Advertisement
  • এই মুহূর্তে দে । শ
  • মে ২২, ২০২৪

ধেয়ে আসছে ‘রেমাল’ , গুঁড়িয়ে দেবে বসতবাড়ি। বঙ্গীয় সমতটে ভয়াবহ সঙ্কটের সঙ্কেত। রেহাই নেই অসম কিংবা বাংলাদেশের

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
ধেয়ে আসছে ‘রেমাল’ , গুঁড়িয়ে দেবে বসতবাড়ি। বঙ্গীয় সমতটে ভয়াবহ সঙ্কটের সঙ্কেত। রেহাই নেই অসম কিংবা বাংলাদেশের

আরও এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হতে পারে বঙ্গীয় সমতট! চার বছর আগের ‘আমফান আতঙ্কে’র চিহ্ন এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি  রাজ্যের বেশ কিছু এলাকা। তার মধ্যে নতুন একটি ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসতে চলেছে  এ রাজ্যের দিকে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে , বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল ও তার সংলগ্ন এলাকায়  ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১.৫ থেকে ৫.৮ কিলোমিটার উপরে তা অবস্থান করছে ।
হরিয়ানা থেকে শুরু করে বিহার, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে  নিম্নচাপ অক্ষরেখা বিস্তৃত হয়েছে,এর অবস্থান সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১.৫ কিলোমিটার উপরে।  আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত দক্ষিণ পশ্চিম বঙ্গোপসাগর উপকূলের সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩.১ কিলোমিটার উচ্চে বিরাজ করছে। এই তিন ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে দক্ষিণ পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে  নিম্নচাপ বলয় তৈরি হতে পারে , জানাচ্ছে হাওয়া দফতর। তাদের  আশঙ্কা , শুক্রবার নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে ।  ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয়েছে ‘রেমাল’, এর অর্থ ‘বালুকণা।’ নামকরণের দায়িত্বে ছিল উপসাগরীয় দেশ ওমানের । আবহাওয়াতাত্বিকদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। সব দিক থেকে তাঁরা সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছেন। মৎস্যজীবীদের আপাতত  সমুদ্রে যাওয়া বারণ। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়েও তাঁরা চিন্তিত। সামনের শনি রবি ছুটির দিন। সমুদ্রে ভিড় উপচে পড়ে । অতিরিক্ত উচ্ছ্বাস যাতে বিপদের কারণ না হয় , সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে।
সোমবার ও মঙ্গলবার বেশ কিছু এলাকায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত এর প্রভাব থাকতে পারে ।  বৃহস্পতিবার বৃষ্টিপাত বা দুর্যোগের   পূর্বাভাস নেই। কিন্তু শুক্রবার থেকে ভারী   অতি ভারী বর্ষণে ভাসতে পারে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ , দক্ষিণবঙ্গ ও বাংলাদেশের বহু জেলা। কালবৈশাখী ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে  জানিয়েছে আলিপুরের আবহাওয়া দফতর। অতিবর্ষণ হতে পারে পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগণার মতো উপকূলবর্তী দুই জেলায়। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা ,পূর্ব পশ্চিম মেদিনীপুর, কলকাতা, হুগলি, হাওড়া ,নদিয়া ,ঝাড়গ্রাম ও বাঁকুড়ায় বজ্রবিদ্যুতসহ শুধু ভারী বর্ষণ নয়, সঙ্গে থাকবে ৩০থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়া  ।
দুর্যোগ  মোকাবিলার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতর। বিদ্যুৎ ভবনে দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক এবং সিইএসসির আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।  উপস্থিত  ছিলেন বিদ্যুৎসচিব শান্তনু বসু। ঝড়ের পর কোথাও বিদ্যুত সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত সমস্যা নিরসনের নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী।
প্রতি বছর বর্ষা প্রবল সঙ্কট ডেকে আনে। কখনও কখনও বন্যা দেখা দেয়। কেবল বঙ্গীয় সমতটে নয়, উত্তর পূর্ব ভারতের বৃহত্তম রাজ্য অসমেও।  অরুণাচল লাগোয়া উপরিভাগে প্রবল বর্ষণ মানেই অসম বাংলাদেশে বন্যার তাণ্ডব। বাদ যায়না পশ্চিমবঙ্গের গাঙ্গেয় অঞ্চল। প্রশাসন যথাসম্ভব ব্যবস্থা নেয় বটে , কিন্তু বন্যার মোকাবিলার স্থায়ী সমাধান এখনও দূর অস্ত। কেন্দ্র এ পর্যন্ত ভারতীয় পূর্বাঞ্চলে বন্যা রোখার যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। বন্যার তান্ডব আগে যেমন চলত , এখনও তা অব্যাহত। পাকাপোক্ত বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আজও দুরের স্বপ্ন হয়েই রইল। সরকার আসে, সরকার যায়। বন্যার ধ্বংসলীলা একই নিয়মে আসতে থাকে । থেকে যায় স্থায়ী ক্ষতচিহ্ন। হাজার হাজার লোক, বিশেষ করে অসমে  ঘর-বাড়ি হারিয়ে অভ্যন্তরীণ পরিযায়ীর দলবদ্ধ চেহারা নিয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে। যে প্রকৃতি তাদের জীবনযাপনের অবলম্বন, সেও আবার ধ্বংসকাণ্ডের উৎস হয়ে ওঠে। উন্নত দেশগুলিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণের যথাসম্ভব কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়। আমাদের প্রতিবেশী কোনো কোনো দেশেও বিরল নয় এরকম দৃষ্টান্ত । ভারত তৃতীয় বড় অর্থশক্তি হয়েও কেন নদী , নদীর ভাঙন আটকাতে এখনও সাফল্যের অপেক্ষা করছে? এও আরেক গুরুতর প্রশ্ন। তাহলে কি দুর্নীতির দৈত্য আর ভূত-প্রেত মানুষের ভাগ্যের নিয়ন্ত্রক হয়ে আছে এখনও ? প্রশ্নটি প্রাসঙ্গিক এবং সত্যের মতোই সত্য।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!