- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩
লোকসভার পর রাজ্যসভায় পাশ মহিলা সংরক্ষণ বিল

পক্ষে ২১৫, বিপক্ষে ০ ভোটে রাজ্যসভায় নজিরবিহীন ভাবে পাশ হয়ে গেল মহিলা সংরক্ষণ বিল। বুধবার লোকসভায় এই বিলটি পাশ হয় ২৫৪-২ ভোটে। বৃহস্পতিবার সংসদের উচ্চকক্ষে বিনা বাধায় এবং ঐতিহাসিক ভাবে পাশ হয়ে গেল মহিলা সংরক্ষণ বিল। খাতায়কলমে ‘নারীশক্তি বন্ধন অধিনিয়ম বিল’।
লোকসভার থেকেও বেশি দাপটের সঙ্গে রাজ্যসভায় পাশ হয়ে গেল মহিলা সংরক্ষণ বিল। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় ভোটাভুটি হয়। ২১৪জন সদস্য বিলের পক্ষে ভোট দেন। বিপক্ষে কোনও ভোট পড়েনি। লোকসভায় দু’জন বিপক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। আর পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন ৪৫৪ জন। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান এই বিল পাশ হওয়ার পর বলেন, “ভারতীয় রীতিমতে তিথি অনুযায়ী আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্মদিন। আবার আজই এই বিলটি রাজ্যসভায় পাশ হল, এটা একটা কাকতালীয় ঘটনা।”
এই বিলের ওপর ভোটাভুটির পর জানানো হয় বিলের পক্ষে ২১৫টি এবং বিপক্ষে ০ ভোট পড়েছে। ফলে ঐতিহাসিক সমর্থন নিয়ে রাজ্যসভায় মহিলা সংরক্ষণ বিলটি পাশ হয়ে যায়।
এদিন রাজ্যসভায় মহিলা সংরক্ষণ বিল নিয়ে ভোটাভুটির আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাজ্যসভায় বলেন, “এই বিলের ফলে দেশের মানুষের মধ্যে নয়া আত্মবিশ্বাস জেগে উঠবে। মহিলা ক্ষমতায়ন এবং নারীশক্তির শক্তি বৃদ্ধিতে প্রত্যেক সদস্য এবং রাজনৈতিক দল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। দেশকে একটি জোরদার বার্তা দিতে হবে।”
রাজ্যসভায় বিলটি পাস হওয়ার পর রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকড় বলেন, “এটা ঐতিহাসিক ঘটনা।”
বিল পাশ পাওয়া পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, “আমাদের দেশের গণতান্ত্রিক যাত্রার জন্য এটি একটি অভাবনীয় মুহূর্ত। ১৪০ কোটি ভারতীয়কে অভিনন্দন। রাজ্যসভার সব সাংসদকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। যাঁরা নারীশক্তি বন্ধন অধিনিয়মের পক্ষে তাদের মত দিয়েছেন। সর্বসম্মতভাবে বিলের পক্ষে সমর্থন জানানোর বিষয়টি অত্যন্ত আনন্দদায়ক।”
তবে বিলকে সমর্থন জানিয়েও রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, আমরা এই বিলের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েও বলছি, বিলটি কার্যকর করতে সময় নষ্ট না করে যত দ্রুত সম্ভব এই বিল বাস্তবায়ন হোক। এর পর আইনমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল বলেন, বিরোধীরা অযথা বিলের বাস্তবায়ন নিয়ে চিন্তা করছেন। এতো চিন্তা থাকলে আপনাদের শাসনকালে কেন এই বিলকে আইনে পরিণত করাননি? তখন জগদীপ ধনকড় মন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, আপনি যে বিল উত্থাপন করেছেন, সেই বিলে রাজ্যসভার সবাই সমর্থন জানিয়েছেন, বিষয়টি ঐতিহাসিক, আপনি ভাগ্যবান, এমন ঘটনা বিরল, তাই আজ বিরোধীদের সমালোচনা করবেন না।
তবে এই বিলটি অবিলম্বে কার্যকর করার দাবিতে ৯ জন সাংসদ সংশোধনী আনলেও তা ধোপে টেকেনি। মহিলা সংরক্ষণ বিলের মধ্যে ওবিসি সংরক্ষণের দাবিও ফলপ্রসূ হয়নি।
কংগ্রেস সাংসদ কে সি বেনুগোপাল বিলের ওপর আলোচনার সময় বলেন, আদনি কেলেঙ্কারী প্রকাশ্যে আসতেই তা থেকে নজর ঘোরাতে মরিয়া হয়ে নরেন্দ্র মোদি প্রথমে এক দেশ, এক ভোট তারপর মহিলা সংরক্ষণ বিলটি আনলেন।
তৃণমূল সাংসদ ডেরে ও’ব্রায়েন বলেন, সংসদে বিল পাশ করানো একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, তাহলে মহিলা সংরক্ষণ বিলটি নিয়ে এতো গোপনীয়তা কেন। বিরোধীদের মুখে এদিন রাযসভায় বক্তব্য রাখার সময় মণিপুরের ঘটনা, ধর্ষণ, কুস্তিগীরদের হেনস্থা প্রসঙ্গ ওঠে এবং বিরোধীরা বলেন, প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রধানমন্ত্রী নীরব ও নিস্ক্রিয় ছিলেন। অথচ এই মোদি সরকার এখন মহিলাদের সমানাধিকারের কথা বলছে।
❤ Support Us