ্যারান্টি নিয়ে আলোচনা শেষে প্রতিবাদস্থলে ফিরে আসছিলেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করলে অনশনরত কৃষকদের সঙ্গে তাঁদের খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায়। বহু কৃষক ও পুলিশকর্মী আক্রান্ত হন, আন্দোলনকারীদের তাঁবুগুলিও ভেঙে ফেলে আম আদমি সরকারের পুলিশবাহিনী। আক্রান্ত কৃষকদের অভিযোগ দুদিন আগেই আপ সরকার জানিয়েছিল, কৃষক আন্দোলন দমনের কোনো ইচ্ছা তাদের নেই। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়া পর্যন্ত কৃষকরা প্রতিবাদ কর্মসূচী চালিয়ে যেতে পারেন।
কৃষক নেতা গুরমনীত সিংহ মঙ্গত জানান, বৈঠকের পর তাঁরা শম্ভু সীমানার দিকে যাত্রা করছিলেন। এ সময় মোহালির কাছে দাল্লেওয়ালসহ বেশ কয়েকজন কৃষক নেতাকে পঞ্জাব পুলিশ আটক করে। কেন তাঁদের আটক করা হয়েছে, সে বিষয়ে পরিষ্কার তথ্য পাওয়া যায়নি। অনশনরত দাল্লেওয়ালকে আটক করার পর পাঞ্জাব ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস-এ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার তাকে জালন্ধরে পিডব্লিউডি হাসপাতাল পাঠানো হয়। এই ঘটনায় পঞ্জাবের অর্থমন্ত্রী হরপাল সিংহ চিমা জানিয়ে বলেছেন, এই দুটি সীমানায় থাকা মহাসড়কগুলি রাজ্যের ‘প্রাণশক্তি’, দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলনের কারণে সেগুলি স্তব্ধ হয়ে আছে, তাতে ব্যবসা ও শিল্পের ক্ষতি হচ্ছে। কৃষকদের উপর এই ‘আক্রমন’-এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে কংগ্রেস। তাঁদের মতে পাঞ্জাব ও কেন্দ্রের সরকার কৃষক বিরোধী। এটি একটি আত্মঘাতি পদক্ষেপ, এর ফলে পাঞ্জাব আরও সমস্যার মুখে পড়বে। পাঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, কংগ্রেস এমপি চারনজিৎ সিং চানি বলেছেন, ‘কৃষক নেতাদের উপর এভাবে দমনপীড়ন আসলে বড়ো ষড়যন্ত্রের অংশ। শুধু পাঞ্জাব নয়, গোটা দেশেই কৃষক আন্দোলনকে আক্রমণ করার চেষ্টা চলছে।’
VIDEO | Shambhu Border: Punjab Police evict protesting farmers. Here’s what one of the protesting farmers said:
“The action taken by the government is very wrong. We were not informed about anything, they just came unannounced. What Bhagwant Mann government has done is not… pic.twitter.com/SA5thU4J57
— Press Trust of India (@PTI_News) March 20, 2025
এই ঘটনায় বিজেপি শিবিরও পাঞ্জাব পুলিশের তীব্র নিন্দা করেছে। বিজেপি নেতা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবনীত সিংহ বিট্টু অভিযোগ করেছেন, পাঞ্জাবের আপ সরকার কেন্দ্র ও আন্দোলনরত কৃষকদের মধ্যে আলোচনায় বাধা সৃষ্টি করতে চাইছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, বুধবার সকালে পঞ্জাব-হরিয়ানা সীমানায় পুলিশের প্রস্তুতি দেখে এই ধরনের পদক্ষেপের আশঙ্কা করা হয়েছিল। আন্দোলনরত কৃষকরা জানান, ঘটনাস্থলে কাছে পুলিশ অ্যাম্বুলেন্স, বাস, দমকল ইঞ্জিন, পুলিশ ভ্যান প্রস্তুত রেখেছিল। পাটিয়ালা এসএসপি নানক সিং জানিয়েছেন,’ শম্ভু সীমান্তে কৃষকরা দীর্ঘ সময় ধরে প্রতিবাদ করছিলেন। তাঁদের যথাযথ সতর্কতা দেবার পরেই পুলিশ এলাকা খালি করেছে। কিছু মানুষ বাড়ি ফিরতে ইচ্ছুক ছিলেন, তাই তাদের বাসে করে পাঠানো হয়েছে।’ তিনি আরো বলেছেন, ‘এবার ওই রাস্তা পুরোপুরই পরিষ্কার করা হবে। যানবাহন চলাচল শুরু হবে।’
উল্লেখ্য, কৃষকদের কয়েকটি দাবির মধ্যে রয়েছে ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য, কৃষি ঋণ মকুব, পেনশনের ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ বিলের বৃদ্ধি না করা, পুলিশ মামলা প্রত্যাহার, ২০২১ সালের লখিমপুর খেরি সহিংসতা মামলার বিচার, জমি অধিগ্রহণ আইন পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং ২০২০-২১ আন্দোলনে মারা যাওয়া কৃষকদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ । যদাবি মেটাতে সরকারের প্রায় ২৫,০০০-৩০,০০০ কোটি টাকা খরচ করতে পারে। এই দাবিগুলির জন্য কৃষকদের আন্দোলন দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে কৃষকরা শম্ভু ও খানাউড়ি সীমানায় অবস্থান করছেন। এই আন্দোলন চলাকালীন দাল্লেওয়াল দীর্ঘদিন অনশনরৎ ছিলেন। যে কারণে শীর্ষ আদালত তাঁর শারীরিক অবস্থার প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করে। পরে আদালতের হস্তক্ষেপে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়, এবং বেশ কয়েকটি দফা বৈঠকও হয়েছে। বুধবার কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান, শিল্পমন্ত্রী পিযুস গোয়েল ও মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী কৃষক নেতাদের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকে কেন্দ্রের তরফে একজন যুগ্ম-সচিবকে কৃষকদের দাবিদাওয়াগুলি নিয়ে নিয়মিত যোগী রক্ষার দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে কৃষক নেতারা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং কৃষি সংশ্লিষ্ট বিষয়ক সংস্থার রিপোর্ট পেশ করে দাবি করেন কেন সব ফসলের ন্যূনতম দাম বেঁধে দেওয়া জরুরি। এর আগে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি, কেন্দ্রীয় দলের সদস্যরা পাঞ্জাবে কৃষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছিলেন। এই বৈঠকের আগে, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সাথে কৃষকদের চারটি আলোচনা হয়েছিল, কিন্তু তা ফলপ্রসূ হয়নি। আগামী ৪ মে পরবর্তী বৈঠক।
অন্যদিকে, বুধবার রাতে পাঞ্জাবের পাশাপাশি হরিয়ানা পুলিশ শম্ভু-আমবালা সড়ক পরিষ্কার করার জন্য বুলডোজার চালিয়েছে। এই রাস্তা কৃষক আন্দোলনের জেরে গত ১ বছর ধরে বন্ধ ছিল। পুলিশ সিমেন্ট ব্লক ও কাঁটাতার ব্যবহার করে ব্যারিকেড তৈরি করেছিল যাতে কৃষকরা দিল্লি প্রবেশ করতে না পারে। যদিও দুটি ঘটনার পরেও, কৃষক সংগঠনগুলি তাঁদের আন্দোলন জারি রাখবার ঘোষণা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সংসদে দাঁড়িয়ে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় । তিনি সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন, কেন্দ্রের সঙ্গে আন্দোলনরত কৃষকদের বৈঠক হয়েছে গতকাল । তারপরই কৃষক নেতাদের ধরপাকড় এবং অবস্থান রুখতে বুলডোজার চালানো নিন্দনীয় ঘটনা ।
VIDEO | On detention of several farmer leaders in Punjab, TMC MP Saugata Roy says, “I oppose, criticise the arrest of farmer leaders. Yesterday, three hours of talks took place and after that to remove the farmers forcibly and arrest farmer leaders is worth criticism. ‘Ye kharab… pic.twitter.com/CU85MeMi0t
— Press Trust of India (@PTI_News) March 20, 2025
এবিষয়ে সমাজবাদি পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব বলেছেন, বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকার না কেন্দ্রে না রাজ্যে কৃষকদের উন্নয়ন নিয়ে চিন্তিত, তারা শুধু পূঁজিপতিদের স্বার্ধে কাজ করেন ।
VIDEO | On several farmer leaders being detained in Punjab, Samajwadi Party president Akhilesh Yadav (@yadavakhilesh) says, “The BJP doesn’t bother about the farmers. The BJP only shows the economy from the outside and is concerned about prosperity of big people. The entire… pic.twitter.com/5qnvmPjwPx
— Press Trust of India (@PTI_News) March 20, 2025
❤ Support Us