- এই মুহূর্তে দে । শ
- জুলাই ১, ২০২৪
জিডি হাসপাতালে চিকিৎসক দিবস পালন। বিধান রায়কে স্মরণ করে সুকুমার মুখোপাধ্যায়: রোগ নির্ণয়ে ডাক্তারি দৃষ্টির ভূমিকা অপরিসীম

মানুষের চেহারা দেখেই তাঁর স্বাস্থ্যের হালহদিশ আর নিরাময়ের উপায় বাতলে দিতে পারতেন কিংবদন্তী চিকিৎসক বিধানচন্দ্র রায় । তাঁর ১৪২তম জন্ম এবং মৃত্যুদিনে একজন চিকিৎসকের সেই গুণকেই আরেকবার স্মরণ করিয়ে দিলেন জিডি ডায়বেটিক হাসপাতালের অন্যতম রূপকার, বিশিষ্ট চিকিৎসক ও অধ্যাপক ডাক্তার সুকুমার মুখোপাধ্যায় ।
পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী, বাংলার রূপকার, বিশিষ্ট সমাজসেবী চিকিৎসক ডাক্তার বিধান চন্দ্র রায়ের জন্ম এবং মৃত্যুদিনে সারা রাজ্য জুড়েই পালিত হয় চিকিৎসক দিবস । ‘উইংস অ্যান্ড স্টেথস্কোপ’ শিরোনামেই কলকাতার জিডি ডায়বেটিক হাসপাতালে পূর্ণ শ্রদ্ধায় সঙ্গে পালিত হল এই দিনটি । মধুমেহ চিকিৎসায়, পূর্ব ভারতের অগ্রগন্য এই হাসপাতালের সংগঠক, চিকিৎসক, চিকিৎসা কর্মীদের উপস্থিতিতে, এদিনে অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট চিকিৎসক ও অধ্যাপক ডাক্তার সুকুমার মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্যে উঠে আসে ডাক্তারি-দৃষ্টি অথবা ক্লিনিক্যাল- আইয়ের প্রসঙ্গ । তিনি বললেন, বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থা অনেকটাই প্রযুক্তি নির্ভর, কিন্তু রোগ নির্ণয় এবং নিরাময়ে সবচেয়ে গুরুপূর্ণ চিকিৎসকের অভিজ্ঞ চোখের দৃষ্টি । চিকিৎসক ব্যবস্থায় রোগীর সঙ্গে কথা বলে, তাঁকে পর্যবেক্ষণ, নিরীক্ষণ করে শরীরের হাল হকিকত বোঝাতে গুরুত্ব দিতে হবে নব্য চিকিৎসকদের । প্রযুক্তির পাশাপাশি এই পন্থায় রোগীর কাছে একজন চিকিৎসক অনেক বেশী আস্থাভাজন হয়ে উঠবেন । তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ডাক্তার বিধান রায়ের আমলে চিকিৎসা ব্যবস্থায় না ছিল পেসমেকার, না ছিল অত্যাধুনিক এমআরআই যন্ত্র । কিন্তু তাঁর কাছে ছিল তাঁর ক্লিনিক্যাল আই এর ব্রহ্মাস্ত্র ।

ডাক্তার সুকুমার মুখার্জি এবং জিডি হাসপাতালের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক মোশরেফা হোসেন
পতাকা গোষ্ঠীর মানবসেবার ঐকান্তিক নিষ্ঠায় মাত্র ১৫ বছররেই দেশের চিকিৎসা মানচিত্রে উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখেছে জিডি হাসপাতাল, হাসপাতালের স্বপ্নময় সংগঠক মোশরেফা হোসেন এপ্রসঙ্গে চিকিৎসক এবং কর্মীদের নিরলস শ্রমকে কুর্নিস জানিয়ে এদিন বললেন, হাসপাতালের বাঁধা গন্ডি পেরিয়ে তাঁদের সেবাব্রত পৌঁছে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সহ সংলগ্ন রাজ্যগুলির প্রান্তিক অঞ্চলে । বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ক্যাম্প সহ নানা পরিষেবা প্রদান করা হয় সেখানে । হাসপাতালের আরেক স্বপ্নদ্রষ্টা ডাক্তার শৈবাল চক্রবর্তী বলেছেন, বিধান চন্দ্র রায় নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান। এখন কেউ ভাল চিকিৎসা করলে আমরা তাঁকে বলি ‘এ যুগের বিধান রায়’। যে মাইলফলক উনি তৈরি করে গেছেন,তা আগামী কয়েক প্রজন্মের কাছে শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে ।’
বিধান চন্দ্র রায় শুধুমাত্র যে বিশিষ্ট চিকিৎসক ও বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তা নয় । সমাজের প্রতিটি অঙ্গনে তাঁর সেবাব্রত রেখেছে উজ্জ্বল স্বাক্ষর । পশ্চিমবঙ্গের তিনটি উপনগরী, দুর্গাপুর, কল্যাণী, বিধাননগরের রূপকারও তিনি । রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে ভারত রত্নকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন লিখেছেন,’ পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, দেশবরেণ্য চিকিৎসক ড|: বিধান চন্দ্র রায়ের জন্ম ও প্রয়াণ দিবসে তাঁকে জানাই আমার প্রণাম । সেবাব্রতকে পাথেয় করে যাঁরা দিনরাত অত্যন্ত দায়িত্ব ও কর্মনিষ্ঠার সঙ্গে আর্তের সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন, সেই সকল চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের আমি জানাই ‘চিকিৎসক দিবস’-এর আন্তরিক শুভেচ্ছা । চিকিৎসাক্ষেত্রে আমার সকল সহকর্মীর আন্তরিক সহযোগিতা আছে বলেই আমাদের সরকার বিগত ১৩ বছরে বাংলায় স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বিপ্লব আনতে পেরেছে। সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যসাথীর মাধ্যমে বেসরকারি হাসপাতালে আমাদের সহায়তায় রোগীদের কার্যত নিখরচায় চিকিৎসার ব্যবস্থা, বহু নতুন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল তথা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও বহুতর পরিষেবা – সবই আমাদের স্বাস্থ্য-অর্ঘ্য ।
পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, দেশবরেণ্য চিকিৎসক ড|: বিধান চন্দ্র রায়ের জন্ম ও প্রয়াণ দিবসে তাঁকে জানাই আমার প্রণাম।
সেবাব্রতকে পাথেয় করে যাঁরা দিনরাত অত্যন্ত দায়িত্ব ও কর্মনিষ্ঠার সঙ্গে আর্তের সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন, সেই সকল চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের আমি…
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) July 1, 2024
বিধান রায়ের স্মরণে, কলকাতায় কেওড়াতলাতলা মহাশ্মশানে প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন রাজ্যের পুরো ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ও কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সন তথা সাংসদ মালা রায়, বিধায়ক ও মেয়র পারিষদ দেবাশিষ কুমার, বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ ।
❤ Support Us