Advertisement
  • এই মুহূর্তে দে । শ
  • অক্টোবর ২৯, ২০২৪

জোড়া কবির কালীপুজো কালনায়

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
জোড়া কবির কালীপুজো কালনায়

একজন লিখেছিলেন, ‘মজিল মন-ভ্রমরা, কালী-পদ-নীলকমলে, / যত বিষয়-মধু তুচ্ছ হৈল, কামাদি কুসুম সকলে।’
রক্ষাকালী, শ্যামাকালী না বামাকালী— কোন কালী ভালো? এ প্রশ্নের প্রতীকী জবাব দিয়েছেন আরেক কবি ‘লিখতে পারলে সব কালিই ভালো।’

সাধক কবি কমলাকান্ত আর ভবা পাগলা, দুই গীতিকারের কালীপুজোয় ফি-বছর মাতে কালনা। কালনা শহরের বিদ্যাবাগীশ পাড়ায় জন্ম সাধক-কবি কমলাকান্তর। আর দেশভাগের পর বাংলাদেশের হাটখোলা থেকে এপার বাংলায় এসে কালনার শাসপুরে ১৩৫৭ বঙ্গাব্দে মন্দির প্রতিষ্ঠা করে একের পর এক গান রচনার পাশাপাশি বছরভর কালীপুজো শুরু করেন ভবা পাগলা। দীপান্বিতার কালীপুজোয় বিশেষ ভোগ-আরতির ব্যবস্থা থাকে। শহরের বিশিষ্ট কবি মনোরঞ্জন সাহার কথায়, ‘সাধারণত ঋতুকালীন সময়ে মেয়েরা কোনও দেবালয়ের ছায়া মাড়ান না। ভবা পাগলা সেসব বিধিনিষেধ তুলে দিয়েছিলেন। বলিপ্রথার ঘোরতর বিরোধী ভবা পাগলা এলাকায় বলিদানের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলেছিলেন।’ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে বুক দিয়ে আগলে রাখা ভবা পাগলার সৃষ্টি, ‘মায়ের কাছে সবাই সমান, / কিবা হিন্দু, কী মুসলমান।’

জন্মভিটে কালনায় অবশ্য বেশিদিন থাকা হয়নি গৃহী-কবি কমলাকান্তর। মাত্র ১১ বছর বয়সে মায়ের সঙ্গে গলসি থানার চান্না গ্রামে মামারবাড়িতে ঠাঁই নেন কমলাকান্ত। ১২১৬ বঙ্গাব্দে বর্ধমানরাজ তেজচন্দ মহতাবের সভাকবি হন তিনি। কমলাকান্ত কালনা ছাড়ার পর তাঁর জন্মভিটে ঝোপঝাড়ে ছেয়ে যায়। এক রাতে কমলাকান্তের ভিটেয় কালীপুজো করার স্বপ্নাদেশ পান শহরের রিকশ-চালক পূর্ণচন্দ্র বিশ্বাস। ঝোপ সাফাই করে চালা বানিয়ে শুরু করেন কালীপুজো। সেই ‘কমলাকান্তর কালীপুজো’ আজও চলে আসছে। পুজোর রমরমা বাড়ায় ১৯৭০ সালে ৪ কাঠা জমি কিনে স্থায়ী মন্দির তৈরি করে পুজো শুরু হয়। তবে আজও পুজোর প্রথম ফুলটি চড়ান পূর্ণচন্দ্র বিশ্বাসের পরিবারের সদস্যরা। এখানে নিত্যপুজো হলেও কার্তিকী অমাবস্যায় কালীপুজো হয় সাড়ম্বরে। ভক্তজনের মুখে মুখে ফেরে কমলাকান্তের সৃষ্টি, ‘চরণ কালো ভ্রমর কালো, কালোয় কালোয় মিশে গেল। / দেখ সুখ দুখ সমান হোলো, আনন্দ-সাগর উথলে।’


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!