Advertisement
  • এই মুহূর্তে দে । শ
  • আগস্ট ২৪, ২০২৩

হিমাচলের কুলুতে ব্যাপক ভূমিধস, বেশ কয়েকটি বাড়ি তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
হিমাচলের কুলুতে ব্যাপক ভূমিধস, বেশ কয়েকটি বাড়ি তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল

হিমাচলের কুলুর আনিতে বৃহস্পতিবার সকালে ভূমিধসের ঘটনায় নিমেষে ভেঙে পড়ল বেশ কয়েকটি বহুতল। সেই ঘটনার ভয়ঙ্কর একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। ওই ভিডিওতে দেখা স্পষ্ট যাচ্ছে, পাহাড়ের গায়ে জনবহুল একটি এলাকা, সেখানে গায়ে গায়ে লাগোয়া প্রচুর বহুতল রয়েছে। আচমকাই সেই বহুতলগুলির মধ্যে কয়েকটি বহুতল আচমকা তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল। এই ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে চার দিকে চিৎকার, চেঁচামেচি আর আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু হয়ে যায়, ভিডিওতে তেমনটাই দেখা গেছে। যদিও স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, বহুতলগুলিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় তিন দিন আগেই বাড়িগুলি খালি করে দেওয়া হয়েছিল। ফলে মৃত্যুর ঘটনা এড়ানো গিয়েছে। কিন্তু যে ভিডিয়োটি প্রকাশ্য এসেছে, সেটা রীতিমতো আতঙ্কের ছবিই তুলে ধরেছে।

প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ১০টা নাগাদ এই ঘটনাটি ঘটেছে। ভেঙে পড়া বহুতলগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্ক ছিল। তবে জুলাই থেকে ভারী বৃষ্টির কারণে এই এলাকায় বিপদ আঁচ করেই বেশ কিছু বাড়ি চিহ্নিত করে তা আগেভাগেই খালি করে দেওয়া হয়েছিল বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানানো হয়েছে। বুধবার এই অঞ্চলে হড়পা বানের জেরে ধস নামায় কুলু-মান্ডি সড়ক পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। প্রচুর গাড়ি এর ফলে রাস্তায় আটকে যায়। ধসের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২১ নম্বর মান্ডি-কুলু জাতীয় সড়ক এবং ১৫৪ নম্বর মান্ডি-পঠানকোট জাতীয় সড়ক। গত কয়েক দিনের বৃষ্টি আর ধসে হিমাচলে ৭০৯টি সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। বহু সড়কে ফাটল ধরেছে। কোনও কোনও সড়ক আবার হড়পা বান আর ধসের ফলে জলে ভেসে গিয়েছে।

জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী বা এনডিআরএফ এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী বা এসডিআরএফ জরুরী ভিত্তিতে ভূমিধসে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার করতে কাজ শুরু করেছে। এদিকে আবহাওয়া দফতর আজ থেকে শুরু করে আগামী দুই দিনের জন্য হিমাচল প্রদেশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের লাল সতর্কতা জারি করেছে।

হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু এক্স -এ লিখেছেন, “আনি, কুলু থেকে অস্বস্তিকর ভিজ্যুয়ালগুলি পাওয়া গেছে, যেখানে একটি বিধ্বংসী ভূমিধসের মধ্যে একটি বিশাল বাণিজ্যিক ভবন ধসে পড়েছে। তবে এই বিপর্যয়ের আভাস পেয়ে প্রশাসন কোনও ঝুঁকি না নিয়ে দু’দিন আগেই সফলভাবে ভবনটি থেকে সবাইকে সরিয়ে নিয়েছিল।”

হিমাচল প্রদেশের সিনিয়র পুলিশ অফিসার সঞ্জয় কুন্ডু জানান, কোনও প্রাণহানির ঘটেনি, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে, ভূমিধসের আগে একটি উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে এখন থেকে মানুষদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

হিমাচল রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, বর্ষার মরসুমের শুরু থেকে অর্থাৎ গত ২৪ জুন থেকে এখনও পর্যন্ত ২৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে হিমাচলে। ৪০ জন নিখোঁজ। শুধু অগস্টেই হিমাচলে মৃত্যু সংখ্যা ১২০। অন্য দিকে উত্তরাখণ্ডে পিন্ডারী নদী এবং সেটির শাখানদী প্রাণমতীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় চামোলি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মৌসম ভবন জানিয়েছে, ২৪ অগস্ট রাজ্যের বেশি কিছু জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, অবিরাম বৃষ্টি আর ধসে বিপর্যস্ত হিমালয়ের দুই রাজ্য হিমাচল প্রদেশ আর উত্তরাখণ্ড। দুই রাজ্যে বুধবার পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। শুধু হিমাচলেই মঙ্গলবার মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। তাঁদের মধ্যে মান্ডি এবং শিমলায় ধসে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে সাত জনের। তিন জনের মৃত্যু হয়েছে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে। ডুবে মৃত্যু হয়েছে আরও দু’জনের। অন্য দিকে উত্তরাখণ্ডের পৌড়ীতে বুধবার এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।

হিমাচলের ১২টি জেলার মধ্যে শিমলা-সহ ছয়টি জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে মৌসম ভবন। শিমলা, কাংড়া, কুলু, মান্ডি, সোলান এবং সিরমুরে আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি আরও বাড়বে বলেই চূড়ান্ত সতর্কবার্তা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। অন্য দিকে, শিমলা, সিরমুর, কাংড়া, চম্বা, মান্ডি, হামিরপুর, সোলান, বিলাসপুর এবং কুলু— এই নয় জেলাতে নতুন করে হড়পা বানের সতর্কবার্তাও জারি করা হয়েছে।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!