Advertisement
  • এই মুহূর্তে দে । শ
  • সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৩

পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইন (সংশোধন) বিলে কেন সই করেননি রাজ্যপাল? সি ভি আনন্দ বোসের কাছে হলফনামা চাইল কলকাতা হাই কোর্ট

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইন (সংশোধন) বিলে কেন সই করেননি রাজ্যপাল? সি ভি আনন্দ বোসের কাছে  হলফনামা চাইল কলকাতা হাই কোর্ট

কলকাতা হাইকোর্ট পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইন (সংশোধন) বিল সংক্রান্ত মামলায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের দফতরের হলফনামা চাইল।

বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইন (সংশোধন) বিলের বিরুদ্ধে দায়ের করা জনস্বার্থ মামলার শুনানিপর্বে রাজভবনের কাছে হলফনামা চেয়েছেন।

মাননীয় এই দুই বিচারপতির বেঞ্চের নির্দেশ, এই মামলায় সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৬৩ অনুযায়ী রাজভবনকে হলফনামা পেশ করে জবাব দিতে হবে। আগামী ৪ অক্টোবরের মধ্যে রাজভবনকে হলফনামা দিতে হবে। আগামী ১৬ অক্টোবর এই মামলার পরবর্তী শুনানিরদিন ধার্য হয়েছে।

মঙ্গলবার এই মামলার শুনানি পর্বে রাজ্য সরকারের তরফে দুই বিচারপতির বেঞ্চকে জানানো হয়, গত বছর ৭ জুন পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইনের (সংশোধন) বিল ২০২২ রাজ্য বিধানসভায় পাশ হয়েছে। ওই বছর ১৫ জুন রাজ্যপালের কাছে ওই বিল পাঠানো হয়। কিন্তু ওই বিলে এখনও পর্যন্ত সই করেননি রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস।

সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২০০ অনুযায়ী রাজ্য বিধানসভার কোনও বিল আইনে পরিণত করতে রাজ্যপাল তিনটি পন্থা অবলম্বন করতে পারেন। প্রথমত, রাজ্যপাল নিজেই বিলে সম্মতি দেবেন। দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রপতির কাছে বিলটি বিবেচনার জন্য পাঠাবেন। তৃতীয়ত, পুনর্বিবেচনার জন্য বিধানসভায় সংশোধনের জন্য বিলটি ফেরত পাঠাতে পারেন। রাজ্যের অভিযোগ, রাজ্যপাল এই তিনটিনপথের কোনও পথই বেছে নেননি। ফলে বিলটি রাজভবনেই পড়ে রয়েছে।

রাজ্যের যুক্তি, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৬৩ অনুসারে রাজ্যপাল মন্ত্রিসভার কাজে সাহায্য এবং পরামর্শ দিতে পারেন। কিন্তু এ ভাবে সহযোগিতা না করে বিল আটকে রাখতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, কোনও একটি পথ বেছে নিতে পারতেন রাজ্যপাল। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনও নির্দেশ তো এ ভাবে দিতে পারে না আদালত। কিন্তু সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হলেও কি আদালত প্রশ্ন করতে পারে না? হাই কোর্টের মতে, নির্দিষ্ট সময়সীমা পর্যন্ত এ ক্ষেত্রে রাজ্যপাল সময় নিতে পারেন। এ বিষয়ে রাজ্যপালের উত্তর দেওয়া উচিত বলে মনে করছে আদালত।

এর পর রাজ্যের আইনজীবী জানান, গত ৩১ মে’র মধ্যে বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হয়েছে। ওই বিলের মাধ্যমে রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনকে একই ছাতার তলায় নিয়ে আসা হয়েছে। এখন ওই বিল আটকে থাকার ফলে উপাচার্য নিয়োগে সমস্যা হচ্ছে। অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করছেন রাজ্যপাল।

অন্য দিকে, মামলার শুনানিতে কেন্দ্রের আইনজীবী, ডেপুটি সলিসিটর জেনারেলের দাবি, জনস্বার্থ মামলাকারীর ‘’রাজনৈতিক উদ্দেশ্য’’ রয়েছে। তিনি একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত। তা ছাড়া রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এই মামলার শুনানি হাই কোর্টে হতে পারে না। কারণ, সংবিধান অনুযায়ী বিধানসভার কার্যপদ্ধতি নিয়ে আদালত কোনও নির্দেশ দিতে পারে না। কিন্তু সেই যুক্তি কার্যত খারিজ করে দিয়ে রাজভবনের কাছে হলফনামা চেয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বেঞ্চ। প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন নিয়ে বিধানসভার বিলে রাজ্যপাল যাতে স্বাক্ষর করেন তা নিয়ে জনস্বার্থ মামলা করেন সায়ন মুখোপাধ্যায়-সহ কয়েক জন। তাহলে শেষ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইন (সংশোধন) বিল নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত গেল।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!