- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- জুন ১৩, ২০২৩
কৃষক আন্দোলন রুখতে টুইটারে পূর্ণ লাগাম, বিস্ফোরক অভিযোগ প্রাক্তন সিইওর।সমর্থন টিকায়েতের। মিথ্যা অভিযোগ, দাবি কেন্দ্রের

জনপ্রিয় মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডোরসের বক্তব্যকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করলেন কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর। প্রাক্তন মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিককে ‘আস্ত মিথ্যাবাদী’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ভারতের ভাবমূর্তিকে কালিমালিপ্ত করতে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এমন মন্তব্য করা হয়েছে। সেইসঙ্গে তিনি বলেছেন, জ্যাকের বক্তব্য টুইটারের ইতিহাসে অত্যন্ত কলঙ্কময় এক অধ্যায়কে মুছে দেওয়ার প্রয়াস ছাড়া আর কিছু নয়।
গত বছর টুইটারের দায়িত্ব থেকে অপসারিত হয়েছেন জ্যাক। মঙ্গলবার, একটি সাক্ষাৎকারে প্রশ্নের উত্তরে তিনি অভিযোগের সুরে বলেছেন, ২০২০-২২ কালপর্বে ভারত সরকারর পক্ষ থেকে একাধিকবার অনুরোধ করা হয়েছিল যে সমস্ত অ্যাকাউণ্ট থেকে কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে, সরকারের সমালোচনায় বক্তব্য প্রকাশিত হচ্ছে, সেগুলোকে চিরতরে যেন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এব্যাপারে হুমকিও আসে। বলা হয়, কথা না শুনলে তাঁদের সংস্থার ঝাঁপ বন্ধ করতে হবে। দরকার হলে, কর্মীদের বাড়িতেও তল্লাশি অভিযান চালানো হবে। তাঁর দাবি, বাস্তবে তাই হয়েছিল। ভুয়ো মামলায় তাঁদের সংস্থার বহু কর্মচারীকে হেনস্থার মুখে ফেলেছিল কেন্দ্র।
টুইটারের প্রাক্তন মুখ্য কার্যনির্বাহী আধকারিকের মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রাজীব চন্দ্রশেখর। ক্ষুব্ধ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেছেন, সরকারের উদ্দেশ্য ছিল যে ভারতীয় আইন-কে টুইটারের কর্মপদ্ধতিতে বলবৎ করা। তিনি বয়ানে আরও উল্লেখ করেছেন যে, জ্যাক ডোরসে-র নেতৃত্বে টুইটার কোনওভাবেই ভারতীয় আইনকে মেনে চলেনি। তারা ছিল ক্রমাগত আইন-লঙ্ঘন করে গেছে। । ২০২০ থেকে ২০২২-এর জুন পর্যন্ত টুইটার লাগাতার ভারতীয় আইনকে লঙ্ঘন করে তাদের মাইক্রো ব্লগিং সাইট দিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আক্রমণ শানিয়েছিল। সেই সঙ্গে তিনি আরো বলেছেন, সংস্থা কখনও ভারতকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র বলে মনে করেনি। ভেবে দেখেনি, তার নিজস্ব আইন-শৃঙ্খলা রয়েছে। আর ভারতীয় ভূখণ্ডে তা মেনে চলতে প্রত্যেকে বাধ্য। উল্টে তাঁরা এমন একটা মনোভাব নিয়ে চলছিলেন যেন ভারতীয় আইন নিয়ে যা খুশি তাই করা যায়। ২০২২ সালের জুন মাসের পর থেকেই দেশের আইন-কানুন মেনে চলার প্রবণতা টুইটারের মধ্যে দেখা যাচ্ছে।
রাজীব চন্দ্রশেখর উল্লেখ করেছেন ২০২০-২১ সালে দেশে হওয়া কৃষক আন্দোলনের প্রসঙ্গ। তিনি বলেছেন, টুইটারে এ ঘটনা নিয়ে অনেক মিথ্যে খবর প্রকাশ করা হয়েছিল। একাধিকবার প্রচার করা হয়, প্রতিবাদ থামাতে নাকি গণহত্যা করা হচ্ছে। যা সম্পূর্ণ রূপে ভুয়ো। তিনি তাঁর বয়ানে আরও জানিয়েছেন যে, ভারত সরকার যে কোনও ধরনের ভুয়ো খবর প্রচারকে বিরত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। কারণ, এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আগামী দিনে আরও বড়ো কোনো আইন-শৃঙ্খলা জনিত সমস্যা তৈরির হওয়ার আশঙ্কা ছিল। তাঁর অভিযোগ, জ্যাকের নেতৃত্বে থাকা টুইটার কোনওভাবেই ভুয়ো খবরের উপরে ব্যবস্থা নিতে চায়নি। বন্ধ করতে চায়নি তার প্রচার। অথচ আমেরিকার সরকারের নির্দেশে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিয়েছিল কোম্পানি। সেক্ষেত্রে এদের কোনো আপত্তি জানাতে দেখা যায় না। যত সমস্যা শুধুমাত্র ভারতের মতো দেশের জন্য।
ডোরসের মন্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েত। তিনি বলেছেন, আন্দোলন চলাকালে আমরা খবর পেয়েছিলাম, যে সমস্ত সামাজিক মাধ্যম থেকে কৃষক আন্দোলনের স্বপক্ষে প্রচার করা হচ্ছে। তাঁকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। জনপ্রিয় মাইক্রোব্লগিং সাইটের প্রাক্তন কর্তার বক্তব্যে সে সত্যই প্রতিষ্ঠিত হল। তিনি বলেছেন, এধরনের সংস্থা কারোর চাপের সামনে মাথা নত করে না। উনি যা বলেছেন তা সম্পূর্ণ সত্য।
❤ Support Us