Advertisement
  • দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • মার্চ ২৮, ২০২৫

অক্সফোর্ডে মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ, ছাত্রদের প্রশ্নেবাণে যুক্তি পেশ। সমালোচনায় বাম-বাম-বিজেপি

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
অক্সফোর্ডে মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ, ছাত্রদের প্রশ্নেবাণে যুক্তি পেশ। সমালোচনায় বাম-বাম-বিজেপি

বৃহস্পতিবার অক্সফোর্ডে নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে বক্তৃতা দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্যের মাঝেই পোস্টার উঁচিয়ে বিক্ষোভ দেখাল এসএফআই-এর ব্রিটেন শাখার সদস্যরা। উঠল ‘গো ব্যাক’ স্লোগান, ধেয়ে এল সিঙ্গুর থেকে আরজিকরের সম্বন্ধে প্রশ্নবাণ। যুক্তি পেশ করে জবাব দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার লন্ডনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেলোগ কলেজে বক্তৃতা দেওয়ার সময় একদল প্রতিবাদী ছাত্রদের বিক্ষোভের সামনে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি ‘পশ্চিমবঙ্গে সামাজিক উন্নয়নে নারী ও শিশুদের ক্ষমতায়ন বিষয়ে ভাষণ দিচ্ছিলেন। তাঁর বক্তব্যের মাঝেই পোস্টার উঁচিয়ে বিক্ষোভ দেখাল এসএফআই-এর ব্রিটেন শাখার সদস্যরা। ধেয়ে এল সিঙ্গুর থেকে আরজিকরের সম্বন্ধে প্রশ্নবাণ। তাদের উদ্দেশ্য মমতা বলেন, ‘আপনাদের সকলকে আমি ভালোবাসি। আপনারা বাংলায় আপনাদের পার্টিকে আরো মজবুত করুন। আমার সঙ্গে তারা লড়তে পারে!’

এদিন ছাত্ররা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে আগস্ট ২০২৪-এর আরজি কর তরুণী চিকিৎসকের যৌন নির্যাতন করে খুনের ঘটনায় রাজ্য সরকারের ভূমিকা, হিন্দুদের সম্পর্কে মমতার মতামত, টাটার পশ্চিমবঙ্গ থেকে চলে যাওয়া সহ একাধিক বিষয়ে প্রশ্ন করেন। প্রথম দিকে শান্ত থাকলেও ক্রমশ পড়ুয়াদের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন মমতা, পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। প্রশ্নের উত্তরে মমতা বলেন, ‘এটা ভুল তথ্য। ইতিমধ্যেই টাটা কগনিজ্যান্ট শুরু হয়েছে। আমি মিথ্যা বলছি না, আমার ভাই দয়া করে আমার কথা শুনুন, টাটা গত বছর খড়গপুরে তাদের শিল্প স্থাপন করেছে।’ আরজি করের ঘটনা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘একটু জোরে বলুন, আমি শুনতে পাচ্ছি না। আমি সবকিছু শুনব। ওই কেস এখন মুলতুবি রয়েছে সেটা কি আপনারা জানেন? ওই কেস এখন তদন্তাধীন অবস্থায় রয়েছে, তদন্তের দায়িত্ব এখন কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে, আমাদের হাতে নেই।’

এরপরেও বামছাত্র সংগঠনের পড়ুয়ারা বিক্ষোভ অব্যাহত রাখলে, মমতা বলেন, ‘এখানে রাজনীতি করবেন না, এটা রাজনীতি করার প্ল্যাটফর্ম নয়। আপনি তা আমার রাজ্যে আমার সাথে করতে পারেন, এখানে নয়। এতে আপনারা আপনাদের বিশ্ববিদ্যায়কে অপমান করছেন। আমি এখানে দেশের প্রতিনিধি হিসেবে এসেছি। আপনার দেশকে অপমান করবেন না।’ প্রতিবাদকারীরা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার প্রসঙ্গও তোলেন, যার জবাবে মমতা তাঁদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে রাজনীতি করবার বদলে, বাংলায় নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানোর পরামর্শ দেন। একপর্যায়ে তিনি, ১৯৯০ সালের প্রথম একটি পুরনো ছবি তুলে ধরেন, যেখানে তার মাথায় ব্যান্ডেজ পরা অবস্থায়। তিনি দাবি করেন, এ ছবিই প্রমাণ যে বিরোধী থাকবার সময়ে তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘যদি আমি মারা যাই, আমার মৃত্যুর আগে আমি একতা দেখতে চাই। একতা আমাদের শক্তি আর বিভাজন আমাদের পতন। এটা স্বামী বিবেকানন্দের বিশ্বাস। একতা বজায় রাখা খুব কঠিন। মানুষকে বিভক্ত করতে সময় লাগে মাত্র একটি মুহূর্ত। আপনারা কি মনে করেন, এমন বিভেদী মনোভাব নিয়ে পৃথিবী টিকিয়ে রাখা যাবে?’ তিনি আরো বলেন, আমি যখন যখন বাংলার প্রশাসনিক দায়িত্বের চেয়ারে বসে আছি, আমি সমাজকে বিভক্ত করতে পারি না। আমি দুর্বল আর গরীব মানুষদের পাশে থাকি সবসময়। আমাদের সবাইকে তাঁদের জীবনের মানোয়ন্নের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। সব ধর্ম, জাতি আর সম্প্রদা য় নির্বিশেষে সবার জন্য কাজ করতে হবে। বাংলাকে এগিয়ে যেতে হবে।

ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন, মুখ্যমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়ন আর বিনিয়োগের সুযোগ নিয়ে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। এক দর্শক মুখ্যমন্ত্রীকে বিনিয়োগ সংক্রান্ত প্রশ্ন করেন। মমতা ব্যানার্জি সে প্রশ্নের উত্তর দেবার চেষ্টা করলে, অন্য আরেক দর্শক পাল্টা প্রশ্ন করেন। ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী দর্শকদের থামতে বলে মন্তব্য করেন, ‘এটি প্রেস কোনো কনফারেন্স নয়।’ অনুষ্ঠানের পর সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস শোস্যাল মিডিয়ার একটি পোস্টে লিখেছে, ‘আমরা মানুষের কণ্ঠস্বর উত্থাপন করি, দমন-নিপীড়ন করি না।’ এসএফআই-এর ব্রিটেন শাখা পাল্টা পোস্টে বলেছে, ‘ অক্সফোর্ডে গিয়ে মিথ্যাভাষণ দেবেন, আর আমরা চুপ করে শুনবো? আমরা খোলামনে তাঁকে পশ্চিমবঙ্গ সম্পর্কে তাঁর উন্নয়নের দাবীকে প্রশ্ন করেছিলাম, প্রমাণ চেয়েছিলাম।’ তাঁরা আরো লিখেছেন, ‘আমরা তাকে আরজি কর কেসে ভিকটিম-ব্লেমিং আর অবহেলার বিষয়ে প্রশ্ন করেছি। ছাত্র ও গণতান্ত্রিক অধিকারের পক্ষে, এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সওয়াল করেছিলেন, তাঁকে আমরা প্রশ্ন করেছিলাম, তাহলে এত বছর ধরে বাংলার কলেক বিশ্ববিদ্যালয়য়গুলিতে ছাত্র নির্বাচন হয় নি? কেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা গণতন্ত্রের অধিকারে দাবি তুললে, তাঁদের উপর আক্রমণ করা হচ্ছে? উনি বলছেন বাংলায় মহিলা ক্ষমতায়নের সুবর্ণকাল চলছে, তাহলে কেন গত বছরে মহিলা স্কুল ড্রপআউটের হার ১৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে? কেন এই যুগে দাঁড়িয়েও রাজ্যে বাল্য বিবাহের ঘটনা এত বেশি?’ এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই বলে উনি বিষয়টিকে অন্যদিকে নিয়ে যাবার চেষ্টা করলেন। শুধু তাঁকে নয়, কেলোগ কলেজ কর্তৃপক্ষকেও ছাত্র ফেডারেশনের সদস্যরা প্রশ্ন করেছেন, ‘কেন তাঁর একজন ‘ধর্ষণ সমর্থক’-কে মঞ্চে দাঁড়াতে দিয়েছে। কেলোগ কলেজের প্রেসিডেন্ট দাবি করেন একটি বিপ্লবী প্রতিষ্ঠান। বিপ্লবী আদর্শ কী, সহিংসা পরিচালনা করা এমন একজন গণতান্ত্রিক-পন্থী নেতাকে সমর্থন করতে পারে?’

এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ লিখেছেন, ‘সিপিএমের যে দু-চার পিস অক্সফোর্ডে বাঁদরামি করল, এরা দেশ, বাংলার সম্মান ভাবে না। তাদের আমলে কী হয়েছিল, ভুলে গিয়েছে। সব ঘটনা মনে করাতে হবে সারা বাংলায়। আজ সকলের বাধায় লেজ তুলে পালিয়েছে। বক্তৃতায় বাধা কেন? প্রশ্ন করো প্রশ্নোত্তর পর্বে। তা নয়, বাঁদরামি এদের সংস্কৃতি। এদের পরিকল্পিত অসভ্যতার খবর আগেই পেয়ে কদিন আগে পোস্ট করেছিলাম। এদের চিহ্নিত করে অনেকে কলকাতা কানেকশন পোস্ট করছেন। ভালো করছেন। রবীন্দ্রসঙ্গীত এরা বোঝে না। ডিজে শুনতে চাইছে।’ বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালভিয়া, এই ঘটনার একটি ভিডিও পোস্ট করে লিখেছেন, ‘বিদেশেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে। এটা প্রমাণ করে হিন্দু বাঙালি প্রবাসীরা তাকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায় না। তিনি বাংলার ঐতিহ্য ধ্বংস করেছেন।’


  • Tags:
❤ Support Us
গুম গ | ল্প রোব-e-বর্ণ
ধারাবাহিক: একদিন প্রতিদিন । পর্ব ৫ পা | র্স | পে | ক্টি | ভ রোব-e-বর্ণ
পথ ভুবনের দিনলিপি । পর্ব এক ধা | রা | বা | হি | ক রোব-e-বর্ণ
error: Content is protected !!