Advertisement
  • দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • জুন ২০, ২০২৪

পরীক্ষার আগের রাতে হাতে এসেছিল নিটের প্রশ্ন পত্র, বিস্ফোরক দাবি ধৃত পরীক্ষার্থীদের

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
পরীক্ষার আগের রাতে হাতে এসেছিল নিটের প্রশ্ন পত্র, বিস্ফোরক দাবি ধৃত পরীক্ষার্থীদের

নিট কেলেঙ্কারি কাণ্ডে নয়া মোড়। এতদিন কেন্দ্রের তরফে নাগাড়ে দুর্নীতির কথা অস্বীকার করা হলেও বিহারের ধৃত চার অভিযুক্ত স্বীকার করে নিলেন যে পরীক্ষার্থীদের দাবি নেহাত অমূলক নয়।

গত কদিন ধরে ডাক্তারি সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট দেশের রাজনীতির ময়দান সরগরম করে তুলেছে। ছাত্রছাত্রীরা প্রশ্নপত্র ফাঁসের দাবি করেছেন। পাশাপাশি ১৫০০-র বেশি পরীক্ষার্থীকে বাড়তি নম্বর দেওয়ার তীব্র বিরোধিতা করেছেন তাঁরা।মেধাতালিকায় একসঙ্গে ৬৭ জনের প্রথম স্থানে থাকা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন পরীক্ষার্থীদের একাংশ। ঘটনা শেষপর্যন্ত আদালত অবধি গড়ায়। আদালত বাড়তি নম্বর বাতিল করে ও পরীক্ষার্থীদের দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়। কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী দেবেন্দ্র যাদব আগাগোড়া দুর্নীতির অভিযোগকে নস্যাৎ করে দিলেও বিহার থেকে ধৃত ওই চার ব্যক্তি ছাত্রছাত্রীদের আশঙ্কাকে সত্যি বলে প্রমাণ করে দিলেন।

ধৃত চার ব্যক্তি হলেন অনুরাগ যাদব, সিকান্দার যাদবেন্দু, নীতিশ কুমার, অমিত আনন্দ। এদের মধ্যে সিকান্দার দানাপুর পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার পদে চাকরি করেন। তাঁরা সবাই স্বীকার করেছেন যে পরীক্ষার আগের দিন তাঁরা প্রশ্নপত্র হাতে পেয়ে যান। অনুরাগ পুলিশকে জেরায় জানিয়েছেন, তিনি পরীক্ষায় বসার জন্য রাজস্থানের কোটা থেকে বিহারের সমস্তিপুরে ফিরেছিলেন । তাঁর সঙ্গে পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার সিকান্দারের যোগাযোগ হয় । সিকান্দারের মাধ্যমে নীতিশ ও অমিতের সঙ্গে তাঁর মোলাকাত ঘটে। ওই তিনজনের যোগসাজশে নিটের আসন্ন প্রশ্নপত্র তাঁর কাছে পৌঁছায়। তাকে বলা হয় সারারাত ধরে সেই প্রশ্নপত্রের উত্তর মুখস্ত করে রাখতে। পরের দিন অনুরাগ দেখেন , পরীক্ষায় ঠিক একইরকম প্রশ্ন এসেছে। পরীক্ষার পর পুলিশ এসে তাঁকে আটক করে । পুলিশের কাছে তাঁর অপরাধ স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন অনুরাগ।

যাদবেন্দু দাবি করেছেন, নীতিশ ও অমিত তাকে জানিয়েছে যে তাঁরা দুজন যে কোনও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করতে সিদ্ধহস্ত। নিট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে এর জন্য পরীক্ষার্থীদের খরচ করতে হবে ৩০লক্ষ থেকে ৩২ লক্ষ টাকা। পুলিশের জেরায় তিনি জানিয়েছেন, ওই দুই ধৃতকে তিনি জানিয়েছিলেন যে এমন চারজন নিট পরীক্ষার্থী তাঁর সন্ধানে রয়েছে । জুনের ৪ তারিখ তিনি ওই চারজনকে নীতিশ ও অমিতের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তিনি ওই পরীক্ষার্থীদের কাছে ৩০ লক্ষ নয়, একেবারে ৪০ লক্ষ দাবি করে বসেন।

এবারে ২৪ লক্ষের বেশি পরীক্ষার্থী নিট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। ফল প্রকাশের পর দেশের নানা জায়গায় বিক্ষোভ, ধর্না প্রদর্শন করেন পরীক্ষার্থীরা। কেন্দ্র ও জাতীয় পরীক্ষা গ্রাহক সংস্থা এন টি এ-র দিকে আঙুল তোলেন তাঁরা। আদালতের কাছেও ভর্ৎসিত হয় পরীক্ষা গ্রাহক সংস্থাটি। পরীক্ষা বাতিলের দাবীও তোলেন তাঁরা। এ আবহে সর্বভারতীয় অধ্যাপক ও গবেষক নিয়োগের পরীক্ষা ‘নেট’ বাতিল করে দিল এন টি এ।
ফলে ‘নিট’ পরীক্ষা বাতিলের দাবীও উঠেছে বিভিন্ন মহলে। বিরোধী দলগুলিও এই পরিস্তিতিতে তাদের রাজনৈতিক অস্ত্র শানাচ্ছে । কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধি বলেছেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটছে। ওই রাজ্যগুলিকে ‘প্রশ্নফাঁসের এপিসেন্টার’ বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি।

এমন পরিস্থিতিতে স্বভাবতই অস্বস্ত্বিতে শাসক দল বিজেপি। এতদিন তারা দুর্নীতি না হওয়ার যে দাবি করে এসেছেন তা যে ধোপে টিকল না , তা স্পষ্ট।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!