- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- জানুয়ারি ১১, ২০২৪
রামমন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গররাজি চার শঙ্করাচার্য । বিশ্ব হিন্দুর দুর্গাবাহিনীও ক্ষুব্ধ
রাম মন্দির এখনো সম্পূর্ণ হয়নি, তাই অসম্পূর্ণ মন্দিরে রামলালার মূর্তি প্রতিষ্ঠা শাস্ত্রবিরোধী কাজ। শাস্ত্রের বাইরে গিয়ে সেখানে এখনই রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা হতে পারে না, এমনই অভিযোগ করেছেন দেশের চার শঙ্করাচার্য। আর এই কারণেই চার শঙ্করাচার্য আগামী ২২ জানুয়ারি, অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ না দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। এছাড়াও তাঁদের অভিযোগ, এখন রাম মন্দির ট্রাস্টের প্রধান চম্পত রাই বলছেন, রাম মন্দির রামানন্দ সম্প্রদায়ের, শঙ্করাচার্যদের নয়। চম্পত রাইয়ের এই মনরব্যেও অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রকাশ্যে চম্পত রাইয়ের সমালোচনা করেছেন পুরীর গোবর্ধন মঠের প্রধান।পুরীর গোবর্ধন মঠের প্রধান নিশ্চলানন্দ সরস্বতী আগামী ২২ জানুয়ারী অযোধ্যার রাম মন্দিরে মূর্তির প্রাণ প্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে অস্বীকার করার কয়েকদিনের মধ্যেই উত্তরাখণ্ডের জ্যোতিৰ্মঠের অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী ঘোষণা করেছেন যে দেশের চার বিশিষ্ট ধর্মীয় প্রধান বা শঙ্করচর্যার কেউই আগামী ২২ জানুয়ারী, অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আসবেন না।
all these four shankaracharya have declined to go to Ayodhya and gave the same reasons as Congress did
they are anti hindu too?? pic.twitter.com/6m1DdTAam7
— Amock (@Politics_2022_) January 10, 2024
এদিকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মহিলা শাখা দূর্গা বাহিনী অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধনে তাদের যে ভাবে আমন্ত্রণ করা হয়েছে তাতে সন্তুষ্ট নয়। তাঁদের অভিযোগ, রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে তাঁদের সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য বলা হয়নি। তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে রাম মন্দির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রচারের জন্য কাজ করতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
চারজন শঙ্করাচার্যের এই অনুষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগের কারণ হল অনুষ্ঠানটি “শাস্ত্রের বিরুদ্ধে হচ্ছে। শাস্ত্রমতে যেহেতু মন্দির নির্মাণ এখনো অসম্পূর্ণ, তাই সেখানে মূর্তির প্রাণ প্রতিষ্ঠা হতে পারে না বলে উত্তরাখণ্ডের জ্যোতিৰ্মঠের অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী মঙ্গলবার তাঁর অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে বিষয়টি নিয়ে তাঁর বক্তব্যের একটি ভিডিওতেঅভিযোগ করেছেন।
22 जनवरी के प्रतिष्ठा के पूर्व रामानन्द सम्प्रदाय को मन्दिर सौंपे रामजन्मभूमि तीर्थ क्षेत्र ट्रस्ट –
रामजन्मभूमि तीर्थ क्षेत्र ट्रस्ट के महासचिव चंपतराय जी के इस बयान पर पूज्यपाद ज्योतिष्पीठाधीश्वर जगद्गुरु शंकराचार्य स्वामिश्रीः अविमुक्तेश्वरानंदः सरस्वती ‘१००८’ की प्रतिक्रिया… pic.twitter.com/h0IqLN8wFe
— 1008.Guru (@jyotirmathah) January 9, 2024
শঙ্করাচার্য হলেন চারটি মঠ বা সন্ন্যাসীদের আদেশ প্রদানকারী ধর্মগুরু, যাঁরা হিন্দু ধর্মের অদ্বৈত বেদান্ত ঐতিহ্যের অংশ। অষ্টম শতাব্দীর হিন্দু সাধক আদি শঙ্কর দ্বারা এই অদ্বৈত বেদান্ত ঐতিহ্য প্রতিষ্ঠিত। জ্যোতিৰ্মঠ বা জোশিমঠ এবং গোবর্ধন মঠ ছাড়া অন্য দুটি মঠ হল শৃঙ্গেরি শারদা পীঠম বা শ্রিংগেরি, কর্ণাটক এবং দ্বারকা শারদা পীঠম বা দ্বারকা, গুজরাট।
Modi Ji will inaugurate, touch the idol, and I will applaud there with a resounding victory chant…
– The supreme spiritual leader of Hinduism, the head of Govardhan Math Puri, ‘Shankaracharya’ Swami Shri Nishchalanand Saraswati Ji Maharaj pic.twitter.com/61HPm0HzCM
— Nagaland Youth Congress (@IYCNagaland) January 3, 2024
উল্লেখযোগ্যভাবে, আদি শঙ্করাচার্য এবং তাঁর চিন্তাধারা শৈবধর্ম দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে বলে মনে করা হয়, হিন্দু দেবতা শিবের উপাসনা এবং শাক্তধর্ম, হিন্দু দেবী অর্থাৎ শক্তির উপাসনা যদিও এটি বৈশবধর্মের ধারণাগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করেছে বলে বিশ্বাস করা হয়। হিন্দু দেবতা বিষ্ণু এবং রাম সহ তাঁর বিভিন্ন অবতারের পূজা করে থাকেন এই সম্প্রদায়ের মানুষেরা।
রাম মন্দির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে না যাওয়ার সপক্ষে অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী তাঁর ভিডিও বার্তায় বলেছেন, “না যাওয়ার কারণ কোনো বিদ্বেষ বা ঘৃণা নয়, বরং শঙ্করাচার্যদের কর্তব্য হলো শাস্ত্র-বিধি, শাস্ত্রের আচার-অনুষ্ঠান অনুসরণ করা এবং সেগুলো অনুসরণ করাকে নিশ্চিত করা। আর এখানে শাস্ত্র-বিধি উপেক্ষা করা হচ্ছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হল যখন মন্দিরটি এখনও অসম্পূর্ণ তখন প্রাণ প্রতিষ্ঠা বা মূর্তির পবিত্রকরণ করা হচ্ছে। আমরা যদি এটা বলি, তাহলে আমাদের বলা হচ্ছে আমরা মোদি বিরোধী। এখানে মোদি বিরোধীতার কি আছে ?”
অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতীর এই মন্তব্য করেছেন পুরীর গোবর্ধন মঠের প্রধান নিশ্চলানন্দ সরস্বতী, এই বিষয়ে তাঁর বক্তব্য ঘোষণা করার কয়েকদিন পর। পুরীর গোবর্ধন মঠের প্রধান অনুষ্ঠানটি এড়িয়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে তাঁর অবস্থানের মর্যাদা সম্পর্কে সচেতন থাকার যুক্তিকেই প্রাধান্য দিয়েছেন।
তিনি তাঁর অসন্তোষ গোপন না করে বলেছেন, “আমি সেখানে গিয়ে কি করব ? মোদিজি যখন উদ্বোধন করবেন এবং মূর্তি স্পর্শ করবেন, আমি কি সেখানে দাঁড়িয়ে হাততালি দেব ? আমি পদ চাই না। শঙ্করাচার্যরা কী করবেন সেখানে গিয়ে ? আমি একজনকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে ওখানে কি করব ? যদিও তিনি নরেন্দ্র মোদিকে ধর্মীয় বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য অভিযুক্ত করেছেন, তবে তিনি এটাও স্পষ্ট করেছেন যে তাঁর অযোধ্যার প্রতি কোন বিতৃষ্ণা নেই।”
এদিকে চার শঙ্করাচার্যের রাম মন্দির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে না যাওয়ার বিষয়টি জানার পর বিশ্বহিন্দু পরিষদের আন্তর্জাতিক সহ সভাপতি চম্পত রাই মন্তব্য করেছেন, শঙ্করাচার্যদের আসার প্রয়োজন নেই। মন্দির রামানন্দ সম্প্রদায়ের জায়গা। এই মন্তব্য শোনার পর অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী বলেছেন,”রাম মন্দির যদি রামানন্দ সম্প্রদায়ের হবে তাহলে চম্পত রাই ওখানে কি করছেন ? ওখানে নৃপেন্দ্র মিশ্র কি করছেন ? ওখানে রাজা সাহেব কি করছেন ? ওখানে বিজেপির পাটনার নির্বাচনী প্রার্থী চৌপাল কি করছেন ? তাহলে এই সব মানুষদের সরিয়ে মন্দির রামানন্দ সম্প্রদায়ের হাতে, রামলালার মূর্তি প্রতিষ্ঠার আগেই ছেড়ে দিক। তাহলে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। রাম মন্দির ট্রাস্টের হাত থেকে মন্দিরের দায়িত্ব রামানন্দ সম্প্রদায়ের হাতে দিয়ে দেওয়া হোক। ট্রাস্টের সব পদাধিকারী পদত্যাগ করুন, রামানন্দ সম্প্রদায়ের হাতে সব দায়িত্ব সমর্পণ করুন। তাঁরাই মন্দির প্রতিষ্ঠা করুন, রামলালার মূর্তির প্রাণ প্রতিষ্ঠা করুন। এটা করলে চম্পত রায়কে আমরা স্বাগত জানাবো। আমাদের আপত্তির কারণ, সাধুসন্তদের সরিয়ে মন্দিরে ট্রাস্টের লোকেরা কি করছেন ? যদি মন্দিরটি শঙ্করাচার্যদের নাই হবে তাহলে মামলার সময় তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়নি কেন ? রামানন্দ সম্প্রদায়ের মানুষেরা তখন কোথায় ছিলেন ? সারা দেশের সনাতন সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে শঙ্করাচার্যের কথা বলে ট্রাস্টি তৈরি করে এখন তার শীর্ষে বসে চম্পত রাই এখন বলছেন মন্দির রামানন্দ সম্প্রদায়ের ? এটা অনৈতিক। কোথায় গেল আম্নার মনের উদারতা ? এর জন্য ৫০০ বছরের লড়াই হয়েছে ? না এটা ঠিক নয়, এই মন্দির সবার। নির্মোহী আখড়া ওখানে পূজা করছে দীর্ঘদিন ধরে, তাদের সরিয়ে দিয়েছেন। চম্পত রাই আপনি বড়ো জায়গায় ছোট মন নিয়ে বসেছেন।”
❤ Support Us