- দে । শ
- মে ২৩, ২০২৩
ফের মালদার ইংরেজবাজার বাজির দোকানে আগুন, মৃত ২, বাজি বিস্ফোরণে ৭দিনে রাজ্যে মৃত ১৬

মঙ্গলবার সকাল ছ’টায় মালদার ইংরেজবাজার ঘিঞ্জি বাজার এলাকায় বাজির দোকানে আগুন। এই আগুনে ঝলসে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার থেকে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ, বীরভূমের দুবরাজপুর এবং আজ মালদার ইংরেজিবাজারে বাজি বিস্ফোরণে মোট ১৬ জন মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটল। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৫ ঘণ্টা ধরে দমকল কর্মীরা আগুন নেভানোর কাজ করছেন। কার্বাইড বিস্ফোরণের ফলে এই আগুন বলে দমকল সূত্রে প্রাথমিক ভাবে জানানো হয়েছে। অগ্নকাণ্ডের ফলে সংলগ্ন ৫টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পর পর এই আণিকাণ্ডের ঘটনায় শাসক-বিরোধী অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ ক্রমেই বাড়ছে।
বিগত বেশ কয়েকদিনে পশ্চিমবঙ্গে বাজির কারখানায় আগুন লাগার ঘটনা রাজ্যজুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। প্রথমে এগরা, তারপর বজবজ, তারপর দুবরাজপুর আর আজ মঙ্গলবার সকালে মালদার ইংরেজবাজার। পুলিশ ও দমকল সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই দোকানে প্রচুর বাজি মজুত করে রাখা হয়েছিল। সেই দোকানেই কার্বাইড বিস্ফোরণের ফলে আগুন লেগে যায়। তার জেরে পরপর বিস্ফোরণ ঘটে। সেই আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয় দু’জনের। সঙ্গে বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন আরও অন্তত তিনজন। আগুন এতটাই ভয়াবহ হয়ে ওঠে যে গোটা এলাকার আকাশ কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। দমকলের ৫টি ইঞ্জিন টানা ৫ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে আগুন কিছুটা আয়ত্বে আন্তে পেরেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইংরেজবাজারের রথবাড়ি এলাকার নেতাজি পুর বাজারে সকাল ৬টা নাগাদ এই আগুন লাগে। এলাকার লোকেরা সকাল সকাল বিকট বিস্ফরণের আওয়াজে চমকে ওঠে। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন অনেকেই । দমকলকে খবর দেন স্থানীয়রাই । এরপর দমকলকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দোকানের শাটার ভেঙে দেন। ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয় একজনের মৃতদেহ। পরে আরও একজনের মৃতদেহ দমকল কর্মীরাই উদ্ধার করে। এদিকে যে বাজারে আগুন লেগেছে, সেই এলাকাটি অত্যন্ত ঘিঞ্জি বাজার এলাকা। প্রশ্ন উঠেছে, এভাবে ঘিঞ্জি বাজারের দোকানের মধ্যে কেন এত বাজি মজুত করে রাখা হয়েছিল। বাজির বৈধতা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। এদিকে সেই দোকানে বাজি মজুতের লাইসেন্স ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখার দাবি উঠেছে।
এদিদে দুর্ঘটনার খবর পেয়েই রথবাড়ি বাজারে পৌঁছান ইংরেজবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী। সেই সময় লাইসেন্স ইস্যুতে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। তিনি এই প্রশ্ন এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, প্রাথমিক ভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনাই প্রশাসনের লক্ষ্য। তবে বেআইনি ভাবে বাজি মজুত রাখার বিষয়টি সামনে এলে পর্যাপ্ত আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
এদিকে কলকাতায় এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেছেন, “রাজ্য সরকার বোমা-বারুদের কারবার চলছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে ক্ষমতা দখলের জন্য এসব হচ্ছে।” সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “এর আগেও রাজ্যে বাজি তৈরী হতো। আমি নিজে যারা বাজি তৈরি করেন তাদের বিষয়টা দেখতাম। নিরাপত্তার এই রকমের সংকট ছিল না। ক্লাস্টার তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছিল। এই সরকার এসে সব উলটপালট করে দিল।” এদিকে বিজেপি, সিপিএমের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “বাজির সঙ্গে বহু মানুষের রুটিরুজি জড়িত। বাজির সঙ্গে বোমাকে মিলিয়ে দিচ্ছে বিরোধীরা। বাম আমলে রাস্তায় বাজির পসরা নিয়ে ব্যবসা চলতো, এখন সেটা হয় না। বিস্ফোরণে মানুষের প্রাণ যাওয়া দুঃখজনক,তবে সিপিএম-এর মুখে এই সমালোচনা মানায় না।”
❤ Support Us