- এই মুহূর্তে দে । শ
- মার্চ ২১, ২০২৩
চতুর্থ দিনেও ‘অমৃত’ সন্ধান অব্যাহত ! সশরীরে আদালতে আনা হোক ধর্মগুরুকে, দাবি আইনজীবীর
আপ সরকারের সমালোচনায় সরব সুখবিন্দর বাদল। দেশপ্রেমী শিখ সম্প্রদায়কে কলঙ্কিত করবার প্রচেষ্টা চলছে, দাবি অকালি নেতার
চিত্র : সংবাদ সংস্থা
চতুর্থ দিনেও অধরা অমৃতপাল। হন্যে হয়ে তাঁর খোঁজ চালাচ্ছে পাঞ্জাব পুলিশ। ইতিমধ্যে, তাঁর আত্মীয় হরজিৎ সিংকে জিজ্ঞসাবাদের জন্য ডিব্রুগড়ের সেন্ট্রাল জেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রে দাবি, তিনি স্বঘোষিত শিখ ধর্মগুরুর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। তাঁকে জেরা করলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে।
জাতীয় নিরাপত্তা আইনে অমৃতপাল ও তাঁর ছয় সহযোগীর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে দাবি, পাকিস্তান থেকে তাঁর ডেরায় বেআইনিভাবে অস্ত্র পাচার করা হত। তাঁদের অনুমান, এক্ষেত্রে আইএসআই-এর মদতও থাকতে পারে। কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অভিযোগে অস্ত্র আইনে তাঁর নামে মামলা রুজু করেছে। অমৃতপালের গ্রেফতারি সারা পাঞ্জাবকে অশান্ত করতে পারে, এই আশঙ্কায় শনিবার থেকে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত এই অবস্থা জারি থাকার কথা জানিয়েছে প্রশাসন।
‘ওয়ারিশ দে পাঞ্জাব’ সংগঠনের সমর্থকদের অবশ্য দাবি, তাঁদের নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। অমৃতপালের মুক্তির দাবিতে তাঁর সমর্থকরা পাঞ্জাব ও হরিয়ানা কোর্টে মামলা দায়ের করেছে। বন্দী প্রত্যক্ষীকরণের দাবি জানিয়েছন অমৃতপালের আইনজীবী। তাঁর মত, শিখ ধর্মগুরুকে বেআইনিভাবে আটকে রেখেছে পুলিশ। এখন এব্যাপারে কেন্দ্রের প্রতিক্রিয়া জানতে চায় আদালত। আজ শুনানির পর বিচারপতির নির্দেশে পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করতে পারে পাঞ্জাব পুলিশ।
অমৃতপাল প্রসঙ্গে বিরোধী নেতা সুখবিন্দর সিং বাদল অবশ্য আপ সরকারের সমালোচনার সরব হয়েছেন। নিজের টুইট বার্তায় শিরোমণি অকালি দলনেতার দাবি, পাঞ্জাবে অঘোষিত জরুরি অবস্থা জারি করেছে আপ সরকার। তাঁর মতে, দেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ে শিখদের অবদান স্মরণীয়। দেশপ্রেমী সম্প্রদায়কে কলঙ্কিত করতে সরকারি মদতে ষড়যন্ত্র চলছে। সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ ও তাঁর দ্বারা নির্বাচনী ফায়দা লাভের জন্য এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার। শিখদের টুইটে স্মরণ করেছেন নিজের পিতা প্রকাশ সিং বাদলের মুখ্যমন্ত্রীত্বের সময়কালকে। তিনি বলেছেন, ৮০-৯০ এর দশকে খলিস্থানের নামে রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের স্মৃতিকে পিছনে ফেলে রেখে শান্তি ওসমৃদ্ধির পথে এগিয়ছে পাঞ্জাব। একের পর এক সরকার এসেছে কিন্তু তাঁর পিছনের দিকে হাঁটেনি কিন্তু বর্তমান সরকার অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তাহীনতার কালপর্বকে আবার ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয়েছে।
অমৃতপাল সিং -এর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অভিযোগ আকস্মিক। মাস খানেক আগে নিজের সংগঠনের এক ঘনিষ্ঠ অনুগামীকে ছাড়াবার দাবিতে তরোয়াল ও বন্দুক হাতে থানা ঘেরাও করেছিলেন তিনি ও তাঁর সংগঠনের সদস্য ও সমর্থকরা। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে ছয়জন আহত হজয়েছিলেন। ঘটনার থেকেই প্রশাসনিক মহল থেকে অমৃতপালকে গ্রেফতার করবার তৎপরতা শুরু হয়। আম আদমিপরিচালিত পাঞ্জাব, বিজেপি শাসিত আসাম, এব্যাপারে কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তকারী দল গঠন করবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ২ মার্চ স্বরাষ্টমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠকে বসেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগওয়ান্ত মান। সংবাদ সংস্থার খবর স্বঘোষিত শিখ ধর্মগুরু নিয়ে তখন কেন্দ্রের কাছে তিনি আবেদন জানান। দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যে নিজের সংগঠন চালাচ্ছেন অমৃত পাল । যদি অভিযোগ থাকে তাহলে এতদিন কেন্দ্রের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি কেন? প্রশ্ন উঠছে পাঞ্জবের স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে। গত বছর নির্বাচনে পাঞ্জাবে আপ সরকার ক্ষমতা দখল করে। চূড়ান্ত ভাবে পরাজিত হয় শিরোমণি অকালি দল ও বিজেপি জোট।এখন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কেন্দ্রীয় সরকারের এই অতিসক্রিয়তা কিনা তা এখনই বলা অসম্ভব।
❤ Support Us