- এই মুহূর্তে দে । শ
- সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৩
অক্টোবরে ভারত-কানাডা বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত : কেন দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হল?

ভারত ও কানাডার মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বিষয়ক আলোচনা আপাতত স্থগিত। কানাডার বাণিজ্য মন্ত্রী মেরি এনজি ভারতের সঙ্গে অক্টোবরে কানাডার যে বাণিজ্য মিসিং হওয়ার কথা ছিল সেটা স্থগিত করেছেন। সম্প্রতি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে ভারতে ঘুরে গেছেন। তার পর কী এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হলো যে দুই দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি থমকে গেল?
খালিস্তান ইস্যু উদ্ধৃত না করে, এক সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, রাজনৈতিক সমস্যাগুলির সমাধান হয়ে গেলে আলোচনা আবার মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করা হবে।
আধিকারিকরা আরও জানিয়েছেন, ভারত কানাডার কিছু নির্দিষ্ট রাজনৈতিক উন্নয়নের ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। তাই রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা এসব আলোচনা বন্ধ রেখেছি। রাজনৈতিক এই সমস্যা সমাধানের পর আবার বাণিজ্য আলোচনা শুরু করা যাবে।
একে আগে শুক্রবার ভারত জানিয়েছিল, কানাডা তাদের দেশ থেকে ভারত বিরোধী কার্যকলাপ বন্ধ না করলে ভারত কানাডার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করবে না। প্রায় এক দশক পর ভারত ও কানাডার মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য নিয়ে আলোচনার দরজা খুলেছিল। কিন্তু ভারত থেকে এই বার্তা পাওয়ার পর কানাডা সরকার অক্টোবরে ভারত সফরে বাণিজ্য মিশন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।
ভারতের পক্ষে জানানো হয়েছিল কানাডার রাজনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে ভারতের আপত্তির কারণে বাণিজ্যিক কর্মসূচি বন্ধ করা হয়েছে। অথচ গত মে মাসে ভারতের নবাণিজ্য মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল ও কানাডার বাণিজ্য মন্ত্রী মেরি এনজির মধ্যে উভয় দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনার পর একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছিল তাতে উল্লেখ করা হয়েছিল যে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির আশা তারা করছেন।
গত ১০ সেপ্টেম্বর শিখ ফর জাস্টিস গ্রুপ, ব্রিটিশ কলম্বিয়ার একটি গুরুদ্বারে খালিস্তানের দাবিতে গণভোটের আয়োজন করেছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর কাছে কানাডায় ভারতবিরোধী কার্যকলাপ নিয়ে সেই সময় উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। জি২০ শীর্ষ সম্মেলন শেষ হওয়ার পর, ট্রুডো বলেছিলেন, কানাডা সর্বদা মত প্রকাশের স্বাধীনতা, বিবেকের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের প্রকাশকে রক্ষা করবে। এটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে আমরা হিংসা ও ঘৃণার অবসানও চাই। জানা যায়, এখন পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে এফটিএ নিয়ে বেশ কয়েকবার আলোচনা হয়েছে। এই আলোচনা শুরু হয় ২০১০ সালে।
তাই বলা যায়, খলিস্তানি ইস্যুতেই ভারত ও কানাডার মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে। ট্রুডোর শাসনকালে, অনেক খলিস্তানি ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের ওপর হামলাও করেছিল, যেকারণে ভারতে ক্রমাগত সমালোচনা হয়েছিল। ধীরে ধীরে খলিস্তানিদের প্রতি ট্রুডোর ভালোবাসা বাড়ছে, যে কারণে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যবধানও বাড়ছে।
ভারত ও কানাডা একে অপরের সঙ্গে বৃহত্তর পরিসরে ব্যবসা করে। কানাডা ছিল ভারতের ৩৫তম বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার যেখানে ২০২৩ অর্থবছরে ৮.১৬ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ছিল। এই সময়ের মধ্যে, ভারত কানাডায় ৪.১১ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করেছে, যা ২০২২ অর্থবর্ষে ৩.৭৬ বিলিয়ন ডলার ছিল। কানাডা থেকে আমদানি ২৯.৩ শতাংশ বেড়ে ৪.০৫ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। তাহলে কী খালিস্তানি ইস্যুতে ভারত-কানাডা বাণিজ্য বাধাপ্রাপ্ত হবে? প্রশ্ন সেটাই ।
❤ Support Us