- এই মুহূর্তে মা | ঠে-ম | য় | দা | নে
- মে ৮, ২০২৪
বাধা–বিপত্তি কাটিয়ে প্যারিসের টিকিটের অপেক্ষায় উঠতি প্রতিভা শৈলি সিং

বছর তিনেক আগে অনুর্ধ্ব ২০ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে মহিলাদের লং জাম্পে ৬.৫৯ মিটার লাফিয়ে রুপো জিতে গোটা দেশকে চমকে দিয়েছিলেন শৈলি সিং। তখন থেকেই তাঁকে ভারতীয় অ্যাথলেটিক্সে উঠতি তারকা হিসাবে দেখা হচ্ছিল। শৈলির গায়ে সেঁটে যাওয়া সেই ট্যাগ যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত। কারণ রাবাহিকভাবে ভারতের তিন সেরা মহিলা লং জাম্পারদের মধ্যে রয়েছেন উত্তরপ্রদেশের এই লং জাম্পার। শৈলির লক্ষ্য এখন প্যারিস অলিম্পিকের টিকিট জোগান করা।
এপ্রিলে বেঙ্গালুরুতে ইন্ডিয়ান গ্র্যাঁ প্রি ১–এ ৬.৫২ মিটার লাফিয়ে সোনা জিতেছিলেন শৈলি। তার ঠিক ১০ দিন আগে ইন্ডিয়ান ওপেনে লং জাম্পে ৬.৪০ মিটার লাফিয়ে দ্বিতীয় হয়েছিলেন। দুটি প্রতিযোগিতাতেই প্যারিস অলিম্পিকের যোগ্যতামান ৬.৮৬ মিটার অতিক্রম করতে পারেননি। যদিও এখনও অলিম্পিকের আশা শেষ হয়ে যায়নি শৈলির কাছে। এখনও সুযোগ আছে তাঁর সামনে।
অলিম্পিকে যোগ্যতা অর্জনের শেষ সময়সীমা হল ৩০ জুন। অলিম্পিকের যোগ্যতামান যদি শৈলি নাও স্পর্শ করতে পারেন, তবুও তাংর সামনে সুযোগ থাকবে প্যারিস যাওয়ার। সেক্ষেত্রে বিশ্বের প্রথম ৩২ জন লং জাম্পারের মধ্যে থাকতে হবে। এই মুহূর্তে বিশ্বে ৩৭ নম্বরে রয়েছেন শৈলি। তাঁর আশা ৩০ জুনের মধ্যে বিশ্বের প্রথম ৩২ জনের মধ্যে ঢুকে পড়বেন।
আশাবাদী শৈলির পরামর্শদাতা অঞ্জু ববি জর্জ ও প্রশিক্ষক রবার্ট ববি জর্জ। এই মুহূর্তে বেঙ্গালুরুর অঞ্জু ববি হাই পারফরম্যান্স সেন্টারে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন শৈলি। অঞ্জু ও রবার্টে আত্মবিশ্বাসী, ২০ বছর বয়সী শৈলি শুধুমাত্র তাঁর প্রথম অলিম্পিকের জন্য যোগ্যতা অর্জন করবেন না বরং ধারাবাহিকভাবে ৬.৮০ মিটারের সীমায় লাফ দেওয়ার দক্ষতা রয়েছে। রবার্ট বলেন, ‘অলিম্পিকে প্রবেশের মান অনুযায়ী কোয়ালিফাই করতে পারলে দারুণ ব্যাপার হবে। কিন্তু আমরা র্যাঙ্কিং রুটকে টার্গেট করছি।’
শৈলি অলিম্পিক যোগ্যতা মান ৬.৮৬ মিটারের কাছাকাছি আসতে পারেন, আত্মবিশ্বাসী অঞ্জু ববি জর্জও। তাঁর কথায়, ‘শৈলির দরকার কিছু ছোটখাটো প্রযুক্তিগত সমন্বয়। এই জিনিসগুলি পেশী শক্তিতে পরিণত হতে সময় নেয়। তবে শৈলি অবশ্যই আমার জাতীয় রেকর্ড ভাঙতে পারে।’ ২০ বছর আগে গড়া অঞ্জু ববি জর্জের ৬.৮৩ মিটারের জাতীয় রেকর্ড আজও অক্ষত । গতবছর শৈলির সেরা লাফ ছিল ৬.৭৬ মিটার।
প্যারিস অলিম্পিকের ছাড়পত্র যদি পান শৈলি, দারুণ ব্যাপার হবে। শুধু শৈলি নন, প্যারিসের টিকিটের অপেক্ষায় ভারতের আরও দুই মহিলা লং জাম্পার হ্যাংঝৌ এশিয়ান গেমসের রুপোজয়ী অ্যান্সি সোজান (সেরা লাফ ৬.৬৩ মিটার) ও নয়না জেমস (সেরা লাফ ৬.৬৭ মিটার)। অলিম্পিকের ছাড়পত্রর জন্য শৈলিকে ধারাবাহিকভাবে ৬.৮০ মিটারের ওপরে লাফ দিতে হবে। অর্থাৎ প্র্যাকটিসে ৬.৭০ মিটারের ওপরে। সাধারণত প্র্যাকটিসের থেকে প্রতিযোগিতায় জাম্পারদের লাফ ১০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি হয়। এই মুহূর্তে ৬.৬০ থেকে ৬.৬৫ মিটার পর্যন্ত লাফাতে পারছেন শৈলি।
রবার্ট এবং অঞ্জু কাজ করার জন্য মূল প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করেছে৷ তাঁর ৩৪.৫ মিটার দৌড়ে আরও ভাল শক্তি বাড়াতে হবে শৈলিকে। রবার্টের কথায়, ‘আমাদের টেক-অফের ঠিক আগে তার ভরের কেন্দ্র সামঞ্জস্য করতে হবে এবং টেক-অফের সময় তার নিতম্বের প্রসারণ উন্নত করতে হবে। দূরত্ব বাড়ানোর জন্য তাকে বাতাসে নিজেকে আরও বেশিক্ষণ ধরে রাখতে হবে। এটা সবই শক্তি বন্টনের সঙ্গে সম্পর্কিত, যার অর্থ গতির একটি প্রগতিশীল বিল্ড আপ।’
এই জায়গায় পৌঁছতে শৈলিকে যথেষ্ট লড়াই করতে হয়েছিল। চোট ও অসুস্থতার জন্য অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের এই জাম্পার। চোটের কারণে ২০২২ সালে প্রায় ৯ মাস ট্র্যাকের বাইরে ছিলেন। এছাড়া, গত বছর কোভিডের সঙ্গে লড়াই করে সেরে উঠতে তিন মাস সময় লেগেছিল। এশিয়ান গেমসেও হতাশাজনক পঞ্চম স্থানে শেষ করেছিলেন। সবকিছু ভুলে শৈলির লক্ষ্য প্যারিস অলিম্পিক।
❤ Support Us