- প্রচ্ছদ রচনা
- মার্চ ২৮, ২০২২
ছিঁড়ল জামা, ফাটল নাক, ভাঙল চশমাও । তৃণমূল-বিজেপির হাতাহাতিতে রক্তাক্ত বিধানসভা !
আজকে মূলত রুটিন বিক্ষোভ ছেড়ে বিধানসভার অন্দরে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন শাসক-বিরোধীরা।

রামপুরহাট হত্যাকাণ্ডের ইস্যুতে বিজেপি বিধায়কদের বিক্ষোভে উত্তাল বিধানসভা। মহিলা নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি গেরুয়া শিবিরের বিধায়কদের। দুপক্ষের ধস্তাধস্তি, জামা ছেঁড়া, ঘুষি মারার ঘটনাও সামনে এল । ধস্তাধস্তিতে মাটিতে পড়ে যান বিধায়কও। ঝরল রক্তও। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছাল যে ডাকতে হল অ্যাম্বুলেন্স । গোটা পরিস্থিতির ভৎর্সনা স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সোমবার নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী থাকল বিধানসভা।
সোমবার বিধানসভা শুরু হতেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা অবনতি প্রসঙ্গে আলোচনা চেয়ে স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান। বিজেপি বগটুই ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেছেন গত কয়েকদিন ধরে। তবে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, যে তাঁরা আইনগত দিক থেকে আলোচনা চাননি। বরং বিধানসভার কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে তাতে। ফলে সম্ভব নয়, এই নিয়ে আলোচনা। এরপর ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা। সমালোচনা করেন তৃণমূল বিধায়করা। সেসময় মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বিষয়টি থামানোর চেষ্টা করেন। তখনই দুপক্ষের বিধায়কদের মধ্যে রীতিমতো মারামারি শুরু হয়ে যায়।
বিধায়ক নরহরি মাহাতো ধস্তাধস্তির সময় মাটিতে পড়ে যান। বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিজ্ঞার সঙ্গে ব্যাপক ধস্তাধস্তি হয়। চশমা ভেঙে যায় এক বিধায়কের। চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের নাক ফেটে গিয়েছে। ধস্তাধস্তির মাঝে পড়েন ফিরহাদও। এমনকি মহিলা নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গেও ব্যাপক ধস্তাধস্তি হয় বিজেপি বিধায়কদের। এরপর তাঁরা অধিবেশন কক্ষ থেকে বেরিয়ে এসে বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। স্লোগানের আওয়াজে মুখরিত হতে থাকে চারপাশ।
বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিজ্ঞা বলেছেন, ‘তাঁর জামা ছিঁড়ে গেছে। তাঁকে ঘুষি মারা হয়েছে । জোর করে কেই তাঁর হাতে কামড় দেওয়ার চেষ্টা করেন । তিনি আরও বলেছেন, আমরা বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতি চেয়েছিলাম। তখনই তৃণমূল বিধায়করা আমাদের ওপর হামলা করেন। স্পিকারের সামনেই সব হয়েছে। তিনি কিচ্ছু বলেননি।’
আজকে মূলত রুটিন বিক্ষোভ ছেড়ে বিধানসভার অন্দরে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন শাসক-বিরোধীরা। হাতাহাতিও শুরু হয় তাঁদের মধ্যে। ধস্তাধস্তি, জামা ছেঁড়া থেকে ঘুষি মারা, রক্তপাত! এক নজিরবিহীন ঘটনা ঘটল বিধানসভায়।
ঠিক কী থেকে সমস্যার সূত্রপাত? বগটুই ইস্যুতে এদিনের অধিবেশনের শুরুতেই বিজেপি বিধায়করা প্ল্যাকার্ড হাতে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে একটি নিরাপত্তারক্ষীদের বেষ্টনী তৈরি করা হয়। এই বেষ্টনীর অগ্রভাগে ছিলেন মহিলারা। এরপরই দেখা যায়, বিজেপির মহিলা বিধায়করা ওই সমস্ত মহিলা নিরাপত্তারক্ষীদের বেষ্টনী ভাঙতে তৎপর হন। তাতেই শুরু হয় কার্যত ধস্তাধস্তি।
জানা গেছে বিধানসভায় একটি অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছছে। অ্যাম্বুলেন্সে করে দ্রুত নির্মল মাজি আর অসুস্থ হয়ে পড়া তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘আমরা প্রতিদিনই বলছি রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা চাই। আজও হাউজ় শুরুর আগে অধ্যক্ষ আমাকে অনুমতি দিয়েছিলেন। রামপুরহাটের ঘটনার পরই মাটিয়াতে বাচ্চা মেয়ের ধর্ষণ হয়েছে। এই নিয়ে আলোচনা হোক। অধ্যক্ষ কোনও কথাই শুনছেন না।’
❤ Support Us