- প্রচ্ছদ রচনা
- ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২২
‘দয়া করে জাতীয় স্তরে বিষয়টিকে ছড়াবেন না। সময় মতো হস্তক্ষেপ করা হবে’, হিজাব বিতর্কে সুপ্রিম কোর্ট ।

বৃহস্পতিবারই কর্নাটকের হিজাব বিতর্ক মামলাটি বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠানো হয়। এরপরই কর্নাটকে ছাত্র সংগঠনের তরফে এই মামলার জরুরি শুনানির আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করা হয়। কিন্তু এদিন শীর্ষ আদালতের তরফে এই আর্জি খারিজ করে দেওয়া হয় এবং জানানো হয় যে, সঠিক সময়েই আদালতের তরফে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা হবে।ওই ছাত্রীর পিটিশন খারিজ করে দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘দয়া করে জাতীয় স্তরে এই বিষয়গুলিকে ছড়িয়ে দেবেন না। সঠিক সময় এলেই, আমরা হস্তক্ষেপ করব।’
কর্নাটকের স্কুল-কলেজে হিজাব পরা মুসলিম মেয়েদের ঢুকতে না দেওয়াকে কেন্দ্র করে যে বিতর্ক শুরু হয়েছিল, তা বর্তমানে রাজ্যের সীমানা পার করে বাকি জায়গাতেও ছড়িয়ে পড়ছে। বিষয়টি আদালত অবধিও গড়িয়েছে। গতকালই কর্নাটক হাইকোর্টের তরফে পড়ুয়াদের অনুরোধ করা হয় যে, স্কুল-কলেজে হিজাব পরার মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া অবধি তারা যেন কোনও ধরনের ধর্মীয় পোশাক পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না যান। এরপরই কর্নাটকের এক ছাত্রী সুপ্রিম কোর্টে জরুরিভিত্তিতে শুনানির আবেদন জানান। অআদালতের সবাল-জবাবের সময় পড়ুয়াদের আইনজীবী বলেছেন, ১০ বছর ধরে হিজাব পরে আসছেন ছাত্রীরা। জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, দয়া করে এটাকে আরও বৃহত্তর স্তরে ছড়িয়ে দেবেন না। আমরা জানি কী হচ্ছে। আপনারাই ভাবুন, এই ধরনের বিষয়কে কি দিল্লিতে টেনে আনা উচিত? যদি কোনও অনুচিত বিষয় হয়, তবে আমরা সুরক্ষা দেব….’।
সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিলকারী ওই ছাত্রীর দাবি, কর্নাটক হাইকোর্টের তরফে মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ধর্মীয় পোশাক পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না যাওয়ার যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা স্বাধীনতার মৌলিক অধিকারকেই খর্ব করছে। সংবিধানের ২৫(১) ধারায় মুসলিম সম্প্রদায়ের উপরও বিশেষ প্রভাব ফেলবে এই নির্দেশ। ধর্মীয় পোশাকের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করায় মুসলিম সম্প্রদায় ছাড়া অন্য কোনও ধর্মীয় সম্প্রদায় প্রভাবিত হবে না। সমাজে বিনা প্রয়োজনে বিভেদর সৃষ্টি করবে এই নির্দেশ।
পড়ুয়ার আর্জি, আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রাক্টিক্যাল পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এই সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশে বাধা দেওয়া হলে, তার সরাসরি প্রভাব পড়াশোনাতেও পড়বে। তাঁর দাবি, হিজাব পরা মতামত প্রকাশের মৌলিক অধিকারেরই অন্তর্গত। কর্নাটক হাইকোর্টের এই নির্দেশ সংবিধানের মৌলিক অধিকারকেই খর্ব করছে।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে কর্নাটকের উদুপিতে হিজাব পরিহিত ৫ ছাত্রীকে কলেজে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। এরপর কর্নাটকের একাধিক স্কুলে একই ঘটনা ঘটে। সরকারি কলেজেও হিজাব পরে প্রবেশ করার ক্ষেত্রে বাধা দেওয়া হয়। ওই ৫ ছাত্রী আদালতের দ্বারস্থ হতেই বিতর্ক আরও বাড়তে থাকে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরার প্রতিবাদে একদল পড়ুয়া গেরুয়া শাল পরেও বিক্ষোভ দেখায়।
হিজাব নিয়ে বিতর্ক বাড়তে থাকায় চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবারই কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই তিনদিনের জন্য রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। গতকাল কর্নাটক হাইকোর্টের তরফে আপাতত ধর্মীয় পোশাক না পরার নির্দেশ দেয়। আগামী সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।
❤ Support Us