Advertisement
  • এই মুহূর্তে বি। দে । শ
  • মে ৩, ২০২৫

নিকারাগুয়ার নির্বাসিত সংবাদপত্র ‘লা প্রেনসা’-কে ইউনেস্কোর বিশেষ সম্মান

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
নিকারাগুয়ার নির্বাসিত সংবাদপত্র ‘লা প্রেনসা’-কে ইউনেস্কোর বিশেষ সম্মান

নিকারাগুয়ার অন্যতম পুরনো সংবাদপত্র ‘লা প্রেনসা’কে ইউনেস্কো ‘গুলিয়েলমো’– বিশ্ব প্রেস স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করেছে। ‘লা প্রেনসা’ প্রায় ১০০ বছর ধরে প্রিন্ট সংস্করণ প্রকাশের পর বর্তমানে কেবল অনলাইন সংস্করণ প্রকাশ করছে।

জাতিসংঘের সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো, শনিবার নিকারাগুয়ার প্রাচীনতম পত্রিকা ‘লা প্রেনসা’-কে ইউনেস্কো ‘গুলিয়েলমো’– বিশ্ব প্রেস স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করেছে। লা প্রেনসা প্রায় ১০০ বছর ধরে প্রিন্ট সংস্করণ প্রকাশের পর, প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল ওর্তেগার কর্তৃত্ব আরো কড়া হওয়ায় এই পত্রিকার কর্মীরা বিদেশে বসে প্রকাশনা চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে প্রেনসা কেবল অনলাইন সংস্করণ প্রকাশ করছে।

২০২১ সালে নিকারাগুয়ার পুলিশ এই পত্রিকা অফিসে হানা দিয়ে প্রধান ব্যবস্থাপক হুয়ান লোরেঞ্জো হোলমান চামোরোকে গ্রেপ্তার করে। নিকারাগুয়ান আদালত ২০২২ সালে হোলমানকে ৯ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে। ২০২৩ সালে তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসন দেওয়া হয়। পুরস্কার ঘোষণার পর, ইউনেস্কো/গিলের্মো কানো বিশ্ব প্রেস স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২৫-এর বিচারক প্যানেলের সভাপতি ইয়াসুওমি সাওয়া বলেন, ‘লা প্রেনসা’ অত্যন্ত সাহসিকতার আর নির্ভিকতার সঙ্গে সত্য প্রকাশের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। নিকারাগুয়ার অন্যান্য নাগরিক সমাজ সংগঠনের মতো ‘লা প্রেনসা’-ও চরম দমন-পীড়নের মুখোমুখি হয়েছে। তা সত্ত্বেও, নির্বাসিত অবস্থাতেও এই পত্রিকা সংবাদপত্রের স্বাধীনতার আলো জ্বালিয়ে রেখেছে।’

নিকারাগুয়ায় ১৯৮৫ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত, ওর্তেগা প্রেসিডেন্ট হিসাবে ক্ষমতা দখল করেন। ২০০৭ সালে তিনি পুনরায় ক্ষমতায় ফিরে আসেন। মসনদে বসবার পরেই শত শত বিরোধীকে কারাবন্দি করেছেন তিনি। ২০১৮ সালে দেশজুড়ে গণবিক্ষোভের আবহ তৈরি হয়। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৩০০-র বেশি মানুষ সে সময়ে নিহত হন। বহু আন্দোলনকারীকে আটক করা হয়, ৫,০০০-র বেশি বেসরকারি সংস্থাকে বন্ধ করে দেয় ওর্তেগো সরকার। ২০২১ সালে চতুর্থ দফায় পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে, নিকারাগুয়ায় স্বাধীন সংবাদমাধ্যমের উপর সেন্সরশিপ, ভয়ভীতি ও হুমকি দেখানো হয় বলে অভিযোগ জানিয়েছে মিডিয়া অধিকার সংগঠন ‘রিপোটার্স উইথআউট বর্ডার’। বর্তমানে দেশটির বেশিরভাগ স্বাধীন ও বিরোধী সংবাদমাধ্যম বিদেশ থেকে পরিচালিত হচ্ছে।

যদিও, ‘লা প্রেনসা – এল ডায়ারিও দে লস নিকারাগুয়েন্সেস’ বা ‘নিকারাগুয়া জনগণের দৈনিক’ ১৯২৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই একের পর এক সমস্যা ও হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। ১৯৫০-এর দশকে দক্ষিণপন্থী স্বৈরশাসক আনাস্তাসিও সোমোজা এটিকে বন্ধ করার চেষ্টা করেন। ১৯৮০-এর দশকে বামপন্থী সান্দিনিস্তা জাতীয় মুক্তি ফ্রন্টও এই সংবাদপত্রকে নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছিল। ইউনেস্কো। জানিয়েছে, ‘প্রায় এক শতাব্দীর দীর্ঘ সময়কালে, ‘লা প্রেনসা’ ও তার সাংবাদিকেরা বারবার দমন-পীড়নের শিকার হয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে যা চরমে উঠেছে। ২০২১ সাল থেকে সংবাদপত্রের সম্পাদকের কারাদণ্ড ও নির্বাসন, প্রতিষ্ঠানের সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হওয়ার পরেও ‘লা প্রেনসা’ নিকারাগুয়ার জনগণকে অনলাইনে তথ্য দিয়ে যাচ্ছে। পত্রিকার বেশিরভাগ কর্মী এখন নির্বাসনে, কোস্টারিকা, স্পেন, মেক্সিকো, জার্মানি আর যুক্তরাষ্ট্রে বসে তাঁরা নিজেদের কাজ করছেন।’

‘লা প্রেনসা’-র সম্পাদক হোলমান এই পুরস্কার ‘নিকারাগুয়ায় সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার লড়াইয়ে শক্তিশালী স্বীকৃতি’ বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর মতে, ‘নিকারাগুয়ায় এই মূহূর্তে স্বাধীন সাংবাদিকতা আর নেই। স্বৈরাচারী সরকার সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে, অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।’ নির্ভিক সাংবাদিকতা চালিয়ে যাওয়ার জন্য গভীর দায়বদ্ধতা আর সাহসের দরকার বলে মনে করেন নির্বাসিত সম্পাদক। তিনি ইউনেস্কোর সম্মাকে সকল স্বাধীন সাংবাদিকদের, যারা এখনো নিকারাগুয়ার বাইরে থেকে সংবাদ পরিবেশন করে চলেছেন, তাঁদের প্রতি উৎসর্গ করেছেন। প্রসঙ্গত গত মাসে জাতিসংঘ জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ওর্তেগা, তাঁর স্ত্রী ও সহ-রাষ্ট্রপতি রোসারিও মুরিয়ো এবং নিকারাগুয়ার বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ইচ্ছাকৃত আটক, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে অভিযুক্ত।


  • Tags:
❤ Support Us
ধারাবাহিক: একদিন প্রতিদিন । পর্ব ৭ পা | র্স | পে | ক্টি | ভ রোব-e-বর্ণ
সে এমন ঝুঁকি নেবে কেন ? গ | ল্প রোব-e-বর্ণ
কে বলে সন্ত্রাসীদের ধর্ম নেই ? খাস-কলম দে । শ পা | র্স | পে | ক্টি | ভ
error: Content is protected !!