- দে । শ
- জুলাই ৮, ২০২২
আজ জ্যোতি বসুর ১০৯ জন্মদিন

৮ জুলাই । পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর ১০৯ তম জন্মদিন আজ । কিংবদন্তি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, একটানা ২৩ বছর মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। স্বাধীনতার পর কেটে গিয়েছে সাড়ে ৭ দশকেরও বেশি সময়। কিন্তু এখনও কোনও বাঙালিকে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার বসতে দেখেনি ভারত। একবারই মাত্র তৈরি হয়েছিল সেই সুযোগ। ন’য়ের দশকে প্রধানমন্ত্রীত্বের খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছিল এক বাঙালি রাজনীতিবিদ। কিন্তু কমিউনিস্ট পার্টির মতাদর্শগত জটিলতায় প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি জ্যোতি বসু৷ দশকের পর দশক শরিকদের নিয়ে চালিয়েছেন বামফ্রন্ট সরকার। বস্তুত কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে সংসদীয় ব্যবস্থায় এত বছরের সরকার চালানোর নজির বিশ্বে কোথাও নেই।
জ্যোতি বসুর শাসনকালে যেমন পঞ্চায়েত ব্যবস্থার শক্তিবৃদ্ধি, ভূমি সংস্কারের মতো সামাজিক-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে মোড় বদলে দেওয়া কাজ হয়েছে, তেমনই প্রায় আড়াই দশকের এই কালপর্ব জন্ম দিয়েছে অসংখ্য বিতর্কের। কিন্তু জ্যোতি বসু তো কেবল একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন না, আলো-অন্ধকার মিলিয়ে তিনি হয়ে উঠেছিলেন বঙ্গরাজনীতির মহীরুহ।
CPI(M) Remembers Comrade Jyoti Basu on His Birth Anniversary
Com. Jyoti Basu was a great leader of the CPI(M), the Left movement and India. Seventy years of public life and political activity marked him out as the most distinguished Left leader of the country. pic.twitter.com/q91e72bifk
— CPI (M) (@cpimspeak) July 8, 2022
কমরেড জ্যোতি বসুকে তাঁর জন্মবার্ষিকীতে স্মরণ করে পার্টি টুইটারে লিখেছে, 'জ্যোতি বসু সিপিআই (এম), বাম আন্দোলন এবং ভারতের একজন মহান নেতা ছিলেন। সত্তর বছরের জীবন ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড তাঁকে দেশের সবচেয়ে বিশিষ্ট বাম নেতা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।' তাঁর জন্মদিন উপলক্ষ্যে ভারত বাংলাদেশ যৌথভাবে ‘জ্যোতি বসু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। এই সভায় বক্তব্য রাখবেন বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, বাংলাদেশের সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন ও বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাংবাদিক আবেদ খান।
জ্যোতি বসুর রাজনৈতিক জীবন প্রায় সাত দশকের৷ এই শতকের প্রথমে মুখ্যমন্ত্রীত্ব থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। ২০০৮ পর্যন্ত ছিলেন সিপিআই(এম) দলের পলিটব্যুরোর সদস্য। গত ১২ বছর তিনি নেই৷ কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী জাতীয় তথা বঙ্গ রাজনীতির আলোচনা তাঁকে বাদ দিয়ে অসম্ভব।
২০১০ সালে জ্যোতি বসুর মৃত্যুর পর তাঁর স্মৃতি ও কর্মকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সল্টলেকের নিউটাউনে জ্যোতি বসু সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড স্টাডিজ নামে একটি কেন্দ্র গড়ার উদ্যোগ নেয় তৎকালীন বাম ফ্রন্ট সরকার। বাম ফ্রন্টের শেষ জমানায় সল্টলেকের নিউটাউনের নাম পরিবর্তন করে জ্যোতি বসু নগর করা হয়। কিন্তু ২০১১ সালে বাম ফ্রন্টের ৩৪ বছরের শাসনের অবসান ঘটিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় এলে বাদ হয়ে যায় বাম ফ্রন্টের জ্যোতি বসু নগর গড়ার স্বপ্ন। স্বপ্নের জ্যোতি বসু নগর ফিরে যায় নিউটাউনে।
২০১৯ সালে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী, জ্যোতি বসু গবেষণাকেন্দ্রের অন্যতম কর্ণধার রবীন দেব ও অশোক ভট্টাচার্য দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে। তাঁদের কাছ থেকে সব কথা শুনে সিপিএমের জমি ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন মমতা। ওই বছরের আগস্ট মাসে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে পাঁচ একর জমি জ্যোতি বসু গবেষণাকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর রাজ্যের পৌরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম পাঁচ একর জমির রিঅ্যালটমেন্ট লেটার ইস্যু করেন।গত বছর জ্যোতি বসুর জন্মদিনের আগে এই জমি তুলে দেওয়া হয় সিপিএমের হাতে। সিপিএম ওই জমির অধিকার পেয়ে সেই জমির সামনে লাগিয়ে দেয় সাইনবোর্ড।
জমির একাংশের মধ্যে বৃক্ষ রোপণও করে।পরিকল্পনা ছিল ‘গ্রিন ওয়াল’ তৈরির। কিন্ত বছর ঘুরতে না ঘুরতেই, কপূরের মতো উবে গিয়েছে সমস্ত চারাগাছ! বসুকে স্মরণ করে সিপিএম নেতাদের পোঁতা একটি চারাগাছেরও হদিশ নেই। সব ভ্যানিশ। হয় চুরি হয়েছে, নতুবা সেগুলি গরুর খাদ্যে পরিণত হয়েছে । তাই এই বছর জ্যোতি বাবুর জন্মদিন পালনে আলিমুদ্দিনের নেতারা ১০০০ চারা গাছ বিতরণ করবেন । পাশাপাশি গ্রিন ওয়ালের পরিবর্তে জমির চারপাশে ইটের পাঁচিল তোলা হবে।
❤ Support Us