Advertisement
  • Uncategorized ক | বি | তা রোব-e-বর্ণ
  • মে ২১, ২০২৩

গুচ্ছ কবিতা

রাজকুমার রায় চৌধুরী
গুচ্ছ কবিতা

চিত্র: মুকুল কুমার বারি

অনন্য রূপে


মৃদু স্পর্শে শরীর খুলে যায় আজ ক্রমশ। ও বিবিদান, অভিসন্ধিমূলক এ কী তোমার খেলা।
পুনর্জন্মে বিশ্বাসী নই। দেখি রুপের এই অভিযান। শরীর বিঁধে যায় অনন্য রূপে একার শরীর।


আমার আজ আর কোন গল্প নেই । শুধু তোমার কথাই বলি । তোমার সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছি কোন্ খেলায় ?
নিঃসঙ্গতায় আজ বাতাস বয় । অসম্পূর্ণতা বলে কোন কথা হয় না । ঠিকানা চায় চিরকালীন অপেক্ষা, আড়াল ও সৌন্দর্য ।


এনেছি তোমার জন্য স্বর্ণচাঁপা, গ্রহণ করো স্বপ্নের এপার ওপার…
অপেক্ষার আড়ালে তর্জনি তুলে লেখো তুমি আমাকে বহুদূর অবধি
যথেষ্ট সংকেত অল্প হাসি বিলিয়ে দিচ্ছো, ধার বাড়িয়ে রঙিন শহরের
মৃদুস্বরে পিয়ানো বাজে, ফাটল ধরায় গভীরে, আশ্চর্য দুটি ওই চোখে
কে ভেঙে ফেলেছে সুন্দর খুনসুটির আড়ালে নান্দনিক পলাশের রঙে…
সান্ধ্য টেবিলের অন্ধকারে স্পর্শময় গ্রন্থ খুলে যায় তার নীরব পাতা
অশ্রুদিন সামান্য হাওয়ায় নড়ে চড়ে ওঠে; তৃষ্ণার্ত চোখে কে দেখে ?

বর্ষার সংকেত টের পাও টুকরো টুকরো মেঘের গায়ে লেখো কার নাম ?

 

স্ত্রী বিষয়ে পদ্য


আমার স্ত্রীর পায়ের নীচে আটকে আছে একটা রঙিন সমুদ্র । ও ধীর লয়ে তার ভিতর নামে । ভালোবাসাময় জল অপেক্ষায় থাকে, ওকে ভিজিয়ে দেবে বলে । অলীক একটা জলের ফোঁটা খুব নীরবে বড়ো হয়ে ওঠে, বলে আমিই তো আমার বিরহবিধুর অশ্রুজল ।


শীতকে কে বেঁধেছে আজ সোনালি কাঁটায় ? সে ঠান্ডাকে আটকায় চঞ্চল আঙুলের অপার্থিব শিল্পে । শীতের রঙিন পোশাকে আমি ঢাকা পড়ে যাচ্ছি ক্রমশ । কেমন অকেজো ও কাহিল হয়ে যাচ্ছে শীতের বাতাস । প্রকৃতি হাওয়া পুষ্পেভরা গাছের মধ্যে দিয়ে বয়ে যায় দিগন্ত অবধি…আর তুমি বেঁধেছ সহস্র ছিদ্রময় শীতকে মরুভূমি উত্তাপে ।


লেখার খাতায় ফাটল ধরে উঠে আসে বূহৎ একটি প্রাচীন বাড়ি। শহরের রোদ্দুর গাঢ় হয়, তুমি ছুটে আসো আঁধার ঢাকা পথ পেরিয়ে।বলো, আমি তো তোমার খাতা দেখে বুঝেছি, তুমি এখানেই। তোমার তন্তুজ শাড়ি উড়িয়ে শুরু হয়েছিল আমাদের গোপন প্রণয়। তোমার নীচে নামিয়ে রাখি এই মূর্খ কলম।তুমি মধ্যদুপুরে নামিয়ে দাও গাছের ওপর অনেক সবুজ। টুপটুপ সবুজ পড়ে জ্যৈষ্ঠ রোদে। সেই তুমি সারাজীবন আসন পেতে লিখে চলেছ.. শুক্তো সরষে রাঁধুনি বাঁটার সঙ্গে অজস্র ব্যঞ্জনে- বেগুন, ডাঁটা ও বড়ির ভালোবাসাবাসি…


স্বভাবে শান্ত স্বপ্নটি নিয়ে বসে আছো চমৎকার। চিন্তার সৌন্দর্য কাঁপে ওই দৃষ্টিতে।অনেক প্রশ্ন নিয়ে শুধু আফসোস করো।নিজেকে প্রস্তুত রাখো আগুন ও হাওয়ার নীচে। শুনতে পাচ্ছো জানালার বাইরে কারো ফিরে আসা ! স্থির দূষ্টিতে আবহাওয়াবিদ হয়ে নিঃশব্দে তাকিয়ে থাকো দেবীর মতন নিরাসক্ত খেলার রাজ্যপাটের দিকে।

চিত্র: মুকুল কুমার বারি

মা


কালো অক্ষরগুলি নেমে আসে আজ মধ্যরাতে
আকাশ টেনে নেয় দুহাত রাশি রাশি জোনাকি আলোয়
কে বলে মধুর কন্ঠে, এলি? কথা বলেছ স্তব্ধতা একা একা…


স্পর্শময় সম্পর্কটি মুহূর্ত ফুটে উঠেছে চাঁদের রহস্যে
মা বলে, মানুষ কি চিরকাল বাঁচে? তাই চলে যাওয়া…
বুঝি নির্বিকার এফোঁড়-ওফোঁড় শুধুই অন্ধকার বাজে।


নির্লিপ্ত অ্যালবাম যৌথ উচ্ছ্বাসে ঝলমল করে চারদিক,
দিব্যি উঁকি মারো চেনা বাড়ির সাফল্য ও স্রোতের নীচে।


দিগন্তরেখার মধ্যে চুল খুলে রাখো, বাজে সোনার কাঁকন
ফোড়নের গন্ধে, শাসন ও পাহারায়, শ্বাস নাও তুমি রোজ।

♦♣–♦♣  ♦♣–♦♣  ♦♣–♦♣

 

 


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!