- এই মুহূর্তে দে । শ
- আগস্ট ২৯, ২০২৩
“যারা নিন্দুক তাদের বলতে দিন, আপনারা মিষ্টির সিন্দুক, আপনাদের ওপর আমার অনেক ভরসা”, মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির অনুষ্ঠানে বললেন মুখ্যমন্ত্রী

“মিষ্টির মতো চেহেরা যেন আমাদের সকলের হয়। কিছুদিন আগে মালদা গিয়ে আমি মিষ্টি ভাবে কথা বলেছিলাম। কিছু লোক চাকরি চাকরি বলে। চাকরি কোথা থেকে তৈরী হয়? মাটি থেকে। সবাই কম্পিউটারের চাকরি চায়। সবাই এসব পারে না। ৯০ লক্ষ মানুষ স্বনিযুক্তি প্রকল্পের আওতায়। চাষ, মিষ্টি তৈরী, শাড়ি বানান কত কাজ আছে।” পশ্চিমবঙ্গ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে ‘মিলন উৎসব’-এর সভায় এভাবেই রাজ্যে নতুন কর্মসংস্থানের দিশা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি এদিন বললেন, “কলকাতার মিষ্টি ব্যবসায়ীদের নিয়ে “মিষ্টি উদ্যোগ”, নামে একটি ক্লাস্টার হচ্ছে মৌলালিতে। ১৩ হাজার ৫০০ বর্গ ফুট জায়গায় এটা হবে। রাজ্যে আরও ৪টি মিষ্টি হাব হবে।” মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, “বাঙালির আইডিয়ার সঙ্গে মিষ্টি বিষয়টা জুড়ে আছে। আমায় ডায়বেটিক মিষ্টি দিয়েছে খেতে। আমি বলছি অল্প মিষ্টির মিষ্টি বানান, যখনই মানুষ দেখবে হালকা-পুলকা মিষ্টি তখন বিক্রি আরও বাড়বে। যাদের ডায়বেটিস আছে তাদের জন্য তো মিষ্টি বানাতে হবে।”
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনারা একটা ইউটিউব চ্যানেল তৈরী করুন। তাতে লিখুন কোথায় কোন মিষ্টি পাওয়া যায়। কি তার বৈশিষ্ট।” মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও বলেন, “বোরোলিন কোম্পানির লোককে একদিন ডাকলাম। বললাম, আপনাদের বোরোলিন চটচটে লাগছে। ঠোঁটে দিলে মোটা লাগছে, ভেসলিনের লাগছে না। আগের থেকে এখন এই বোরোলিন আলাদা। এখন ওরা চন্দন, ভ্যানিলা বোরোলিন বানায়। আমি ওদের চন্দন বোরোলিনের আইডিয়া দিয়েছি, ওদের বিক্রি বেড়েছে। তাই বলছি, মিষ্টিটা হালকা করুন। ভরাট মিষ্টি রামপুরহাটের। ভরাট মিষ্টি খেতে ভালো। ছানা পোড়া আছে এর মধ্যে।”
আপনারা বিভিন্ন জায়গায় যান, কোথায় ভালো মিষ্টি হয় দেখুন। বোঁদে , গুজিয়া, ক্ষীরের গজা বানান। মিষ্টি বানানোর কর্মচারী অনেক কমে গেছে।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন পোশাকের সম্পর্কে বলেন, “এখন মানুষ ভারী পোশাক পড়তে ভালোবাসেন না। তাই এখন হালকা পোশাক বেশি চলছে। আমি তাই বলছি হালকা মিষ্টি বানান। আমাকে দেখিয়ে নিতে পারেন দরকার হলে। লোকে আমায় এই নিয়ে সমালোচনা করে। তবে আমি জানি এই ছোট ছোট জিনিসের মধ্যে অনেক কিছু লুকিয়ে আছে। প্যাকেট করে মিষ্টি রাখবেন, বিক্রি হয়ে যাবে। আপনাদের মিষ্টি হাবের জন্য ১ টাকায় বিশ্ববঙ্গ-এর উল্টোদিকে জমি দেব। নবান্নর সঙ্গে মিলিয়ে এটার নাম হবে মিষ্টান্ন। এখানে সব জেলার সেরা মিষ্টি আনবেন। আমরা একটা প্রকল্প করেছি তার নাম ভবিষ্যৎ। যদি ভালো করে ব্যবসা করতে চান তাহলে ৫ লক্ষ টাকা পাবেন। ২৫ হাজার টাকা যেটা দিতে হয়, সেটা রাজ্য সরকার দেবে। আপনি এই ব্যবসাটাকে আরও ভালো করে বাড়াতে পারবেন।”
শুধু মিষ্টি নয়, মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, “ইউনেস্কো বাংলাকে পর্যটনের গন্তব্য ঘোষণা করেছে। তাই সব কিছু নিয়ে ব্যবসা করুন। পায়েস কেক করুন, জন্মদিনে সেটা বিক্রি হবে। পায়েস মাঙ্গলিক। ছানা দিয়ে পায়েস বানিয়ে তার ওপর চাল ছড়িয়ে কেক বানান। আমি চাই বাংলার সব মিষ্টি জিআই তকমা পাক। এবারের বিজিবিএস-এ এমএসএমই-কে আমরা ফোকাস করছি। ওখানে ৪০ থেকে ৪২টা দেশ আসে। প্রয়োজনে মিষ্টি এক্সপোর্ট করুন। আর কাঁচামাল, অন্যান্য সাহায্য ? সব দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকার আছে। এই যে কিছু বেশি টাকার জন্য আমাদের রাজ্যের লোকেরা ভিন রাজ্যে কাজ করতে যাচ্ছে, মৃতদেহ হয়ে ফিরে আসছে। আমি বলছি আপনাদের সব কর্মীর নাম সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করুন। তা হলে সব বিষয়ে, এমনকি মেয়ের বিয়েতেও ২৫ হাজার টাকা পাবে। যারা নিন্দুক তাদের বলতে দিন, আপনারা মিষ্টির সিন্দুক, আপনাদের ওপর আমার অনেক ভরসা।”
❤ Support Us