- দে । শ
- ডিসেম্বর ২৪, ২০২২
করোনার নতুন সামলাতে তৎপর রাজ্য, স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জারি একগুচ্ছ নির্দেশিকা

চিনের কোভিড পরিস্থিতির প্রভাব পড়েছে এদেশেও। দু বছর আগের ভয়াবহ পরিস্থিতি যাতে না তৈরি হয় তার জন্য আগাম সতর্কতা অবলম্বন করেছে কেন্দ্র ও রাজ্যের সরকার উভয়ই। এরকম অবস্থায় বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য ভবন মারফত জারি করা হল একগুচ্ছ নির্দেশিকা।
উল্লেখ্য, করোনার নতুন উপরূপ ওমিক্রন বিএফ.৭ দেশে ছড়িয়ে পরছে । অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে মহারাষ্ট্র ও গুজরাটে দুজন করে মোট চার জন আক্রান্ত হয়েছেন। পরিস্থিতি পর্যালোচনায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও প্রধান মন্ত্রী উভয়েই বৈঠক সেরেছেন স্বাস্থ্য কর্তাদের সাথে। কেন্দ্রের তরফে ইতিমধ্যে কোভিড গাইডলাইন জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার নবান্নও সে পথে হাঁটল। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে স্বাস্থ্য ভবন জানায় জিনোম সিকোয়েন্সিং করার কথা। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয় যে আরটি পিসিআর পরীক্ষা প্রথমে করা হবে। তাতে কোভিড পজিটিভ ধরা পড়লে সেই রোগীর নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিং এর জন্য পাঠানো হবে।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য ভবন থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেখানে বলা হয় চিন, জাপান, কোরিয়া, আমেরিকা প্রভৃতি দেশে কোভিড কেস বাড়তে শুরু করেছে। তাই আক্রাত ব্যক্তির নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করা একান্ত প্রয়োজন। সেই জন্য তাঁদের নমুনা ইনসাকগে পাঠানো হবে। ইনসাকগ বা ইণ্ডিয়ান সার্স কোভিড-২ কনসর্টিয়াম অন জিনোমিক্স হল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ একটি সংস্থা। যা হল জিনোম সিকোয়েন্সিং এর জন্য ল্যাব নেটওয়ার্ক।
স্বাস্থ্য ভবনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে ইনসাকগ স্বীকৃত কয়েকটি ল্যাব রয়েছে। স্কুল অফ ট্রপিকাল মেডিসিন, এসএসকেএম হাসপাতাল, বাঁকুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তরবঙ্গ এবং বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং কল্যাণীর জহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতাল প্রভৃতি হল পশ্চিমবঙ্গের উল্লেখযোগ্য ডিপো সে।
স্বাস্থ্য ভবন পক্ষ থেকে একগুচ্ছ নির্দেশ জারি করা হয়েছে। যা হল-
⦁ গত এক মাসে আরটিপিসিআর টেস্টে যে সব নমুনায় পজিটিভ রেজাল্ট পাওয়া গিয়েছে, তা ২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে নিকটবর্তী ডিপো সেন্টারে পাঠাতে হবে জিনমো সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য।
⦁ ডিপো সেন্টারগুলোকে স্কুল অফ ট্রপিকাল মেডিসিনে সেই নমুনাগুলো ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে পাঠাতে হবে।
⦁ উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ এবং জহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতাল ওই নমুনাগুলো পাঠাবে কল্যাণীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ বায়োমেডিকেল জিনোমিক্সে।
⦁ প্রাথমিক পর্যায়ে পুরনো রেজাল্টের নমুনা এভাবে পাঠিয়ে দেওয়ার পর নিয়মিত এই প্রক্রিয়া চালাতে হবে।
⦁ কোনও ল্যাবে পাঁচটি নমুনায় পজিটিভ রেজাল্ট পেলেই তা একত্র করে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য কাছের ডিপোয় পাঠিয়ে দিতে হবে।
⦁ কোনও মাসে যদি পাঁচটা পজিটিভ কেস কোনও ল্যাবে না পাওয়া যায়, তা হলে যে কটা পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে, তার নমুনাই পাঠিয়ে দিতে হবে।
⦁ ডিপো সেন্টারগুলি তিন দিন অন্তর নমুনা স্কুল অফ ট্রপিকাল মেডিসিন বা কল্যাণীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ বায়োমেডিকেল জিনোমিক্সে পাঠাবে।
⦁ প্রতিটি নমুনার সঙ্গে নির্দিষ্ট ফরম্যাট মোতাবেক তথ্য থাকতে হবে।
⦁ হাসপাতালে জ্বর, সর্দি, কাশি বা সে ধরনের কোনও উপসর্গ নিয়ে কেউ এলে তাঁকে ভর্তি নেওয়ার সময়ে অবশ্যই আরটিপিসিআর টেস্ট করাতে হবে।
এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী করোনা পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত হতে নিষেধ করেছেন। পাশাপাশি তিনি বলেন যে রাজ্য এই আসন্ন বিপর্যয় সামলাতে কোনোরকম গাফিলতিকে প্রশ্রয় দেবে না। করোনার প্রথম তিনটি ঢেউএর সময় নাকাল হয়েছিল রাজ্যবাসী। এখন রাজ্য সরকারের আগাম সতর্কতা পরিস্থিতিকে হয়তো অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
❤ Support Us