Advertisement
  • এই মুহূর্তে দে । শ
  • আগস্ট ২৫, ২০২৩

যাদবপুরে বিজেপি যুব মোর্চার মিছিলে বিশৃঙ্খলা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নামল পুলিশ

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
যাদবপুরে বিজেপি যুব মোর্চার মিছিলে বিশৃঙ্খলা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নামল পুলিশ

আদালতের নির্দেশে, পুলিশ গড়িয়াহাট গোলপার্ক থেকে যাদবপুর ৮-বি বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত, বিজেপি যুব মোর্চার মিছিলের অনুমতি দিলেও গোলপার্কের সামনেই,  অখিল  ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের যাদবপুর বাঁচাও মিছিলের পথ রুদ্ধ করল পুলিশ।পরে এই নিয়ে, যাদবপুর থানার সামনেও এবিভিপির কর্মীদের সঙ্গে শুরু হয় পুলিশের বচশা।

শুক্রবারের বিজেপি যুব মোর্চার মিছিল থেকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “গোটা পশ্চিমবঙ্গে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মেনে রাজ্য সরকার মিছিল মিটিংয়ের অনুমতি দিচ্ছে না। তাই আমাদের আদালতে যেতে হয়েছিল। আদালত আজ আমাদের মিছিলের অনুমতি দিয়েছে, তাই এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে আমাদের মিছিল করতে হচ্ছে। তবে এবিভিপি একটি অরাজনৈতিক জাতীয়তাবাদী সংগঠন। ওরা দেশাত্মবোধের জন্য লড়াই করে। ওদের মিছিলটাকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ আটকে দিয়েছে। এই মিছিলটা যেতে দিলে কী এমন মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যেত?”

এদিকে গোলপার্ক থেকে বিজেপি যুব মোর্চার মিছিল ঠিকভাবে এলেও আচমকা মিছিলটি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ নম্বর গেটের সামনে মিছিলের কর্মীরা বসে পড়ে। বিজেপি যুব মোর্চার দাবি, র্যাগিংয়ের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের গ্রেফতার করতে হবে। এদিকে এই অস্থিরতা যখন ৪ নম্বর গেটের বাইরে চলছে তখন ৪ নম্বর গেটের ভেতর থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীরা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের একাংশ মানব বন্ধন করে ৪ নম্বর গেটের বাইরে দাঁড়ান। তাঁরা বলেন, “আমরা চাইছি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে তা যাতে বন্ধ করা যায়, ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস শুরুর জন্য  যাতে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা যায়। আমরা কোনও রাজনৈতিক অংশগ্রহণ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চাইছি না।”

এদিকে বিজেপি যুব মোর্চার সমর্থকরা তখন ৪ নম্বর গেটের সামনে জুতো হাতে নিয়ে রাস্তায় বসে পড়ে স্লোগান দিতে থাকে, “মাও বাদীদের গালে গালে, জুতো মারো তালেতালে।” বিজেপি যুব মোর্চার মহিলারা বলতে থাকেন, এখানে ছাত্রীরা ছোর পোশাক পরে আসে। মদ,গাঁজা খায়। এসব হবে না। কেউ আবার বলতে থাকেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এসএফআইকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এই স্লেগানে কী ভাবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় বাঁচবে সেটা সত্যিই বোঝা যায়নি, অর্থাৎ বিজেপি যুব মোর্চার নেতারা সেটা তাদের কথায়, আচরণে বোঝাতে পারেননি।

শুক্রবার “যাদবপুর বাঁচাও” স্লোগান দিয়ে গোলপার্ক থেকে যাদবপুর ৮বি বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত বিজেপি যুব মোর্চার মিছিল আদালতের অনুমতি নিয়ে শেষ পর্যন্ত পথে নামে এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় মিছিলের নামে অশান্তি শুরু করে দেয়। এই মিছিলের নেতৃত্ব দেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আদালত এই মিছিল সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত হওয়ার জন্য অনুমতি দিয়েছে। এই মিছিল আড়াইটেয় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও চারটেয় শুরু হয়। এই মিছিল উপলক্ষে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে যাতে কোনও রকম সমস্যা বা উত্তেজন না সৃষ্টি হয় তার জন্য বিরাট পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ নম্বর গেট। গেটে তালা দিয়ে নো এন্ট্রি বোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কাউকে বার হতে দেওয়া হচ্ছে না কাউকে প্রবেশ করতেও দেওয়া হচ্ছে না।  কয়েকদিন আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ নম্বর গেটের সামনে শুভেন্দু অধিকারী সভা করে যখন ফিরছেন তখন তাঁকে কালো পতাকা দেখানো হয়। মারপিট হয় দুই ছাত্র গোষ্ঠীর মধ্যে,তাতে এক ছাত্র রক্তাক্ত হয়। শুভেন্দু অধিকারী তারপর তাঁর প্রাণনাশের কথা জানিয়ে যাদবপুর থানায় এফআইআর করেন। তাই এদিনের মিছিলে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্যই আজ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ নম্বর গেটে তালা ঝুলিয়ে পুলিশ নো এন্ট্রি বোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে। যাদবপুর বাঁচাও স্লোগান দিয়ে বিজেপি মিছিল থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে মাদক মুক্ত করার, র্যাগিংমুক্ত করার ডাক দেওয়া হয়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি এদিন এই মিছিলকে ঘিরে যাদবপুর থানার সামনে প্রচুর পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অতিরিক্ত রিজার্ভ ফোর্স রয়েছে, যারা মিছিল থানার সামনে এলেই যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত করা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী মিছিলটিকে ঘিরে যাদবপুর ৮-বি বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত নিয়ে যায়। এই মিছিলকে ঘিরে রাস্তায় যান চলাচল দীর্ঘ সময় ব্যহত হয়।

এদিকে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ, দক্ষিণ বঙ্গের তরফে যাদবপুর বাঁচাও মিছিলে পুলিশের সঙ্গে ধুন্ধুমার। পুলিশ ব্যারিকেড করে মিছিল আটকানোর চেষ্টা করে। তবে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে মিছিল গোল পার্কের দিকে এগিয়ে চলতে থাকে। পুলিশের বক্তব্য এই মিছিলের কোনও অনুমতি নেই। পুলিশ বেশ কয়েকজন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের ৫০জন সদস্যকে আটক করে প্রিজন ভ্যানে তোলে যাদবপুটর থানার সামন থেকে। মিছিল থেকে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের কর্মীরা বলেন, আমরা কোনও বাধা মানব না। আমরা যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর প্রতিবাদে এই মিছিল নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে যাব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চটি চাটা এই পুলিশ ভয় পেয়েছে, তাই আমাদের মিছিল আটকাতে চাইছে। পুলিশ অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের মিছিল থেকে বহু কর্মী-সদস্যকে আটক করে। ব্যপক হারে পুলিশি ধরতে শুরু করে মিছিলকারীদের। পুলিশের বক্তব্য, এই মিছিলের কোনও অনুমতি নেই। পুলিশ তাই বিনা অনুমোতিতে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের মিছিল আটকাতে চাইলেও অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ সেটা তারা গ্রাহ্য করেনি। মিছিলে উপস্থিত অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের মিছিলকারীরা রাস্তায় বসে পড়ে গোল পার্ক ও যাদবপুর থানার সামনে। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বেজে যায় পুলিশের। পুলিশের বিশাল বাহিনী যাদবপু থানার সামনে মোতায়েন ছিল। ডিসি এসএসডি বিদিশা কলিতা দাশগুপ্ত সহ অন্যান্য পুলিশের পদস্থ পদাধিকারীরা যাদবপুর থানার সামনে ছিলেন। এবিভিপি এবং বিজেপি যুব মোর্চার মিছিল সামলাতেই এই বিশাল পুলিশ বাহিনী যাদবপুর থানার সামনে এদিন মোতায়েন ছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ সমস্ত রকমের ব্যবস্থা এদিন নিয়েছিল।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!