- এই মুহূর্তে দে । শ
- সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৪
আর জি কর দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি রেকর্ড গড়া সাঁতারুর
বিদেশে থাকতেই আর জি কর কাণ্ডের খবর পেয়ে ‘শিউরে উঠেছিলেন’, ‘ভয় পেয়েছিলেন’। প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসেবে নর্দান আয়ারল্যান্ড থেকে স্কটল্যান্ড ৩৪ কিমি দীর্ঘ ভয়ঙ্কর নর্থ চ্যানেল জয় করে নিজের বাড়ি কালনার বারুইপাড়ায় ফিরে জানালেন সাঁতারু সায়নী দাস। ফিরেই আর জি কর কাণ্ডে দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবিতে সরব হলেন সায়নী। অপরাজিতা বিলের প্রতিটি অক্ষরের সঙ্গেও সহমত পোষণ করেন সায়নী। বললেন, ‘আর জি করের ঘটনা যখন ঘটে, তখন আমি আয়ারল্যান্ডে নর্থ চ্যানেল জয়ের জন্য অনুশীলনে মগ্ন। খবরটা শুনে খুবই মর্মাহত হই। নিজেও খুব ভয় পাচ্ছিলাম।’ তারপরই নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ‘আর জি কর কাণ্ডে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি’র দাবিতে একটি পোস্টও করেন। দমদম বিমানবন্দরে নামার পরই একদল কচিকাঁচা সায়নীর হাতে একটি প্ল্যাকার্ড তুলে দেয়। তাতে ইংরাজিতে লেখা, আর জি কর উই ওয়ান্ট জাস্টিস। আর বাংলায় লেখা, বিচার চাই, বিচার দাও। প্ল্যাকার্ডের দাবিগুলিতে সোচ্চার হন সায়নী। কালনায় ফেরার পরও সায়নীর কাছে আর জি কর প্রসঙ্গ তোলেন সাংবাদিকরা। সায়নী বলেন, ‘আশা করব মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। আর জি কর কাণ্ডের নির্যাতিতার পরিবার সঠিক বিচার পাবে। দোষীদের কঠোর শাস্তি হবে।’তবে ‘জাস্টিস চাইতে’ এক্ষুণি রাস্তায় নামছেন না সায়নী। সমুদ্র জয়ের কঠিন লড়াইয়ে জিতলেও মেরুদণ্ডে জোর চোট লেগেছে। তবে সাফ জানালেন, ‘প্রতিবাদের সমর্থন রয়েছে। প্রতিবাদীদের পাশে আছি।’
সায়নীর সপ্তসিন্ধু জয়ের লক্ষ্য পূরণে আরও দুটি চ্যানেল বাকি রইল। স্পেন আর মরক্কোর মাঝের জিব্রালটার আর জাপানের হনসু ও হোক্কাইডোর মাঝে সুগারু। ওই ২ চ্যানেল কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চেয়ে ইতিমধ্যেই আবেদন জানিয়েছেন সায়নী। এখন সম্মতির অপেক্ষায় দিন গোনা। তবে ওই ২ চ্যানেল জয় করতে যে খরচ হবে, সেটা কীভাবে জোগাড় করবেন, সেই দুশ্চিন্তাও রয়েছে সায়নীর বাবা তথা প্রশিক্ষক রাধেশ্যাম দাসের। তিনি বললেন, ‘এক-একটা চ্যানেলে নামতে ১৩ থেকে ১৪ লাখ টাকা দরকার। সায়নী প্রথম যখন ইংলিশ চ্যানেল জয় করতে নামে, তখন খরচ জোগাড় করতে নিজের বাড়ি বন্ধক দিতে হয়েছিল। তার পর থেকে কয়েকজন শুভাকাঙ্ক্ষী কিছু কিছু অর্থসাহায্য করছেন। কিন্তু সেই টাকায় সায়নীর খরচই সবটা ওঠে না।’
এদিকে বাড়ি ফিরে আত্মীয়, পড়শি, শুভানুধ্যায়ীদের সঙ্গে নর্থ চ্যানেল জয়ের কঠিন অভিজ্ঞতা শোনাচ্ছিলেন সায়নী। লড়তে হয়েছে হাড়হিম উজান স্রোতের বিরুদ্ধে। সেইসঙ্গে পদে পদে জেলিফিশের হামলা। সায়নীর কথায়, ‘শেষ ৩ কিমি পেরনো সাঙ্ঘাতিক কঠিন হয়ে পড়েছিল। একসময় মনে হচ্ছিল এ যাত্রায় আর নর্থ চ্যানেল জিতে ভারতের তেরঙা ঝাণ্ডা ওড়ানো যাবে না।’ সায়নীর কাছেই জানা গেল, সায়নীর সঙ্গেই নর্থ চ্যানেল জয় করতে নেমেছিলেন কাজাখস্থান, আমেরিকা ও আয়ারল্যান্ডের আরও ৩ সাঁতারু। দুজন মাঝপথেই রণে ভঙ্গ দেন। একজন লক্ষ্যে পৌঁছলেও সায়নীর থেকে বেশি সময় নিয়েছেন। তবে পঞ্চসিন্ধু এখন সায়নীর কাছে অতীত। জিব্রালটার আর সুগারু চ্যানেল জয় করে ‘সেভেন ওশেন’ (সপ্তসিন্ধু) জয়ের বিরল রেকর্ড গড়াই এখন থেকে ‘পাখির চোখ’ এই বঙ্গতনয়ার।
❤ Support Us