- এই মুহূর্তে দে । শ
- এপ্রিল ৫, ২০২৪
লোকসভা প্রচারের দেওয়াল থেকে রেহাই শঙ্খ ঘোষকে, প্রাচীরে সাদা প্রলেপ

উন্নয়ন দাঁড়াল । আবার উধাও হয়ে গেল । এই ছবির দৃশ্য-অদৃশ্যকে ঘিরে দুলছে বোলপুর লোকসভার অধীন গুসকরা শহর । শহরের ১৫নং ওয়ার্ডের গুসকরা-মানকর রোডের ধারাপাড়ার হিমঘরের দেওয়াল । সেখানে তৃণমূলের নামেই দেয়ালে ভাসে কবি শঙ্খ ঘোষের বহু চর্চিত চরণ, দেখ খুলে তোর তিন নয়ন / রাস্তা জুড়ে খড়্গ হাতে দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন । এহেন দেওয়াল লিখন ঘিরে চর্চা শুরু হতেই বোধোদয় হয়, ভুল হয়ে গেছে বিলকুল । তড়িঘড়ি লেখা মুছেও দেওয়া হয় । মুছলে কী হবে, চর্চা তো থামে না ।
কবিতো কবেই অমৃতপথযাত্রী । আর কবির উদ্দিষ্ট অনুব্রত মণ্ডলতো এখন তিহাড় জেলের বাসিন্দা । বোলপুর লোকসভা আসনের তৃণমূল প্রার্থী অসিত মালের সমর্থনে এই দেওয়াল লিখনের সূত্রে দুজনেই ‘হাজির’। তৃণমূলের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডলের ‘রাস্তায় উন্নয়নের দাঁড়ানো’ নিয়ে মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে দেবেশ রায় সম্পাদিত ‘সেতুবন্ধন’ পত্রিকায় কবি শঙ্খ ঘোষ লেখেন, ‘যথার্থ এ বীরভূমি / উত্তাল ঢেউ পেরিয়ে এসে / পেয়েছি শেষ তীরভূমি । / দেখ খুলে তোর তিন নয়ন/ রাস্তাজুড়ে খড়্গ হাতে দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন ।’ কবিতার সূত্রটি ছিল, অনুব্রত মণ্ডলের একটা হুঙ্কার-বাণী, রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে থাকবে, যা দেখে বিরোধীরা ফিরে যাবে । তার উত্তরে শঙ্খ ঘোষের এই পদ্য-পংক্তি নিয়ে বাংলাজুড়ে হইহই পড়ে যায় । খড়্গহস্ত হয়ে উঠে কবির মুণ্ডপাতে মুখর হয় ‘উন্নয়ন’। অনুব্রত ও তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গোদের তীব্র কটাক্ষের শিকার হন বাংলা সাহিত্যের প্রবাদপ্রতিম অক্ষরশিল্পী শঙ্খ ঘোষ ।
উন্নয়নের সেই ‘অমর’ ব্যাখ্যা ফের দেওয়ালে হাজির হতে বিড়ম্বনা বাড়ে এলাকার শাসক দলের । ‘অতি উৎসাহী কর্মীদের ভুল’ বলে সাফাই দেওয়ার চেষ্টা করেন নেতারা । ভুল সংশোধনে তড়িঘড়ি উদ্যোগও নেওয়া হয় । নেতৃত্বের নির্দেশে ‘উন্নয়ন-কাহিনী’তে রাতারাতি চুনকাম করে দেওয়া হয় । চুনকাম করলে কী হবে, দেওয়াল লেখা-মোছার সূত্রে গুসকরার আকাশে নবোদয় হল প্রয়াত বাংলার বরণীয় কবি আর কারাবন্দি দোর্দণ্ডপ্রতাপ রাজনীতিকের ।
❤ Support Us