- দে । শ
- জানুয়ারি ২৪, ২০২৩
‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ সাংবিধানিক রীতিবিরুদ্ধ, আইন কমিশনকে চিঠি প্রেরণ আপের

‘এক দেশ এক নির্বাচন’ ব্যবস্থাকে কঠোর সমালোচনা করল আপ। দেশের গণতন্ত্রের মূলে কুঠারাঘাত করবে এই ব্যবস্থা বলে সাংবাদিক সম্মেলনে জানালেন আপ মুখপাত্র।
ভারতের নির্বাচন ব্যবস্থায় সমরূপতা আনার কথা বহু দিন ধরেই বলে আসছে বিজেপি। এই দাবির ভিত্তিতে প্রস্তাবও আনা হয়েছে পদ্ম শিবির থেকে। এখন সেই প্রস্তাব নিয়েই নিজেদের মতামত জানাল আম আদমি পার্টি। মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে আপ বিধায়ক আতীশ মার্লেনা জানিয়েছেন যে বিজেপির এই প্রস্তাব ভারতের সাংবিধানিক রীতিনীতির বিরুদ্ধে। বিজেপি বিধায়ক কেনা বেচার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে অবৈধভাবে সরকারের পতন ঘটিয়ে ক্ষমতা দখল করতে চায়। সেই উদ্দেশ্যেই ‘এক দেশ এক নির্বাচন ব্যবস্থা’ সারা দেশে বাস্তবায়িত করতে তৎপর তারা। সংবাদ সংস্থার খবর, আপের পক্ষ থেকে প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ১২ পাতার জবাবি একটি পত্র পাঠানো হয়েছে জাতীয় আইন কমিশনকে । কেশবানন্দ ভারতী মামলার ১৩ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের রায়কে উল্লেখ করে তিনি আজ বলেন যে সংসদ সংবিধান সংশোধনের অধিকারী হলেও মৌলিক কাঠামো পাল্টাতে পারে না। তা অপরিবর্তনীয়।
সাংবাদিক বৈঠকে আতীশ এক দেশ এক নির্বাচন ব্যবস্থার বেশ কয়েকটি ত্রুটির কথা উল্লেখ করেন। প্রথমত, ভারতে সংসদীয় নির্বাচন ব্যবস্থাকে গ্রহণ করা হয়েছে। এই ব্যবস্থায় আইনসভা সরকারকে শাসন পরিচালনা সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন করতে পারে। তাছাড়া, অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন, প্রস্তাবের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করা সহ একাধিক অধিকার সংসদের রয়েছে।প্রস্তাবিত নতুন ব্যবস্থায় এই সমস্ত রীতি গুলোই পরিবর্তিত হবে বলে জানান আপ মুখপাত্র।
দ্বিতীয়ত, কেন্দ্র ও রাজ্যের ভোট যদি একসঙ্গে হয় তাহলে রাজ্যের ইস্যুগুলো নির্বাচনে প্রাসঙ্গিক থাকবে না। হারিয়ে যেতে আলোচনার গণ পরিসর থেকে।ধনী ও ক্ষমতাশালী দলগুলোই নির্বাচনের নিয়ন্ত্রকে পরিণত হবে। আঞ্চলিক দলগুলো গুরুত্ব হারাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
তৃতীয়ত, এক দেশ এক নির্বাচন ব্যবস্থার সবথেকে বিপজ্জনক দিকটি সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি অনাস্থা প্রস্তাবের জন্য ইতিবাচক ভোটের কথা উল্লেখ করেন। যে প্রস্তাবিত রীতিতে অনাস্তা প্রস্তাবের কারণে সরকার পড়ে গেলেও যতক্ষণ না সরকার গঠিত হয়য়, প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রী কিছুদিনের জন্য পদ আঁকড়ে ধরে রাখতে পারেন। সেটা কতদিন তা কিন্তু এই প্রস্তাবে উল্লিখিত হয়নি। অনির্দিষ্ট কাল ধরে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকা সত্ত্বেও একটি দলের ক্ষমতায় থেকে যাওয়ার আশঙ্কা অমূলক নয়। ক্ষমতা ধরে রাখার পুরো এই প্রক্রিয়াটি চলবে বিধায়ক ক্রয় বিক্রয়ের মাধ্যমে বলে জানান তিনি।
বক্তব্যের শেষে তিনি আরও জানান যে বিজেপি প্রস্তাবিত নতুন ব্যবস্থায় নির্বাচন আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠবে। কারণ কেন্দ্র ও রাজ্যে একই সময় ভোটের আয়োজন করতে হবে। যার জন্য প্রয়োজন বর্তমানের তুলনায় একাধিক ভোটিং মেশিন, আরও বেশি বাহিনীর। ফলে নির্বাচনী খরচ ৫০% বৃদ্ধি পেতে পারে বলে তাঁর ধারণা। ভারতের মত উন্নয়ন শীল দেশে ভোটের জন্য এত বিপুল খরচ কাম্য কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
❤ Support Us