- দে । শ
- ডিসেম্বর ২৩, ২০২৩
শিশির অধিকারীর পা ছুঁয়ে গুরু সম্বোধন,শাস্তির মুখে কাঁথি পুরসভার পুরপ্রধান সুবলকুমার
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বাবা, কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে এবং তাঁকে রাজনৈতিক গুরু বলে সম্বোধন করে দলের রোষে পড়লেন কাঁথি পুরসভার তৃণমূল পুরপ্রধান সুবলকুমার মান্না। শুভেন্দু-শিশির-অধিকারী পরিবারের সঙ্গে তৃণমূলের যে বিবাদ চলছে তাতে সুবলকুমার মান্নার এই কাজ করা ঠিক হয়নি বলে জেলা নেতৃত্ব তাঁকে শোকজ করেছে। তবে সুবলকুমার মান্না জানিয়েছেন তিনি এই শোকজ মানেন না। সুবলমুমের মান্না বলেছেন, “বাবা-মা জন্ম দিয়েছেন। আমায় পথ চলা শিখিয়েছেন পূজ্যপাত আমার গুরুদেব শিশির অধিকারী। এই বক্তব্যেই সুবলকুমার মান্নার উপর চটেছে জেলা তৃণমূল। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে শোকজের উত্তর দিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় রাজ্য পার্টি তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলে পূর্ব মেদিনীপুর তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব জানিয়েছে।
অতি সম্প্রতি, সম্পত্তিতে অসঙ্গতির অভিযোগ নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে এক চিঠির ছবি পোস্ট করে কুণাল ঘোষ তীক্ষ্ণ আক্রমণ করেন শিশির অধিকারীকে। এই আবহেই শিশির অধিকারীর পা ছুঁয়ে প্রণাম করে রোষে পড়লেন কাঁথির তৃণমূল নেতা ও কাঁথি পুরসভার পুরপ্রধান সুবলকুমার মান্না।
শুক্রবার কাঁথির একটি বেসরকারি স্কুলের অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে শিশির অধিকারীর পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন তৃণমূল নেতা ও কাঁথির পুরপ্রধান সুবলকুমার মান্না। তারপর তাঁকে গুরুদেব বলে সম্বোধনও করে বসলেন সুবলকুমার। শিশিরবাবুকে প্রশস্তি করেই তৃণমূলের শাস্তির কোপে পড়লেন তৃণমূল পরিচালিত কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান সুবলকুমার মান্না। কাঁথি সাংগঠনিক জেলার তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে পুরপ্রধানকে শোকজ করার কথা জানানো হয়েছে। এদিকে সুবলকুমার মান্না বলেছেন, বিভাগীয় মন্ত্রী বা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শোকজ না করলে তিনি জেলা নেতৃত্বের শোকজ মানেন না।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, কাঁথি পুরসভার সমস্ত দলীয় কাউন্সিলর পুরপ্রধানের বিপক্ষে। কারণ, উনি সবাইকে নিয়ে ঠিকঠাকভাবে কাজ করছেন না। তা ছাড়া, বিরোধী দলনেতার বাবার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে তিনি তৃণমূল কর্মীদের ভাবাবেগে আঘাত করেছেন।
কাঁথি পুরসভার দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর সুবলকুমার মান্না। গত পুরসভার জয়ের পর তিনি চেয়ারম্যান হন । এই শো-কজের পর পাল্টা তোপ দেগেছেন কাঁথির পুরপ্রধান। তাঁর দাবি, জেলা সভাপতি তাঁকে শোকজ করতে পারেন না। তাঁকে শোকজ করতে হলে বিভাগীয় মন্ত্রী বা তৃণমূল নেত্রীর করতে হবে। সুবলকুমার মান্না বলেন, সৌজন্যের খাতিরেই তিনি স্কুলের অনুষ্ঠানে শিশিরবাবুকে দেখেও অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে নেমে আসেননি। বিজেপির কটাক্ষ, তৃণমূলে সৌজন্য বোধের অভাব রয়েছে। তবে শিশির অধিকারী এই বিষয়ে বলেন, “এটা তৃণমূলের দলীয় ব্যাপার।”
২০২১ সালের ২১ মার্চ, পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় অমিত শাহর সভায় দেখা গেছিল শিশির অধিকারীকে। তারপর থেকেই শিশির অধিকারীর বিরুদ্ধে বারবার তীব্র আক্রমণ এসেছে ঘাসফুল শিবির থেকে। এই মুহূর্তে শুভেন্দু পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। সারাদিন রাজ্যের যে কোনও জায়গায় অনুষ্ঠানে শুভেন্দু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চোর বলে রাজনৈতিক আক্রমণ চালাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে শুভেন্দু অধিকারীর বাবা শিশির অধিকারীর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে ঠিক করেননি সুবলকুমার মান্না, এটাই তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য।
❤ Support Us