Advertisement
  • দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • নভেম্বর ২১, ২০২৩

রাজ্যের ব্রান্ড অ্যাম্বাসাডর সৌরভ। বিভেদহীন বাংলায় বিনিয়োগ করুণ, বণিকমহলকে বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
রাজ্যের ব্রান্ড অ্যাম্বাসাডর সৌরভ। বিভেদহীন বাংলায় বিনিয়োগ করুণ, বণিকমহলকে বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

রাজ্যে শিল্প টানার ক্ষেত্রে তিনি কতটা আন্তরিক, সপ্তম বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে সেটা প্রমাণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে বাংলার ব্রান্ড অ্যাম্বাসাডর ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী।

সপ্তম বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিউটাউন বিশ্ব বাংলা কনভেনশন হলে বললেন, “৩৫টির বেশি দেশ এবারের সম্মেলনে অংশ নিয়েছে। ১৭টি দেশ বাংলার সঙ্গে পার্টনারশিপে এগিয়ে এসেছে। বাংলায় কোনও বিভেদ নেই। বিনিয়োগের মুক্ত কেন্দ্র বাংলা। আসুন আপনারা রাজ্যে বিনিয়োগ করুণ। বাংলায় কোনও বিভেদ নেই। সোশ্যাল সার্ভিস সেক্টরে বাংলা শীর্ষে। বাংলা এখন ইনভেস্টমেন্ট হাব।” মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, “এমএসএমইতে বাংলা ভারতে প্রথম। মহিলা ক্ষমতায়নে বাংলা প্রথম। এই রাজ্যে ৯০ লক্ষ এমএসএমই ইউনিটে ১ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ কাজ করে। রাজ্যে এমএসএমই ইউনিট ৯০ লক্ষ।”

রাজ্যে একটি স্থিতিশীল সরকার রয়েছে। এই রাজ্যে সবাই একসঙ্গে মিলেমিশে কাজ করে, এখানে কোনও বিভেদ নেই, এটাই শিল্প স্থাপনের অন্যতম বৈশিষ্ঠ।” তিনি বলেন, “রাজ্যে এখন শিল্প স্থাপনের জন্য ল্যান্ড ব্যাঙ্ক করা হয়েছে। নিজের জমিকে ব্যবসার কাজে লাগাবার জন্য সরকারি সহায়তা দেওয়া হয়।”

তাজপুরের প্রস্তাবিত সমুদ্র বন্দরের পরিকাঠামো তৈরি, টেন্ডারে অংশ নিন, পাশাপাশি দেউচাপাচামি কোল ব্লকের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এখানে বড় রকমের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। অমৃতসর থেকে ডানকুনি ফ্রেট করিডোরের কথাও মুখ্যমন্ত্রী এদিন উল্লেখ করেন।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, “রাজ্যে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনা হয়। রাজ্যের ৯০ শতাংশ মানুষ রেশন পান বিনা পয়সায়। সোশ্যাল সেক্টর সার্ভিসে বাংলা প্রথম। উৎপাদন শিল্পে বাংলা এগিয়ে। বাংলা এখন সিমেন্ট ও স্টিল উৎপাদন হাব।”

পর্যটন শিল্পে রাজ্যের ১০০ বছরের বেশি ঐতিহ্য রয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করে বলেন, রাজ্যের পর্যটন শিল্পকে আরও উন্নত করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। চা বাগান আমাদের রাজ্যের গর্ব। চা বাগানের মধ্যে হোটেল করার ব্যবস্থা করেছি। কেউ চাইলে চা বাগানের জমির ১৫% এলাকায় হোটেল ও পর্যটন কেন্দ্র করতে পারে, মকাই বাড়িতে হর্ষবর্ধন নেউটিয়া করেছেন।”

বাংলায় কিছু নেই, শুধু সংঘাত, হিংসা আছে বলে একশ্রেণির রাজনীতিকরা রটনা করছে। আমি ১০ বছর থেকে রাজনীতি করি। আমার বাবা একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন। আমি ইংরেজি মাধ্যমে পড়িনি। আপনাদের মতো ভালো ইংরেজি বলতে না পারলেও অনেক ভাষা বলতে পারি। আমার মনে আছে আমি তখন প্রথম সাংসদ। মাদার টেরেজা আমায় রাত ১১ টায় ফেন করে বললেন, মমতা আমায় তুমি একটা সাহায্য করতে পারবে? আমি বললাম বলুন কি করতে হবে? তিনি বললেন, আমার জমি দুস্কৃতীরা নিয়ে নিয়েছে দখল করে। আমি সেই জমি উদ্ধার করেছি। তখনও রাজ্যে আমাদের সরকার আসেনি। এই রাজ্যে দুর্গাপুজোর মতো করে বড়দিন হয়। এটাই বাংলার সংস্কৃতি। আমি দুর্গাপুজোয় ৩০০ কোটি টাকা খারচ করেছি। দুর্গাপুজোয় ৮০ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। আমি আবার রেড রোডের ঈদের নমাজেও আমন্ত্রিত থাকি। আবার বড় দিনে গির্জায় রাতের প্রার্থনায় অংশ গ্রহণ করি। এটাই বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতি। রবীন্দ্রনাথ জনগনমনতে পাঞ্জাব, সিন্ধু, গুজরাট,মারাঠা….  লিখেছেন। এটাই ভারত। এখানে কোনও রঙ নেই। সম্প্রীতির রংই ভারতের ঐতিহ্য।”

মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, “আমার ১৩৫টি বই আছে। তার মধ্যে কয়েকটি বেস্ট সেলার। আমার লেখা বাংলা অ্যাকাডেমি পুরস্কার পেয়েছে।”

তাই আমি আপনাদের অনুরোধ করছি, আপনাদের আলোচনা থেকে উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্ত বেরিয়ে আসুক। আমরা রাজ্যে সব রকমের শিল্পের সম্ভাবনার দরজা খুলে রেখেছি। আপনারা বিনিয়োগ করুন। যদি বিনিয়োগ না থাকে তাহলে উন্নয়ন হবে কি ভাবে? এখন তো একটাই কর জিএসটি। সেই করের টাকার রাজ্যের অংশও রাজ্যকে কেন্দ্র দেয় না। ১০০ দিনের কাজের টাকাও দেয় না। আমায় অনেকে জিজ্ঞাসা করেন আপনি রাইট ইজম না লেফট ইজম? আমি বলি আমি হিউম্যানিজম। আমরা সবাই সমান। সবাই মানুষ।”

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুকেশ আম্বানি, সঞ্জীব গোয়েঙ্কা, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় সহ বিশিষ্ট শিল্পপতি ও ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!