Advertisement
  • এই মুহূর্তে দে । শ
  • মে ২০, ২০২৪

পঞ্চম দফায় ভোটের দানের হারে প্রথম পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্রে পড়ল কম ভোট

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
পঞ্চম দফায় ভোটের দানের হারে প্রথম পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্রে পড়ল কম ভোট

আজ ছিল  পঞ্চম দফা লোকসভা নির্বাচন। এই দফায় মোট ৬টি রাজ্য ও দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৪৯ আসনে ছিল ভোট। এই দফায় বিজেপি লড়েছে ৪০ আসনে। কংগ্রেস লড়েছে ১৮ আসনে। মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টির প্রার্থী সংখ্যা এবারে সর্বাধিক। তারা লড়াই করেছে ৪৬ আসনে। সমাজবাদী পার্টি প্রার্থী দিয়েছে ১০ আসনে। এই দফায় পশ্চিমবঙ্গের আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী সংখ্যা মোট ১০জন। ঝাড়খণ্ডে ৩ টি আসন,বিহারের ৫টি,পশ্চিমবঙ্গে ৭,মহারাষ্ট্রে ১৩, ওড়িশায় ৫, উত্তরপ্রদেশে ১৪, জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখের একটি করে আসনে হয়েছে ভোট গ্রহণ।

নির্বাচন কমিশন সুত্রে জানা যাচ্ছে , বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মোট ভোটদানের হার ৫৬.৬৮%। ভোটদানের হারে সবাইকে পিছনে ফেলেছে পশ্চিমবঙ্গ। এখানে ভোটদানের হার ৭৩ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখ। সেখানে ভোটদানের হার ৬৭.১৫%।তৃতীয় স্থানে ঝাড়খণ্ড (৬১.৯০)।ভোটদানের হারে সর্বনিম্ন স্থানে মহারাষ্ট্র(৪৮.৬৬%)।
এ রাজ্যে ৭৬.৯০% নিয়ে ভোটদানের হারে এগিয়ে আরামবাগ। দ্বিতীয় স্থানে সীমান্তবর্তী লোকসভা কেন্দ্র বনগাঁ(৭৫.৭৩%)।৭৪.৫০% হারে তৃতীয় স্থানে রয়েছে উলুবেড়িয়া। ভোট শতাংশের হারে দুই কেন্দ্রের মধ্যে ‘টাই’ হয়েছে। সে দুটি হল হাওড়া ও ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের ।দুই কেন্দ্রেই ভোটের হার ৬৮.৮৪%।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিক্ষিপ্ত ঘটনার খবর আসতে শুরু করে বিভিন্ন কেন্দ্রে। ডোমজুরে বিজেপি তৃণমূল সংঘর্ষে বিজেপির ক্যাম্প অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। হুগলিতে এখনও পর্যন্ত কমিশনকে পাঠানো অভিযোগের তালিকায় শীর্ষে হুগলি। উলুবেড়িয়ার একটি বুথে এক সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর জওয়ানের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয় সেই বুথ থেকে।একই ঘটনা ঘটেছে হুগলির জাঙ্গিপাড়াতেও। অভিযুক্ত আইটিবিপি জওয়ানকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুরশুড়ায় আবার তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে বিজেপির দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। ভদ্রেশ্বরে বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে ‘পাদুকা প্রদর্শন’ করে তৃণমূল। মধ্য হাওড়ার ষষ্ঠীতলায় বিজেপি কর্মীর মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ শাসক দলের বিরুদ্ধে। এলাকায় র‌্যাফ নামানো হয়েছে।এদিকে বেলুড়ে একটি আবাসনে দুষ্কৃতীরা হানা দেয়।বাসিন্দাদের ভোট না দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। যদিও কারা এর পিছনে এখনও জানা যায়নি।পাশাপাশি হুগলির ধনেখালিতে ভোট পরিক্রমা করতে গিয়ে তৃণমূল বিধায়ক অসীমা পাত্রের মুখোমুখি হন লকেট। অনুগামীদের নিয়ে বুথে পৌঁছতেই তাঁকে ‘গো ব্যাক ‘ শ্লোগান দিতে থাকে তৃণমূলের অনুগামীরা।সেখানে উপস্থিত ছিলেন অসীমা।লকেট তাঁকে লক্ষ্য করে ‘চোর চোর’ শ্লোগান দিতেই পাল্টা অসীমা ও তাঁর অনুগামীরা ‘ডাকাত ডাকাত’ শ্লোগান দিতে থাকেন। বচসা বাধে দু পক্ষের মধ্যে।
অপরদিকে , টিটাগড়ে গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বিজেপি নেতা কৌস্তুভ বাগচির। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন ‘আমার গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। বুথ জ্যাম করছিল। আমাকে হেনস্থা করা হয়েছে। এমনকী আমার নিরাপত্তারক্ষীর অস্ত্র কেড়ে নেওয়া হয়েছে। চূড়ান্ত অরাজকতা তৈরি হয়েছে। আমি বারবার ভোটারদের বোঝাতে গিয়েছিলাম যে কোনও রকম ভয় না পেয়ে যেন তাঁরা ভোট দেন। আর তারপরই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।”
যেসব কেন্দ্র এবারে নজরে ছিল সেগুলি হল- উত্তরপ্রদেশের রায়বরেলি ও অমেঠি। অমেঠিতে আগের নির্বাচনে কংগ্রেসের রাহুল গান্ধি হেরেছিলেন বিজেপির স্মৃতি ইরানির কাছে।এবারে তিনি দাঁড়িয়েছেন রায়বরেলি থেকে,,যা একপ্রকার গান্ধি পরিবারের ‘ঘরের মাঠ’ বলা যায়। লখনউ থেকে পদ্ম প্রার্থী রাজনাথ সিং, কাশ্মীরের বারামুলায় লড়েছেন ওমর আবদুল্লা( জম্মু কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্স),পীযুষ গোয়েল (মুম্বই উত্তর) এবারের অন্যতম হেভিওয়েট ।
এই দফায় পশ্চিমবঙ্গের ৭টি আসনে ভোট।সেগুলি হল– হাওড়া সদর, উলুবেড়িয়া, হুগলী, আরামবাগ, শ্রীরামপুর, বনগাঁ আর ব্যারাকপুর।
পঞ্চম দফায় রাজ্যের প্রার্থী কারা ?
১. হুগলি – লকেট চট্টোপাধ্যায় (বিজেপি), রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় (তৃণমূল ) ও মনোদীপ ঘোষ (সিপিএম)
২. শ্রীরামপুর- কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (তৃণমূল ), দীপ্সিতা ধর (সিপিএম ) ও কবীরশঙ্কর বসু (বিজেপি )
৩. আরামবাগ- মিতালী বাগ (তৃণমূল), বিপ্লব কুমার মৈত্র (সিপিএম) ও অরূপ কান্তি দিগর (বিজেপি)
৪. হাওড়া- প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় (তৃণমূল ),সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় (সিপিএম) ও রথীন চক্রবর্তী (বিজেপি)
৫. উলুবেড়িয়া- সাজদা আহমেদ (তৃণমূল ), আজহার মল্লিক (কংগ্রেস), অরুনউদয় পালচৌধুরী (বিজেপি)
৬. বনগাঁ- প্রদীপ কুমার বিশ্বাস (কংগ্রেস), বিশ্বজিৎ দাস (কংগ্রেস) ও শান্তনু ঠাকুর (বিজেপি)
৭. ব্যারাকপুর – অর্জুন সিং(বিজেপি), পার্থ ভৌমিক (তৃণমূল কংগ্রেস) ও দেবদূত ঘোষ (সিপিএম)
 সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত সরগরম ভোটপর্ব। ফলাফল প্রকাশিত হবে আগামী ৪জুন। শেষ হাসি কে হাসে,আগামী পাঁচ বছরের জন্য ‘ভারত ভাগ্যবিধাতা’ হিসেবে কে সিংহাসন আরোহণ করেন সেদিকেই তাকিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র।

  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!