Advertisement
  • দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • জানুয়ারি ১৩, ২০২৩

১২ দিনে বসে গেছে ৫.৪ সিমি। উপগ্রহ চিত্রের ছবি ঘিরে নতুন আতঙ্ক যোশীমঠে

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
১২ দিনে বসে গেছে ৫.৪ সিমি। উপগ্রহ চিত্রের ছবি ঘিরে নতুন আতঙ্ক যোশীমঠে

গভীর বিপদের মধ্যে যোশীমঠ নগর। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা বা ইসরোর সাম্প্রতিক প্রকাশিত উপগ্রহ চিত্র জেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের কপালে ফেলেছে চিন্তার ভাঁজ। আদৌ তারা যোশীমঠ শহরকে ভূমি ধসের হাত থেকে রক্ষা করতে পারবেন কিনা সে নিয়েই ভাবনা চিন্তা শুরু হয়েছে প্রশাসনের অন্দর মহলে।

যোশীমঠ কিভাবে বসে যাচ্ছে তার উপগ্রহ চিত্র সামনে এনেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার শাখা সংগঠন ন্যাশনাল রিমোট সেন্সিং সেন্টার বা এনআরএসসি। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে দুটি কালপর্বে যোশীমঠ শহরের বসে যাওয়ার ছবি প্রকাশ্যে এনেছেন তারা। একটি হল ৭ এপ্রিল থেকে ৯ নভেম্বর আর অন্যটি ২৭ ডিসেম্বর থেকে ৮ জানুয়ারির মধ্যে। এনআরএসসি-র ওয়েবসাইট থেকে জানা গিয়েছে, একটি নির্দিষ্ট সময়ে অন্তর উপগ্রহের সেন্টিনেল-১ এসএআর ইমেজরি যন্ত্র দিয়ে ডিআইএনএসএআর কৌশল ব্যবহার করে এই ছবিগুলি তোলা হয়েছিল।

প্রথমে দীর্ঘকালীন পর্যায়ে অর্থাৎ এপ্রিল থেকে নভেম্বর যোশীমঠের যে বিস্তীর্ণ এলাকার ছবি তোলা হয়েছিল তাতে দেখা যায় এলাকার জমি ৮.৯ সেমি বসে গিয়েছিল। কিন্তু তারপরে  সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। শেষ দুমাসের যে ছবি সামনে এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে গত ১২ দিনে অর্থাৎ ২৭ ডিসেম্বর থেকে ৮ জানুয়ারি- এই সময়ে প্রায় ৫.৪ সেণ্টিমিটার বসে গিয়েছে এলাকার মাটি। ইসরোর প্রতিবেদনে আরও জানানো হচ্ছে যে, মাত্র কয়েক দিনে ভূমিধসের কেন্দ্রবিন্দুতেও বদল এসেছে। শুধুমাত্র জোশীমঠ শহরের মাঝামাঝি থাকা এলাকাতেই বেড়েছে মাটির দিকে অবনমন। এছাড়াও এই উপগ্রহ চিত্রে চিহ্নিত হয়েছে যোশীমঠ শহরের এক বিস্তীর্ণ ধসপ্রবণ এলাকা। এই এলাকার মাথা রয়েছে ২১৮০ মিটার উচ্চতায় থাকা জোশীমঠ-আউলি সড়কের কাছে একটি জায়গায়। ধসপ্রবণ ওই এলাকার প্রায় মাঝামাঝি দুটি কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ভারতীয় সেনার হেলিপ্যাড এবং নরসিংহ মন্দির।

যোশীমঠ শহরের মানুষকে বাঁচাতে উদ্ধার কাজের প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে প্রশাসন। ‘মালারি ইন’ এবং ‘মাউন্ট ভিউ’ নামে দু’টি বিলাসবহুল হোটেল থাকার উপযুক্ত নয় বলেই জানানো হয়েছিল প্রশাসনের পক্ষ থেকে। বাসিন্দাদের ক্ষতিপূরণ নিয়ে বিক্ষোভ থাকলেও দুই হোটেল ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে পুরকর্তাদের উদ্যোগে। খুব শীঘ্রই অন্যান্য বিপজ্জনক ঘরবাড়িগুলিও ভাঙা শুরু হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। স্থানীয় সংবাদ সূত্রে জানা যাচ্ছে, নিজেদের বসত বাড়ি ছেড়ে প্রায় ১৬৯ টি পরিবার ইতিমধ্যেই নিরাপদ আশ্রয়ে জায়গা পেয়েছেন।

যোশীমঠকে বসবাসের অযোগ্য বলে ঘোষণা করেছে উত্তরাখন্ড সরকার। স্থানীয় ঘর ছাড়া মানুষরা এই পরিস্থিতির জন্য এনটিপিসির তপোবন বিষ্ণোগড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পকে দায়ী করছেন বার বার। এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য যে ১২.১ কিমি দীর্ঘ সুড়ঙ্গ তৈরি হয়েছে, তার জন্যই জোশীমঠের মাটি আলগা হয়েছে বলেই তাঁদের মত। যদিও দায় স্বীকার করেনি এনটিপিসি। আজকের উপগ্রহ চিত্র সামনে আসার পর মুখ্যমন্ত্রী পুস্কর সিং ধামি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন সেনা, আইটিবিপি, এনডিআরএফের প্রতিনিধি এবং বিজ্ঞানীদের সঙ্গে। সাধারণ মানুষকে বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!