- এই মুহূর্তে দে । শ
- জুলাই ১০, ২০২৪
সুপ্রিম রায়: তালাক দিলে দিতে হবে খোরপোষ

এবার থেকে তালাক প্রাপ্ত মুসলিম মহিলারাও স্বামীর থেকে খোরপোষ দাবি করতে পারবেন। বুধবার এই রায় ঘোষণা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এ অধিকার তাঁদের দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
তেলেঙ্গানার এক ব্যক্তিকে তাঁর তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে ১০ হাজার টাকা খোরপোষ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল তেলেঙ্গানা হাইকোর্ট। সে রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যান ওই ব্যক্তি। সে মামলার রায়ে বিচারপতি বিভি নাগরত্ন ও বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহের বেঞ্চ জানিয়েছেন যে ,’ ধারা ১২৫ শুধুমাত্র বিবাহিত মহিলাদের জন্য নয়, সমস্ত মহিলাদের জন্য প্রযোজ্য হবে৷’ কোর্ট জানিয়েছে , এই প্রাপ্য খোরপোষের অধিকার সব ধর্মের মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
ফৌজদারি আইনের ১২৫ ধারা অনুযায়ী একজন ব্যক্তি তাঁর স্ত্রী, সন্তান, পিতামাতার ভরণপোষণের কর্তব্যকে কখনও অস্বীকার করতে পারেননা।
রায় ঘোষণা করতে গিয়ে আদালত জানিয়েছে, ভরণপোষণ কোনও দয়ার দান নয়। এটি একজন বিবাহিত নারীর মৌলিক অধিকার। এই অধিকার ধর্মীয় সীমানা অতিক্রম করে, সমস্ত বিবাহিত মহিলাদের জন্য লিঙ্গ সমতা এবং আর্থিক নিরাপত্তার নীতিকে শক্তিশালী করে।’
জাতীয় মহিলা কমিশনের সভাপতি রেখা শর্মা আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন।
তেলেঙ্গানার মহম্মদ আবদুল সামাদকে পারিবারিক আদালত তাঁর তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে মাসিক ২০হাজার টাকা ভাতা প্রদানের নির্দেশ দেয়। সামাদ হাইকোর্টে আবেদন করলে টাকার অঙ্ক কমে দাঁড়ায় ১০ হাজারে। সামাদ এবার উচ্চ আদালতে আবেদন জানান। সে আবেদনের শুনানিতে শীর্ষ আদালত আজকে এই যুগান্তকারী রায় দিয়েছে।
এই রায় আজ থেকে ৩৯ বছর আগের শাহ বানো মামলার কথা মনে করিয়ে দেয় । তখন সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল যে, ফৌজদারি আইনের ১২৫ ধারা অনুযায়ী একজন তালাকপ্রাপ্তা সংখ্যালঘু মহিলা তাঁর স্বামীর কাছে ভরণপোষণের দাবি জানাতে পারেন। পরে ১৯৮৬ সালে এই আইনকে কিছুটা লঘু করে বলা হয় ,তালাকের ৯০ দিন পরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মহিলারা শুধুমাত্র ইদ্দতের সময় ভরণপোষণ চাইতে পারেন ।
২০০১ সালে সুপ্রিম কোর্ট ১৯৮৬ আইনের সাংবিধানিক বৈধতা বহাল রাখে। কিন্তু রায় দেয় যে একজন পুরুষ , যতক্ষণ না পর্যন্ত তাঁর স্ত্রী নিজের পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম না হচ্ছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত তাঁর তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে ভরণপোষণ প্রদানে বাধ্য থাকবেন । তবে আজকের রায়ের পর বিচারপতি নাগরত্ন জানিয়েছেন, ‘দেশের পুরুষ সম্প্রদায়ের একাংশ তাঁদের স্ত্রীদের অধিকার রক্ষার ব্যাপারে সচেতন নন। অথচ স্ত্রী তাঁর স্বামীর পরিবারের সঙ্গে আবেগগতভাবে ও অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ে নির্ভরশীল থাকে। এখন সময় এসেছে ভারতের পুরুষ সমাজকে পরিবারের জন্য গৃহিণীদের অপরিহার্য ভূমিকা এবং ত্যাগকে স্বীকৃতি দেওয়ার সময় এসেছে। ‘
❤ Support Us