Advertisement
  • দে । শ
  • অক্টোবর ১৮, ২০২৫

অভিষেক-মমতার সঙ্গে সাক্ষাতের পরই বড়ো দায়িত্বে শোভন চট্টোপাধ্যায়, বললেন— “সাধ্যমতো দায়িত্ব পালন করব”

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
অভিষেক-মমতার সঙ্গে সাক্ষাতের পরই বড়ো দায়িত্বে শোভন চট্টোপাধ্যায়, বললেন— “সাধ্যমতো দায়িত্ব পালন করব”

দীর্ঘ বিরতির পর ফের তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে এলেন প্রাক্তন কলকাতা মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং প্রত্যাবর্তনের পরই বড় দায়িত্ব— তাঁকে নিয়োগ করা হয়েছে নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এনকেডিএ)-র চেয়ারম্যান পদে। এই পদে তিনি প্রাক্তন মুখ্যসচিব ও মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।

শোভনের এই নিয়োগের ঘোষণাটি আসে ঠিক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে টানা বৈঠকের পরপরই। দার্জিলিংয়ে অবস্থানরত মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৃহস্পতিবার তাঁর দীর্ঘ বৈঠক হয়। তার আগে, ২৫ সেপ্টেম্বর কলকাতায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও দেখা করেছিলেন শোভন। বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে, তা নিয়ে দলীয় মহলে কেউ মুখ খোলেননি। শুক্রবারই সরকারিভাবে তাঁকে এনকেডিএ-র চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।

পদে নিয়োগের পর শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “যে দায়িত্ব আমার ওপর অর্পিত হয়েছে, তা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। নিউ টাউন এক নবীন শহর, আর কলকাতা ছিল এক ঐতিহ্যবাহী পুরনো শহর। মেয়র হিসেবে আমার পূর্ব অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করব এই নতুন দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনে।”

তৃণমূলের শুরুর দিনগুলোতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। ২০১০ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত কলকাতা মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। কিন্তু ২০১৮ সালের নভেম্বরে নেতৃত্বের সঙ্গে মতভেদ তৈরি হলে তিনি দল ছাড়েন এবং মন্ত্রী, মেয়র ও দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দেন।

এরপর তিনি তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দেন এবং ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। যদিও বিজেপিতে তাঁর অবস্থান ছিল ক্ষণস্থায়ী। পরে তিনি প্রকাশ্যে স্বীকার করেন, বিজেপিতে যোগ দেওয়া ছিল তাঁর জীবনের এক “ভুল সিদ্ধান্ত”।

তাঁর তৃণমূলে ফেরার জল্পনা বেশ কিছুদিন ধরেই চলছিল। অবশেষে মুখ্যমন্ত্রী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের পর সেই সম্ভাবনা বাস্তবে রূপ পেল।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই নিয়োগ শোভন চট্টোপাধ্যায়ের তৃণমূলে আনুষ্ঠানিক প্রত্যাবর্তনের “একটি নরম সূচনা”। আসন্ন রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাঁকে প্রশাসনিক পদে আনা তাৎপর্যপূর্ণ।

তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “এটা স্পষ্ট বার্তা যে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে আবার মূল ধারায় আনা হচ্ছে। প্রশাসন, নগর পরিকল্পনা ও শাসনব্যবস্থায় তাঁর অভিজ্ঞতা দলের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান হবে।”

শোভন চট্টোপাধ্যায় একসময় তৃণমূলের অন্যতম প্রভাবশালী মুখ ছিলেন এবং মুখ্যমন্ত্রীর সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সহচর হিসেবে পরিচিত। তাঁর ইস্তফার পর কলকাতার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন ফিরহাদ হাকিম।

এখন, এনকেডিএ-র চেয়ারম্যান হিসেবে নতুন দায়িত্বে শোভনের প্রত্যাবর্তন তৃণমূলের অভ্যন্তরে এক নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!