- এই মুহূর্তে দে । শ
- নভেম্বর ৩০, ২০২৩
জাতীয় সংগীত অবমাননার অভিযোগে বিজেপির ১১ বিধায়কের বিরুদ্ধে এফআইআর, শুভেন্দুকে যুক্ত করার কাজ শুরু, ফিরহাদ বললেন, বিজেপিকে বুঝে নিতে ফিরহাদ হাকিম কাফি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়োজন নেই
বুধের পর বৃহস্পতিবারও বিধানসভায় মুখোমুখি তৃণমূল-বিজেপি, জাতীয় সংগীত অবমাননার জন্য হেয়ার স্ট্রিট থানায় বিজেপির ১১ বিধায়কের বিরুদ্ধে এফআইআর, জুভেন্দুর নাম এফআইআর-এ যুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। এদিকে এই ইস্যুতে আদালতে রিট পিটিশন করবেন শুভেন্দু অধিকারী। ৪ ডিসেম্বর শুভেন্দুকে শীতকালীন অধিবেশনে সাসপেন্ড করার প্রতিবাদে কলকাতার গান্ধি মূর্তির পাদদেশে বিজেপির ধর্ণা কর্মসূচি। এদিকে ফিরহাদ হাকিম বললেন, “বিজেপিকে বুঝে নিতে ফিরহাদ হাকিম কফি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়োজন নেই।”
বুধবারের পর বৃহস্পতিবারও বিধানসভায় মুখোমুখি “চোর” স্লোগানে বিধানসভা চত্বরকে উত্তপ্ত করে তুলেছে তৃণমূল ও বিজেপি। ২৮ নভেম্বর থেকে বিধানসভায় বি আর আম্বেদকর মূর্তির পাদদেশে কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে অবস্থানে বসে তৃণমূল। ২৯ নভেম্বর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ছিলেন। তৃণমূলের এই অবস্থান বিক্ষোভ থেকে বিজেপির সবাই চোর স্লোগান অবস্থান শুরুর সময়, বেলা তিনটে থেকেই চলছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন কালো পোশাক পরা তৃণমূল বিধায়কদের সঙ্গে রয়েছেন। এর পর হঠাৎই বিকেল সাড়ে চারটা নাগাদ শুভেন্দু অধিকারী চার-পাঁচজন বিজেপি বিধায়ক নিয়ে বিধানসভায় মমতা চোর, চোর, চোর বলতে বলতে প্রবেশ করেন। মুহূর্তে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মুখ্যমন্ত্রী বুধবার বলেন, তৃণমূল নিয়ম অনুযায়ী স্পিকারের অনুমতি নিয়ে অবস্থান করছে বিজেপি স্পিকারের অনুমতি না নিয়ে বেআইনি ভাবেই এই অসভ্যতা করেছে। তারপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এবার জনগণমন গাওয়া হবে। সেই মতো জাতীয় সংগীত শুরু হয়, কিন্তু বিজেপি তখনও বিধাবনসভায় প্রবেশের মূল প্রবেশদ্বারে বসে মমতা চোর, তৃণমূল চোর বলে চলেছে। বৃহস্পতিবারও জাতীয় সংগীত গাওয়ার সময় বিধানসভার মূল প্রবেশদ্বারে বসে শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপির বিধায়করা থালা বাজাতে শুরু করেন এবং থালা বাজিয়ে রেশন চোর, তৃণমূল, চাকরি চোর তৃণমূল স্লোগান দিতে থাকেন।
এদিকে এই প্রসঙ্গে জাতীয় সংগীত অবমাননার অভিযোগে বিধানসভার স্পিকার বিজেপির ১১ জন বিধায়কের বিরুদ্ধে হেয়ার স্ট্রিট থানায় এফআইআর করেন। বৃহস্পতিবার কলকাতা পুলিশের ডিসি সেন্ট্রাল, ডিসি নর্থ বিধানসভায় আসেন। এদিনও ২০ মিটার দূরত্বে থেকে বিজেপি-তৃণমূল বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে।
এদিকে বৃহস্পতিবারের ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপির অভিযোগ শুভেন্দু অধিকারী বিধানসভা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তৃণমূল বিধায়করা আম্বেদকরের মূর্তির পাদদেশ থেকে শুভেন্দু চোর বলে স্লোগান দেন, আর তখনই শুভেন্দু আবার বিধানসভায় প্রবেশ করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে চোর স্লোগান দিয়ে থালা বাজাতে শুরু করেন। বিজেপি বিধায়করা এবং শুভেন্দু অধিকারীকে জাতীয় সংগীত অবনমাননার বিষয়ে প্রশ্ন করলে বিজেপি বিধায়করা ও শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “জাতীয় সংগীত কখন হয়েছে সেটা তাঁরা শোনেননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশ দিয়ে বিজেপিকে ভয় দেখতে চাইছে, তাতে লাভ নেই।”
এদিকে বিধানসভায় তৃণমূল বিধায়কদের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অবস্থান কর্মসূচি শেষ হয় বৃহস্পতিবার। কর্মসূচি শেষে ফিরহাদ হাকিম বলেন, “ওরা স্বাধীনতার সময় দেশ বিরোধী কাজ করেছে, এখন জাতীয় সংগীতের অবমাননা করল। এর আগে অমিত শাহের পুত্র জয় শাহ জাতীয়পতাকা অবমাননা করেছেন। জে পি নাড্ডাও বিজেপির পতাকা দিয়ে জাতীয় পতাকা ঢেকে দিয়েছেন।” এই সময় সাংবাদিকরা ফিরহাদকে বলেন, শুভেন্দু বলেছেন তিনি জাতীয় সংগীত হচ্ছে শোনেননি। সাংবাদিকদের এর পর ফিরহাদ বলেন, “ও কি কানা? ওদের বুঝে নিতে ফিরহাদ হেকিম কাফি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রয়োজন নেই।”
এদিকে শুভেন্দু অধিকারীর নাম জাতীয় সংগীত অবমাননার অভিযোগে যুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করে প্রশাসন। এই প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষ বলেন, “আমার আদালতের কাছে অনুরোধ, জাতীয় সংগীত অবমাননার অভিযোগে শুভেন্দু অধিকারীকে রক্ষাকবজ যেন না দেওয়া হয়।” এদিকে শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন এই ইস্যুতে আদালতে রিট পিটিশন করবেন তিনি। এদিকে শুভেন্দু অধিকারীকে বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন থেকে সাসপেন্ড করার জন্য আগামী চার ডিসেম্বর কলকাতার গান্ধিমূর্তির পাদদেশে রাজ্য বিজেপি অবস্থানে বসবে।
❤ Support Us