- এই মুহূর্তে দে । শ
- মে ২৪, ২০২৪
শক্তিক্ষয় পদ্মের, তিন অঙ্ক স্পর্শে পিছিয়ে হাত । যাদব-কিশোরের বিশ্লেষণ তর্যায় সরগরম ভোট ময়দান

লোকসভা ভোট ক্রমশ যতই শেষের দিকে এগোচ্ছে, রাজনৈতিক বাকযুদ্ধের আকার তত প্রবল হচ্ছে। বিশ্লেষকদের ‘দাবি’ কখনও সরকারের পক্ষে , কখনও বিরোধী দলের পক্ষে যাচ্ছে। এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে দুই বিশ্লেষকের বক্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে জল্পনা। দুই জনের একজন হলেন পূর্বতন রাজনৈতিক বিশ্লেষক , অধুনা ‘স্বরাজ অভিযান’ রাজনৈতিক দলের নেতা যোগেন্দ্র যাদব। দ্বিতীয় জন হলেন, প্রশান্ত কিশোর ওরফে পিকে, বর্তমানে তিনি ‘জন সুরজ’ নামে একটি রাজনৈতিক দলের নেতা।
যোগেন্দ্র একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন , এবারের ভোটে ‘ম্যাজিক ফিগার’ ছোঁবেনা বিজেপি। লোকসভার মোট ৫৪৩ আসনের লড়াইয়ে ২৭২ আসন সুরক্ষিত করলেই কোনো রাজনৈতিক দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। পরবর্তী সরকার গঠনের দায়িত্ব থাকে তাদের। যোগেন্দ্রের দাবি, সেই ফিগারের থেকে অনেকটা দূরে থাকবে পদ্ম শিবির। এমনকি, ২০১৯ এর প্রাপ্ত ৩০৩ টি আসনের মধ্যে ৫০ টি আসনে তারা হারতে চলেছে !
অন্যদিকে, জন সুরাজ দলের সংগঠক, একদা ২০১৪ সালে ‘বিজেপির হয়ে’ লোকসভা ভোটে এবং ২০২১ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভোটে ‘তৃণমূলের’ রাজনৈতিক বিশ্লেষক পিকে জানিয়েছেন, বিজেপি ‘ম্যাজিক ফিগার’ তো ছোঁবেই,এবারে বেশ কিছু সংখ্যক আসন বাড়তে চলেছে।
এই চাঞ্চল্যকর তথ্যের উৎস সম্বন্ধে যোগেন্দ্রকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি জানিয়েছেন, ভারতের নানা রাজ্যে ঘুরে, তিনি এই তথ্য সংগ্রহ করেছেন। পিকে জানাচ্ছেন, তাঁর দাবির সমক্ষে রয়েছে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি। এমতাবস্থায়, পূর্বতন দুই পেশাদারের সম্পূর্ণ আলাদা দুরকম দাবি ঘিরে শুরু হয়েছে তুমুল জল্পনা।কিন্তু দুই বিশ্লেষকের কেউই বুথ সমীক্ষা যাচাই না করে তাঁদের দাবি প্রতিষ্ঠা করছেন । পিকে সবকটি সাক্ষাৎকারেই তাঁর দাবি প্রতিষ্ঠা করেছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে। যোগেন্দ্রের দাবি নিয়ে পিকের বক্তব্য , এই প্রেডিকশনের পিছনে রয়েছে মোদি সরকারের ওপর ‘রাগ।’
‘উত্তর প্রদেশের প্রায় ১০০০ কিলোমিটারের বেশি অঞ্চল আমি ভ্রমণ করেছি। দেখেছি যারা আগে সমাজবাদী পার্টিকে ভোট দিয়েছে, তাঁরা তাঁদের দিক বদল করেননি। ‘ তিনি বলেন ,২০১৯ সালে বিজেপি তার প্রতিপক্ষের থেকে ১৩% ভোটে এগিয়ে ছিল। সেটি এখন এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৫ শতাংশে।
পিকে রাজ্যওয়াড়ি পরিসংখ্যা না দিলেও তাঁর ইঙ্গিত দেশের উত্তরে, পশ্চিমে– যেখানে বিজেপির ঘাঁটি রীতিমতো শক্ত, সেখানে খুব একটা ধ্বস নামার সম্ভাবনা নেই।
যোগেন্দ্র রাহুল গান্ধির ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র অন্যতম আহ্বায়ক ছিলেন।তিনি এর আগে ২০২২ সালে জানিয়েছিলেন তাঁর দল স্বরাজ অভিযান তাদের কার্যক্রম বন্ধন করবে, এবং তাঁরা সবাই দেশের স্বার্থে কংগ্রেসে যোগ দেবেন। যদিও পরে তিনি তাঁর অবস্থান বদল করে জানিয়েছেন, তিনি ‘আমি সবসময় আমার মূল্যায়নকে সবার থেকে আলাদা রাখার চেষ্টা করি,’ অর্থাৎ , তাঁর বিশ্লেষণ যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত নয়, তা প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন তিনি।
পিকে তাঁর প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সরাসরি বিষোদ্গার করেননি। তিনি জানিয়েছেন, তিনি যখনই প্রত্যক্ষ বিশ্লেষণ করতে গেছেন, দেখেছেন অধিকাংশ মানুষই ভারতের প্রধানমন্ত্রী রূপে নরেন্দ্র মোদিকেই চাইছেন। যদিও যোগেন্দ্রের দাবি , মোদির জনপ্রিয়তা এখন অনেকটাই তলানিতে এসে ঠেকেছে।
লোকসভা নির্বাচনের বাকি এখনও দুই দফা। স্বয়ং মোদির নির্বাচনী কেন্দ্র বারানসিতেই এখনও ভোট হয়নি। ফলাফল প্রকাশিত হবে, আগামী ৪জুন। ততদিন এই রাজনৈতিক চাপানউতোর চললেও,গণদেবতার সিদ্ধান্ত জানাবে সময়। আগামী পাঁচ বছর কে হবে আসমুদ্রহিমাচলের ভাগ্যনিয়ন্তা, তা বলবে জুন মাসের ৪ তারিখ। অপেক্ষা সেদিনের।
❤ Support Us