Advertisement
  • দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • জুন ২৬, ২০২৩

“তিনটে ভোট তৃণমূলকে দিন, আমি আপনাদের গার্জেন হয়ে সব কাজ করে দেব”, চান্দামারির প্রচার সভায় প্রতিশ্রুতি মমতার

১০০ দিনের কাজে টাকা দি্চ্ছে না অথচ মানুষের টাকায় বিদেশ সফর, কোচবিহারের সফায় মোদির বিরুদ্ধে সরব মমতা

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
“তিনটে ভোট তৃণমূলকে দিন, আমি আপনাদের গার্জেন হয়ে সব কাজ করে দেব”, চান্দামারির প্রচার সভায় প্রতিশ্রুতি মমতার

একদিকে ডাবল উঞ্জিন সরকারের সমালোচনা, বিএসএফকে নিশানা অন্যদিকে নিজের সরকারের সাফল্য তুলে ধরে পাশাপাশি প্রার্থীপদ বিলি নিয়ে দলীয় কোন্দল অবসানে হাল্কা হুঁশিয়ারি দিয়ে সোমবার কোচবিহারের চান্দামারি প্রাণনাথ হাই স্কুলের মাঠে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচার শুরু করলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা সোজাসুজি বললেন, “তিনটে ভোট তৃণমূলকে দিন, আমি আপনাদের গার্জেন হয়ে সব কাজ করে দেব। মিথ্যেবাদী বিজেপিকে বিশ্বাস করবেন না। ১০০ দিনের কাজের টাকা না দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমেরিকা ঘুড়ছে দেশের মানুষের টাকায়। রাশিয়া ঘুরছেন প্লেন কিনতে। উনি নেতা হবেন। ভয় পাবেন না এই গুন্ডাদের। হাতা খুন্তি লইয়া বিজেপিরে দেও তাড়াইয়া। ডাবল ইঞ্জিন সরকারের একটা ফুটো হবে পঞ্চায়েতে আর একটা ফুটো হবে লোকসভায়।”

সোমবার কোচবিহারের চান্দামারি প্রাণনাথ হাই স্কুলের মাঠ থেকে ২০২৩ এর পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচার শুরু করলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই প্রথম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রচারে এলেন ২০১১ র পর।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিনের সভা থেকে বলেন, “বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেসকে তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে সমালোচনা করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস এক হয়েছে। কালও বলেছে মহাঘোট। আমি বলছি দিল্লিতে জোট হবে। বাংলাটা আমি দেখব।”

এদিন সভার শুরুতে বিএসএফ-এর নাম করে বিজেপিকে নিশানা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি এখানে এসে দেখতে পেলাম ২টি পরিবারকে, যাদের বিএসএফ গুলি করে মেরেছে। এর আগে শীতলকুচিতেও ৪জনকে গুলি করে বিএসএফ মেরেছে। কুচবিহারে গুলি করে মারাটা যেন অধিকারে পড়েছে। এরা করবে দেশ শাসন? আমি বলছি বিএসএফ গুলি করলে পুলিচকে জানান। পুলিশ এফআইআর করবে। আগে সীমান্ত থেকে ১৫ কিলো মিটার বিএসএফ -এর এরিয়া ছিল। এখন তাকে ৫০ কিলোমিটারে পরিণত করেছে। বলছে গুলি করব। ভয় দেখালে জানাবেন। আইলশৃঙ্খলা রাজ্যের অধীনে।”

এর পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মনে রাখবেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে তিনটি ভোট তৃণমূলকে দিন। মানুষ জানে আমি তাদের গার্জেন। যেখানে যে বিপদে পড়ে আমি সাহায্য করি।”
কেচবিহারের উন্নয়ন প্রসঙ্গে তৃণমূলনেত্রী এরপর বলেন, “কোচবিহার আগে কী ছিল এখন কী হয়েছে আপনারা জানেন। সব শ্রেণির মানুষদের তৃণমূল নিজের পায়ে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। কেচবিহার বিমানবন্দর তৃণমূল করেছে। পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ, ইঞ্জিনিয়াটিং কলেজ, মদনমোহন মন্দির, দরগা করল কে? তৃণমূল কংগ্রেস আবার কে?” এভাবেই কোচবিহার উন্নয়নের ফিরিস্তি দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

কোচবিহারের অতীত টেনে এনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মনে রাখবেন আগে আমি কোচবিহার আসতাম। রাস্তায় বড় বড় গর্ত ছিল। এখন সুন্দর রাস্তা করেছি। রাস্তার টাকা, ১০০ দিনের টাকা দিচ্ছে না। জিএসটি নেয় কিন্তু ডাবল ইঞ্জিন সরকার, বিজেপি সরকার ৭ হাজার কোটি টাকা দেয়নি। এই টাকা পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর আদায় করে ছাড়ব। আগামী দিনে পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে পরাজিত করে নতুন সরকার করে এই টাকা নিয়ে আসব। আমায় ২ বছর সময় দিন বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেব। আমি গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে বলেছিলাম ছাত্রছাত্রীদের স্মার্ট কার্ড, কৃষকদের সহায়তা, লক্ষ্মীর ভান্ডার, দুয়ারে রেশন দেব সেটা হয়েছে কি হয়নি? আমিনসব করেছি। এখন ২৫ বছর বয়সের মহিলা বাড়িতে থাকলেই লক্ষ্মীর ভান্ডার পাবেন। ৬০ বছর হলে ১ হাজার টাকা করে আজীবন পাবেন। এখন বিজেপি বলছে ২ হাজার, ৩ হাজার টাকা লক্ষ্মীর ভান্ডার দেবে।”
এর পর প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরকে টেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নরেন্দ্র মোদি আমেরিকা গিয়ে দেশের টাকা খরচ করে, রাশিয়া গিয়ে প্লেন কিনছে, অন্যদিকে ১০০ দিনের টাকা দিতে পারে না, এই হচ্ছে ডাবল ইঞ্জিন সরকার, উনি  নেতা হবেন।”
রাজ্যের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প উল্লেখ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আগে মেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হত। আমি কন্যাশ্রী করে দিয়েছি। ওবিসিদের জন্য মেধাশ্রী, মেয়ের বিয়ের জন্য ২৫ হাজার টাকা দিয়েছি। এতোদিন পঞ্চায়েতকে গুরুত্ব দিইনি। এবার ৯৯ শতাংশ জায়গায় প্রার্থী ঠিক হয়েছে। অভিষেক, যুবরা জেলায় জেলায় ঘুরে এটা করেছে। পঞ্চায়েতে কাজ পেতে এক পয়সা দেবেন না। যদি কেউ টাকা চায় তার ছবি তুলে আমার কাছে পাঠান, দেখি তার কত বড় ক্ষমতা।
মনে রাখবেন তিনটে ভোট দিতে হবে। একটা দিয়ে চলে আসবেন না। একটা গ্রাম সভায়, একটা পঞ্চায়েত সমিতিতে, একটা জেলা পরিষদে। আমরা কাকে ভোট দেব? জোড়া ফুল দেখিয়া ভোট দাও ঠাসিয়া। এক দুই তিন বিজেপিকে বিদায় দিন। আমি ভুলিনি বর্ণালী দাসের মৃত্যু। সীমান্তে যদি গুলি করে মারলে জানাবেন। বিজেপি কি মনে করে? মা বোনেদের বলব, হাতা খুন্তি লইয়া বিজেপিকে দাও খেদাইয়া। ভয় পাওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। আপনারা যা বলেছেন করে দিয়েছি। ভরসা রাখুন আগামী দিনে সব করে দেব। ৪৩ কোটি টাকা দিয়েছি নলকূপের জন্য, জল না পেলে ডিএমকে বলুন।
আপনাগো পোলামাইয়ারে গুলি কইরা মারে। একটা হোম মিনিস্টার গুন্ডা হতে পারে? এখন আফ্রিকা ঘুড়ছে। এরপর কনভয় নিয়ে ঢুকে পড়বে, মনে রাখবেন এটা হতে পারে না।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এদিন খুব সতর্ক হয়ে কথা বলেন ভাষণে। প্রতিছত্রে বিরোধীদের সমালোচনার পাশাপাশি দলে প্রার্থীপদ বিলি করা নিয়ে দলীয় কোন্দল বরদাস্ত না করার হালকা হুমকি দিয়ে মমতা বলেন, “তৃণমূলকে আপনারা শুধু তিনটিনভোট দিন, বাকি দায়িত্ব আমার।”


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!