- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- অক্টোবর ২, ২০২৩
শাহি পুলিশের অতিসক্রিয়তা, গান্ধিগিরি দিয়েই হবে মোকাবিলা বার্তা অভিষেকের

দিল্লিতে তৃণমূল যখন দাবি আদায়ের আন্দোলনে হাজির, তখন অমিত শাহের নিয়ন্ত্রণাধীন দিল্লি পুলিশের ‘সক্রিয়তা’র জবাব মহাত্মার অহিংসার আদর্শের মাধ্যমেই দিতে চায় রাজ্যের শাসক তৃণমূল। মহাত্মা গান্ধিজির জন্মদিনে নিজের X হ্যান্ডলে পোস্ট করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই বার্তা দিয়ে জানান, গান্ধির অহিংস পথেই তাঁরা চলতে চান। তবে মহাত্মার বিচার এবং সমানাধিকারের দাবিতে যে লড়াই, তাঁকেও অনুসরণ করার কথা বলেছেন অভিষেক। যা থেকে মনে করা হচ্ছে রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের “বঞ্চনা”কে সামনে রেখে যে লড়াইয়ের বার্তা দিচ্ছে তৃণমূল, তাকে অহিংস পথেই এগিয়ে নিয়ে যেতে চান দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তাঁর X হ্যান্ডলে লিখেছেন, “বাপুর জন্মদিনকে স্মরণ করছি। তাঁর সত্য এবং অহিংসার আদর্শ শুধু আমাদের অতীতকেই তৈরি করে দেয়নি, ভবিষ্যতের পথকেও অলংকৃত করে যাচ্ছে।” ভবিষ্যতের সেই পথ যে বিচার এবং সমানাধিকার প্রতিষ্ঠার পথ, তা-ও উল্লেখ করেছেন অভিষেক। গান্ধির আদর্শকে কাজে রূপায়িত করারও ডাক দিয়েছেন তৃণমূল-এর সেকেন্ড-ইন-কমান্ড। আপাত ভাবে এটি নিছক গান্ধিজিকে স্মরণ করে দলের ভবিষ্যতের পথনির্দেশিকা রয়েছে বলে মনে করছেন তৃণমূলের কেউ কেউ।
Remembering Bapu on his birth anniversary!
His principles of truth & non-violence have not only shaped our past but continue to illuminate our path forward in the relentless pursuit of justice & equality.
On this Gandhi Jayanti, let’s embrace his principles in all our actions.
— Abhishek Banerjee (@abhishekaitc) October 2, 2023
এদিকে সোমবার সকাল থেকেই দিল্লিতে ঢুকতে শুরু করেছে তৃণমূলের একের পর এক কেন্দ্রীয় সহায়তা-বঞ্চিতদের বাস। বাসযাত্রীদের প্রত্যেককেই রাখা হচ্ছে সেখানকার অম্বেডকর ভবনে। দলীয় সূত্রে খবর, ওই ভবনে বিশ্রাম নিয়েই কর্মসূচিতে অংশ নেবেন দলের কর্মী এবং কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে ‘বঞ্চিত’ মানুষজনেরা। এই পরিস্থিতিতে সোমবার সকালেই অম্বেডকর ভবনে যায় দিল্লি পুলিশের একটি দল। ক’টি বাস এসেছে, ক’টি বাস আসার সম্ভাবনা রয়েছে, দিল্লিতে আসা কর্মীসমর্থকদের দেখভালের দায়িত্বে কারা রয়েছেন, সেই বিষয়ে খোঁজখবর নেয় পুলিশ। এদিকে শুভেন্দু অধিকারী এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “দিল্লি পুলিশের লাঠির সাইজ ৬ ফুট।”
দিল্লি পুলিশের এই “অতি সক্রিয়তা” নিয়েই প্রশ্ন উঠছে তৃণমূলের অন্দরে। দিল্লি পুলিশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন, যে মন্ত্রকের দায়িত্বভার সামলান নরেন্দ্র মোদি মন্ত্রিসভার “নম্বর টু” ব্যক্তি অমিত শাহ। তাই এই “সক্রিয়তা”-র নেপথ্যে বিজেপির হাত রয়েছে কি না, সেই প্রশ্নও তুলছেন তৃণমূলের কেউ কেউ। তবে প্রকাশ্যে এই নিয়ে এখনই মুখ খুলতে চাইছেন না শাসকদলের কেউই। অম্বেদকর ভবনে ইতিমধ্যেই একটি “হেল্প ডেস্ক” খুলেছে তৃণমূল। তবে পুলিশের এই খোঁজখবর নেওয়া থেকে অনেকেই মনে করছেন যে, বাংলার শাসকদলের কর্মসূচির আগে সব তথ্য হাতের মুঠোয় রাখতে চাইছে তারা।
তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, সোমবার দুপুর ১টা নাগাদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্য নেতারা রাজঘাটে গিয়ে গান্ধিকে শ্রদ্ধা জানাবেন। সেই সময় থেকেই আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হবে দিল্লিতে তৃণমূলের দু’দিনের কর্মসূচি। তৃণমূল সূত্রে খবর, মঙ্গলবার যন্তরমন্তরে দলের কর্মসূচি রয়েছে। তার জন্য দিল্লি পুলিশের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। দলীয় সূত্রেরই দাবি, সেই অনুমতি মিলেছে। কিন্তু তার পরেও বিকল্প রাস্তার কথা ভেবে রাখা হচ্ছে। কারণ, যদি পরে পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয়, তা হলে কী কী করণীয়, তা নিয়ে পরে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে আপাতত স্থির রয়েছে।
এদিকে দিল্লিতে রবিবার এই প্রতিবাদের রকৌশল ঠিক করতে অভিষেক , দলের সাংসদ ও বিধায়করা বৈঠক করেন। বৈঠকের শেষে মদন মিত্র বলেন, আমরা দিল্লিতে এসে মোদির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছি, প্রথম রাউন্ডে আমরা জয়ী হয়েছি, কারণ আমরা প্রতিবাদ করতে উত্তরপ্রদেশ বা হনুলুলু যায়নি। এদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন গান্ধির নামাঙ্কিত প্রকল্পে বাংলার মানুষদের বঞ্চনার জন্য কেন্দ্রী গ্রামোন্নন্নন মন্ত্রীকে গ্রেফতার করা উচিত।’
❤ Support Us