Advertisement
  • এই মুহূর্তে মা | ঠে-ম | য় | দা | নে
  • মে ১৬, ২০২৪

আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত, ৬ জুন কলকাতায় শেষ ম্যাচ সুনীল ছেত্রীর

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত, ৬ জুন কলকাতায় শেষ ম্যাচ সুনীল ছেত্রীর

অবসরের প্রসঙ্গ উঠলেই বারবার একটা কথাই বলতেন, যতদিন ফুটবল উপভোগ করব, ততদিন খেলে যাব। অবশেষে থামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভারতীয় ফুটবলের আইকন সুনীল ছেত্রী। আগামী ৬ জুন কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ২০২৬ বিশ্বকাপের যোগ্যতাঅর্জন পর্বে কুয়েতের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলেই আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানাবেন। নিজের সোশ্যাল অ্যাকাউন্টে একটা ভিডিও পোস্ট করে অবসরের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন সুনীল।

কলকাতা থেকেই ফুটবলের যাত্রা শুরু করেছিলেন সুনীল ছেত্রী। বিদায়ের জন্য সেই কলকাতাকেই বেছে নিয়েছেন। ২০ বছর আগে বড় ফুটবলার হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কলকাতায় হাজির হয়েছিলেন। কলকাতার ক্লাবে খেলেই পেয়েছেন যশ–খ্যাতি, ফুটবলজীবনে প্রতিষ্ঠা। সেই কলকাতাতেই খেলবেন জীবনের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিওতে সুনীল ছেত্রী বলেন, ‘‌আগে কখনও ভাবিনি, দেশের হয়ে এতগুলো ম্যাচ খেলেছি। কিন্তু এখন ভাবছি। গত দুমাস ধরে ভেবেছি। আমার কাছে বিষয়টা খুব অদ্ভুত ছিল। কুয়েতের বিরুদ্ধে ম্যাচ যে আমার আন্তর্জাতিক ফুটবল জীবনের শেষ ম্যাচ হবে, সেই সিদ্ধান্তের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম বলেই দেশের হয়ে ম্যাচ খেলার বিষয়টা নিয়ে ভাবছিলাম। যখন নিজেকে বলি যে এটাই আমার শেষ ম্যাচ, সব স্মৃতি মনে পড়ছিল। কী অদ্ভুত ছিল বিষয়টা। বিভিন্ন ম্যাচ, বিভিন্ন কোচ, নানা দল, মাঠ, ভাল ম্যাচের কথা ভাবছিলাম।’‌
অবসররের কথা ঘোষণার দিনে সুনীলের বারবার মনে পড়েছে দেশের হয়ে প্রথম খেলার দিনের কথা। তিনি বলেন, ‘‌যে দিন দেশের জার্সি গায়ে প্রথম খেলতে নেমেছিলাম, সেই দিনের কথা জীবনে কোনও দিন ভুলতে পারব না।  অবিশ্বাস্য অনুভূতি। ম্যাচের আগের দিন সকালে জাতীয় দলে আমার প্রথম সুখবিন্দার স্যার এসে আমাকে জানিয়েছিলেন, প্রথম একাদশে খেলার কথা। বোঝাতে পারব না সেই অবিশ্বাস্য অনুভূতির কথা।’‌ তিনি আরো বলেন, ‘‌ভারতীয় দলের জার্সি প্রথম হাতে পাওয়ার পর তাতে কিছুটা সুগন্ধি ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। জানি না কেন। সেই দিন যা যা হয়েছিল, প্রাতরাশ থেকে মধ্যাহ্নভোজের টেবিলের কথাবার্তা, ম্যাচে মাঠে নামা এবং অভিষেক ম্যাচেই গোল। জাতীয় দলে আমার যাত্রা শুরুর প্রথম দিনের এই ঘটনাগুলোর কথা কোনও দিন ভুলতে পারব না।’‌
আবেগে ভেসে গিয়ে সুনীল আরও বলেন, ‘আমি কিছুটা বিতর্কিত কথা বলছি। আমি এমন কোনও খেলোয়াড়কে জানি না, যিনি আমার থেকে বেশি ফ্যানদের থেকে ভালোবাসা, প্রশংসা পেয়েছেন। অনেক সময় লোকজন বিভিন্ন কথা বলেন। এই বিষয় নিয়ে কথা বলেন। ওই বিষয় নিয়ে কথা বলেন। আমার মতে, আমি সবথেকে বেশি ভালোবাসা, প্রশংসা, স্নেহ পেয়েছি অন্য যে কোনও ফুটবলারের তুলনায়।’
২০০৫ সালে ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচে অভিষেক হয়েছিল সুনীল ছেত্রীর। জাতীয় দলের হয়ে প্রথম গোল করেছিলেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। সুনীলের প্রথম আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা ছিল ২০০৭ নেহরু কাপ। প্রথম ম্যাচে কম্বোডিয়াকে ৬–০ হারায় ভারত। দু’টি গোল করেন সুনীল। সিরিয়ার কাছে হার এবং কিরঘিজস্থানের বিরুদ্ধে জয়ের ম্যাচেও গোল করেন তিনি। এরপর দেশের সেরা ফুটবলার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।
দেশের হয়ে সবথেকে বেশি ম্যাচ খেলেছেন তিনিই। ১৯ বছরের আন্তর্জাতিক কেরিয়ারে ১৫০টি ম্যাচে ৯৪ গোল করেছেন সুনীল। বর্তমানে যে ফুটবলাররা এখনও খেলছেন, তাঁদের মধ্যে সবথেকে বেশি আন্তর্জাতিক গোলের তালিকায় রয়েছেন তিন নম্বরে। সামনে শুধুমাত্র ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো এবং লিওনেল মেসি। ২০১১ সালে অর্জুন পান সুনীল। ২০১৯ সালে পদ্মশ্রী পান। ২০২১ সালে প্রথম ফুটবলার হিসেবে ভারতের সর্বোচ্চ ক্রীড়া পুরস্কার খেলরত্ন সম্মান পান সুনীল। তাঁর অবসরের সঙ্গে সঙ্গে এক যুগের সমাপ্তি ঘটবে।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!