Advertisement
  • দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • জানুয়ারি ১১, ২০২৪

দক্ষিণ আফ্রিকা গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েলকে বিশ্ব আদালতে অভিযুক্ত করল

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
দক্ষিণ আফ্রিকা গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েলকে বিশ্ব আদালতে অভিযুক্ত করল

গাজায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগে ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত বা আইসিজে-তে অভিযুক্ত করল দক্ষিণ আফ্রিকা। এই আইনি পদক্ষেপের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তার অবস্থানকে শক্তিশালী করার, আসন্ন নির্বাচনের আগে অভ্যন্তরীণ সমর্থন জোগাড় করার এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি তার ঐতিহাসিক প্রতিশ্রুতি বজায় রাখার একটি প্রচেষ্টা হিসাবে তুলে ধরতে চাইছে।

দক্ষিণ আফ্রিকা আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ এবং অভিজ্ঞ মামলাকারীদের একটি আইনি দলকে এই কাজের জন্য একত্রিত ও নিয়োজিত  করেছে।

আইসিজে-তে ৮৪ পৃষ্ঠার অভিযোগ জমা দিয়ে ইসরায়েলকে গাজায় গণহত্যামূলক কাজের জন্য অভিযুক্ত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। অভিজ্ঞদের এই দলটি গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বন্ধ করার জন্য জরুরি পদক্ষেপের যুক্তি দিয়েছে। প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের নৃশংস হামলার পর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলা জারি রয়েছে। এদিকে ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় কমপক্ষে ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই সাধারণ মানুষ।
কেপ টাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক আইনের অধ্যাপক ক্যাথলিন পাওয়েল এই অভিজ্ঞদের দলটিতে রয়েছেন, তিনি বলেছেন, তাঁরা তাঁরা  আন্তর্জাতিক আইনে পারদর্শী ব্যক্তিদের সাথে এমন লোকদের একত্রিত করেছেন যাঁরা আদালতের সামনে মামলা করার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উপযুক্ত।

ফিলিস্তিনের প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার সমর্থনের শিকড় তার নিজস্ব বর্ণবাদ বিরোধী সংগ্রামের মধ্যে নিহিত। আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস বা এএনসি, দক্ষিণ আফ্রিকার শাসক দলের ফিলিস্তিনিদের সাথে দীর্ঘস্থায়ী সখ্যতা রয়েছে, এটি বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াই এবং ফিলিস্তিনিদের সংগ্রামের মধ্যে সমান্তরাল একটি অবস্থান তৈরি করছে।

নেলসন ম্যান্ডেলা নিজেই দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাধীনতা এবং ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার আন্তঃসম্পর্কের উপর জোর দিয়েছিলেন। ম্যান্ডেলা বলেছিলেন যে দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাধীনতা ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা ছাড়া অসম্পূর্ণ থাকবে।

যদিও ফিলিস্তিনিদের প্রতি এএনসি-এর প্রতিশ্রুতি স্পষ্ট, বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন যে এই মামলায় চোখের দেখা ছাড়া আরও কিছু হতে পারে। এএনসি এখন দুর্নীতির অভিযোগ এবং গার্হস্থ্য সমর্থনে পতনের সম্মুখীন, আইসিজে মামলাটিকে বৈধতা পুনরুদ্ধার এবং ঘরোয়া ঝামেলা থেকে বিভ্রান্ত করার একটি সুযোগ হিসাবে দেখে।

আইসিজে-তে এই মামলাটিকে বৈধতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্ঠান্ত হিসাবে দেখতে চাইছে এএনসি , কারণ এই কাজটি এএনসি-র ক্রমবর্ধমান নীতিহীন শাসনের কারণে গত ৩০ বছরে তারা যে প্রাধান্য ও গুরুত্ব হারিয়েছে তা ফিরে পাওয়ার একটি ভিত্তি হিসাবে মনে করছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার এই পদক্ষেপ দেশের অভ্যন্তরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলেছেন, “আজ ফিলিস্তিনের জনগণের উপর বোমা ফেলা হচ্ছে, তাদের হত্যা করা হচ্ছে। এই অবস্থায় ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের সমর্থন করা আমাদের কর্তব্য।”

এদিকে ইসরায়েল জোরালোভাবে তাদের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে, সরকারের মুখপাত্র আইলন লেভি এই মামলাটিকে অযৌক্তিক বলে খারিজ করে দিয়েছেন।
ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট বলেছেন, দেশের সামরিক বাহিনী অত্যন্ত জটিল পরিস্থিতিতে তাদের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছে এবং এর ফলে যাতে অনিচ্ছাকৃত ভাবে কোন বেসামরিক মানুষের হতাহতের ঘটনা না ঘটে সেই দিকে নজর রাখা হচ্ছে।

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার মামলাটি ব্যাপক আন্তর্জাতিক প্রভাব বহন করে। ব্রিকস-এর সদস্য হিসাবে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চিন  এবং দক্ষিণ আফ্রিকার এই গোষ্ঠীটি পশ্চিমা-আধিপত্যশীল আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার প্রতি ভারসাম্য হিসাবে কাজ করে।
তবে এই মামলাটির ফলে ইসরায়েলের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, যেমন ভারতের মতো দেশগুলির সাথে কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের ঝুঁকিও থাকছে।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!