- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- মার্চ ২১, ২০২৫
গত পাঁচ বছরে ২১ শতাংশ বহর কমেছে হিমালয়ের হিমবাহের, বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার রিপোর্টে উদ্বেগ

২১ মার্চ বিশ্ব গ্লেসিয়ার দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। ২০২৫ সালকে রাষ্ট্র সংঙ্ঘ আন্তর্জাতিক গ্লেসিয়ারের সংরক্ষণ বর্ষ হিসেবে ঘোষণা করেছে। সে দিনেই হিমালয়ের হিমাবহ নিয়ে উদ্বেগজনক তথ্য সামনে এলো।বিশ্ব আবহাওয়া সংগঠন ( ডব্লুএমও) এবং বিশ্ব হিমবাহ নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সংস্থার যৌথ রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত পাঁচ বছরে প্রায় ২১ শতাংশ কমেছে হিমালয়ের হিমবাহ, যার ফলে অদূর ভবিষ্যতে হিমালয় থেকে সৃষ্টি হওয়া বহু নদী সমস্যার সম্মুখীন হবে। যদি এভাবে হিমবাহ গলতে থাকে তাহলে শুষ্ক মৌসুমে নদীতে জল পাওয়া যাবে না। এই প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, যে ২০০০-২০২৩ সালের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হিমালয়ান গ্লেসিয়ারগুলি ৫% থেকে ২১% পর্যন্ত সংকুচিত হয়েছে।
“What happens on the glacier doesn’t stay on the glacier.”
From rising seas to freshwater scarcity, glacier melt is upending our lives. But it’s not too late to act: every 10th of a degree of further warming we can avoid counts, says Michael Zemp of @UZH_ch on #WorldGlaciersDay pic.twitter.com/sZGFPIL5T1
— United Nations Geneva (@UNGeneva) March 21, 2025
এশিয়ার এই অঞ্চল পৃথিবীর মেরু অঞ্চলের বাইরে সবচেয়ে বড় উঁচু পর্বত ও বরফভূমি এলাকা, তাই এটিকে ‘তৃতীয় মেরু’ বলা হয়। অঞ্চলের প্রায় ১০০,০০০ গ্লেসিয়ারে প্রায় ৭,০০০ ঘন কিলোমিটার বরফ রয়েছে, যার অর্ধেকেরও বেশি হিমালয় ও কারাকোরাম পর্বতশ্রেণীতে অবস্থিত। এশিয়ার ১০টি বৃহত্তম নদী—যেমন সিন্ধু, ব্রহ্মপুত্র ও গঙ্গা—হিন্দু-কুশ হিমালয় থেকে প্রবাহিত হয়। এই নদীগুলি মিলিতভাবে পৃথিবীর এক চতুর্থাংশ জনসংখ্যার জন্য জল সরবরাহ করে। এই অঞ্চলের বরফ গলা জল প্রায় ২২০ মিলিয়ন মানুষের মৌলিক প্রয়োজন মেটাতে পর্যাপ্ত জল সরবরাহ করে। পাকিস্তান, আফগানিস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান ও কিরগিজস্তান দেশগুলোর মোট প্রয়োজন মেটাতে পারে।
Today marks the FIRST-EVER #WorldGlaciersDay!
Glaciers are sensitive indicators of climate change and are retreating globally due to rising temperatures. Now is the time for BOLD #ClimateAction.
🔗https://t.co/mVv5R94UY1 pic.twitter.com/NrM3tcfFuT
— World Meteorological Organization (@WMO) March 20, 2025
গঙ্গার ৭০ শতাংশ আর ব্রহ্মপুত্রের ৬৫ শতাংশ জলই হিমবাহ গলনের জল। খরার সময়েও যা অব্যহত থাকে। কিন্তু অতিরিক্ত গ্লেসিয়ার গলে যাবার ফলে গত কয়েক দশকে বন্যার প্রবণতা বেড়েছে। বিশেষ করে উপরের সিন্ধু ও গঙ্গার তীরবর্তী অঞ্চলে। এই হারে বরফ গলতে থাকলে ভবিষ্যতে, বন্যা পরিস্থিতিতে আরো বাড়বে।গলিত গ্লেসিয়ার আর অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে ভারতে। রিপোর্টে উল্লেখ, আগামী কয়েক দশকে হিমবাহ গলন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে। এটি ধীরে ধীরে হিমবাহ নিঃশেষ হয়ে যাবে। ফলে পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল স্থানগুলোর কৃষিক্ষেত্রে সেচের অভাবে ভয়ঙ্কর অবস্থার সম্মুখীন হবে। অকাল বন্যা ও খরা ঝুঁকির সম্মুখীন হবে। উত্তর ভারতে নদী প্রবাহ কমে গেলে জল ও খাদ্য সরবরাহের উপর তো প্রভাব পড়বেই, বিপুল জলবিদ্যুৎ শক্তি থেকে বঞ্চিত হতে হবে। ভারতের ৫২ শতাংশ জলবিদ্যুৎ শক্তি হিমালয় থেকে উদ্ভূত নদীগুলির উপর নির্ভরশীল। এছাড়াও হিমবাহর দ্রুত গলন বর্তমানে সামুদ্রিক জলস্তর বৃদ্ধি করবে, যার ফলে সমুদ্র পরিবেষ্টিত রাজ্যগুলির জন্যও এটি বিপদ সংকেত। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, বিগত ৬ বছরের মধ্যে পৃথিবীর বৃহত্তম হিমবাহগুলি গলনের দ্রুততম রেকর্ড করেছে। বহু অঞ্চলে ২১ শতকের শেষ অবধি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
❤ Support Us