Advertisement
  • Uncategorized এই মুহূর্তে দে । শ
  • এপ্রিল ৫, ২০২৫

রামনবমীর দিনেই রামেশ্বরমে পামবান রেল-সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী মোদি

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
রামনবমীর দিনেই রামেশ্বরমে পামবান রেল-সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী মোদি

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আগামীকাল ৬ এপ্রিল রামেশ্বরমে পাবমান রেল সেতু উদ্বোধন করবেন নরেন্দ্র মোদি। এছাড়াও একাধিক প্রকল্পের উন্মোচন করবেন তিনি।

আগামী রবিবার, ৬ এপ্রিল রামনবমীর দিনই, নতুন পামবান রেল সেতু, যা রামেশ্বরম সেতু নামে পরিচিত তার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই সেতু পামবান দ্বীপকে মূল ভূ-খণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করবে। এই ২.২ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটি সমুদ্রের ওপর তৈরি করা হয়েছে, এর নির্মাণে খরচ হয়েছে ৫৩৫ কোটি টাকা। নতুন সেতুটি ভারতীয় ভূখণ্ড ও পামবান দ্বীপের মধ্যে যোগাযোগের অন্যতম আধুনিক মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে, যেখানে আগের সেতুটি যান্ত্রিক সমস্যার কারণে ২০২২ সালের ২৩ ডিসেম্বর বন্ধ হয়ে যায়। পুরনো পামবান সেতুর অকার্যকর হওয়ার পর, কেন্দ্র সরকার আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই নতুন সেতু নির্মাণে উদ্যোগী হয়। এই সেতু ডিজাইন করা হয়েছে এমনভাবে, যাতে প্রতি ঘণ্টায় ৭৫ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করতে পারে। এছাড়া, সেতুর মাঝখান ১৭ মিটার পর্যন্ত উচ্চতায় উঠে যেতে পারে, জাহাজ চলাচলের জন্য বাধা সৃষ্টি না করবে।

২০১৯ সালের মার্চে কন্যাকুমারীতে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়। সে বছরে, নভেম্বর মাসে নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ২০২৫ এ সে কাজ শেষ হয়েছে, এখন ব্যবহারের জন্য সেতুটি সম্পূর্ণ প্রস্তুত। এটি শুধু একটি সেতু নয়, এটি রামেশ্বরমের সঙ্গে ভারতীয় উপকূলের সংযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। পামবান সেতুর ইতিহাসও অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। ১৯৬৪ সালের ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পুরনো সেতু মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, একটি ট্রেন সমুদ্রে ডুবে যায়। সেসময় মাত্র ৪৬ দিনের মধ্যে মেরামত করে, পুনরায় এটি চালু করা হয়। ২০০৯ সালে সেতুটিকে আরো শক্তিশালী করা হয়। রেলপথ মন্ত্রণালয় পুরনো সেতুটিকে রক্ষণাবেক্ষনের সমস্যার জন্য ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পুরনো সেতুটির ধ্বংসাবশেষ জুন মাস নাগাদ সরিয়ে ফেলা হবে। তবে এটি একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া।

আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের একদিন আগে, ভারতীয় রেলওয়ের তরফেএকটি প্রোমোশনাল ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। যাতে নতুন পাম্বান সেতুর দৃশ্যাবলী তুলে ধরা হয়েছে। রেলওয়ে মন্ত্রক পোস্টে জানিয়েছে, ‘অতীতের অভিজ্ঞতা একত্রিত করে, নতুনকে স্বাগত জানিয়ে, পামবান এক অপার্থিব অসাধারণ দৃশ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এই রামনবমীতে, ভারতের প্রথম উল্লম্ব উত্তোলন করা যায় এমন রেল সেতু উন্মোচন হবে।’ রেল সেতু উদ্বোধন ছাড়াও একাধিক অন্য প্রকল্পের উন্মোচন ও কর্মসূচী করবেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। প্রধানমন্ত্রীর আগমনের আবহে রামেশ্বরম শহরে তাই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে, রামেশ্বরম-তাম্বারাম নতুন রেল পরিবহণ ব্যবস্থার উদ্বোধন, কোস্ট গার্ড জাহাজ উদ্বোধন ইত্যাদি। এরপর ১২.৪৫ নাগাদ রামেশ্বরমের বিখ্যাত রামানাথস্বামী মন্দির পরিদর্শন করে, সেখানে পুজো দেবেন প্রধানমন্ত্রী। তারপর ১.৩০ নাগাদ তামিলনাড়ুতে ৮,৩০০ কোটি টাকার রেল ও সড়ক প্রকল্পগুলির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন। রামেশ্বরম, রামনাথস্বামী মন্দিরের জন্য পরিচিত, হিন্দু ধর্মালম্বীদের জন্য প্রধান তীর্থস্থান। নতুন ব্রিজটি চালু হলে, রামেশ্বরম-তিরুপতি সাপ্তাহিক এক্সপ্রেস ও রামেশ্বরম-কন্যাকুমারি ত্রৈ-মাসিক এক্সপ্রেসের মতো ট্রেন পরিসেবা পুনরায় শুরু হবে। তীর্থযাত্রী ও পর্যটকদের সেখানে যাওয়া আসা করতে সুবিধা হবে। উন্নত সংযোগের কারণে স্থানীয় ব্যবসা আর পর্যটনের উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, রামেশ্বরমকে মূলভূমির সঙ্গে সংযুক্তকারী এই সেতু একটি অসাধারণ ভারতীয় প্রকৌশল কীর্তি। এটি ৫৫০ কোটি টাকার বেশি খরচে নির্মিত সেতুর দৈর্ঘ্য ২.০৮ কিলোমিটার, এতে ৯৯টি স্প্যান রয়েছে আর একটি ৭২.৫ মিটার উল্লম্ব উত্তোলন স্প্যান রয়েছে যা ১৭ মিটার উচ্চতায় ওঠতে পারে। এর ফলে বড়ো বড়ো জাহাজ ও রেল চলাচলে কোনো অসুবিধা হবে না। সেতু নির্মাণে আধুনিক প্রযুক্তি ও উচ্চমানের উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে। পরিবেশগত প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠতেও সক্ষম এটি। বন্যা, জলোচ্ছাস, ভূমিকম্প, সাইক্লোনের মোকাবিলা যাতে অনায়াসে করতে পারে, সেভাবেই ব্রিজটি নির্মিত হয়েছে। পাশাপয়াশি এই সেতুর গভীর সাংস্কৃতিক তাৎপর্যও রয়েছে। ‘রামায়ণ’-এর মতে, রামসেতু নির্মাণের সূচনা হয়েছিল রামেশ্বরমের ধনুষ্কোডি থেকে।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!