- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৪
ভোটে দাপট ইমরান খানের সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের। তবু জোট বেঁধে সরকার গড়ছেন নওয়াজ–ভুট্টো
যখন ক্রিকেট খেলতেন, বাইশ গজে তাঁর দাপট ছিল চোখে পড়ার মতো। ক্রিকেটার হিসেবে নিজেকে অন্য উচ্চতায় তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন। নিজেকে বিশ্বের সেরা অধিনায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। খাদের কিনারায় পড়ে থাকা একটা দলকে বিশ্বসেরা করেছিলেন। নেতৃত্বে থাকাকালীন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড কর্তাদের ওপরও তাঁর দাপট ছিল সীমাহীন। রাজনীতির মঞ্চেও সাফল্য। তাঁর মতো দাপুটে নেতাকে যে সহজে কোণঠাসা করা যাবে না, প্রমাণ করে দিলেন ইমরান খান। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে কারাগারে বন্দী রাখলেও আটকানো যায়নি তাঁর দল তেহরিক–ই–ইনসাফকে (পিটিআই)। দেশের জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে বড় চমক দেখালেন ইমরান খানের সমর্থিত প্রার্থীরা। রাজনৈতিক দমন–পীড়নের মাঝেও সবথেকে বেশি আসন ছিনিয়ে নিয়েছেন পিটিআই সমর্থিক স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
সেনাবাহিনীর আশীর্বাদ নিয়ে এবারের সাধারণ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ)। অনেকেই মনে করেছিলেন, সেনাবাহিনীর সমর্থন থাকায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সহজেই সরকার গঠন করবে নওয়াজ শরিফের দল পিএমএল–এন। কিন্তু তা হচ্ছে না। ভারতীয় সময় শনিবার সকাল ১১ টা পর্যন্ত পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৯৯টি আসনে জয়ী হয়েছে। পিএমএল–এন পেয়েছে ৬৯টি আসন। অন্যদিকে, বিলাওয়াল ভুট্টোর পিপিপি জিতেছে ৫৩টি আসন।
নির্বাচনের সম্পূর্ণ ফলাফল এখনও প্রকাশ হয়নি। তবে কোনও দলই যে এককভাবে সংখ্যা গরিষ্ঠিতা পাবে না, এটা নিশ্চিত। সরকার গড়তে প্রয়োজনীয় আসন পাচ্ছে না, এটা প্রায় নিশ্চিত। এই পরিস্থিতিতে কোনও দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে জোট সরকার গঠন করা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে যো কোনও জাতীয় বিষয়ে সরকার এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে না। বর্তমানে পাকিস্তান নজিরবিহীন অর্থনৈতিক ও সামাজিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সংকট মোকাবিলার জন্য স্থায়ী সরকার প্রয়োজন। কিন্তু সেটা সম্ভব হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে জোট সরকার গড়তে ঐকমত্যে পৌঁছেছে পাকিস্তান মুসলিম লিগ–নওয়াজ (পিএমএল–এন) ও বিলাওয়াল ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)।
বেশি আসনে জিতলেও ইমরান খানের পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তাঁর প্রতি কতটা অনুগত থাকেন কিংবা কতটা দলীয় শৃঙ্খলা মেনে চলেন এখন সেটাই দেখার। জয়ী প্রার্থীদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছেন, যারা দলের পছন্দের মনোনীত প্রার্থীদের প্রত্যাখ্যান করার পরে টিকিট পেয়েছিলেন। নিজেকে জয়ী ঘোষণা করে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ এক বক্তৃতায় বলেছেন, দেশকে পরিচালনা করতে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে হাত মেলাতে প্রস্তুত। অন্যদিকে, পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিও আশা প্রকাশ করেছেন যে, অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থী তাঁর দলে যোগ দেবেন।
এদিকে, কোনও দল সংখাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় জোট সরকার গড়তে ঐকমত্যে পৌঁছেছে পাকিস্তান মুসলিম লিগ–নওয়াজ (পিএমএল–এন) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। পিপিপি–র চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি ও তাঁর বাবা প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির সঙ্গে বৈঠক করেছেন পিএমএল–এনের প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শরিফ। পাকিস্তানের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে তিনি পিপিপি–র শীর্ষ নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। বিলাওয়াল ও আসিফ জারদারির সঙ্গে শাহবাজ শরিফের বৈঠকে জোট বেঁধে কেন্দ্রে ও পাঞ্জাবে সরকার গড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। নির্বাচনের আগে পিএমএল–এনের সাথে জোট সরকার গঠনের কথা উড়িয়ে দিয়েছিলেন বিলাওয়াল ভুট্টো।
❤ Support Us